নির্বাচন হবেই- প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার: ঘোষিত তফশিল অনুযায়ীই নির্বাচন হবে বলে দলের নেতাদের জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, যথাসময়েই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। এতে কে এলো আর না এলো তা বিষয় নয়। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় গণভবনে অনুষ্ঠিত দলের কার্যনির্বাহী সংসদের জরুরি বৈঠকে তিনি একথা বলেন। বৈঠক শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামও জানান, যথাসময়ে ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী নির্বাচন করার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ মত দিয়েছে। নির্বাচন করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সর্বোচ্চ সহায়তা নেয়া হবে বলে দলের নেতাদের জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একইসাথে তিনি বিরোধীদলের সম্ভাব্য আন্দোলন ও কর্মসূচির বিপরীতে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলারও নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া জ্বালাও পোড়াওয়ের মতো কর্মসূচির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে সচেতন করারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের সর্বশেষ অবস্থানের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হলেও দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে নেতাদের বলেছেন, এখনই এ বিষয়ে চূড়ান্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। এ জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সময়মতো সবই পরিষ্কার হবে।

এদিকে বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে বন্ধুরাষ্ট্র ও বিদেশী দাতা সংস্থার অবস্থান নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, তারা তো দেখে তাদের দেশে কীভাবে নির্বাচন হয়। আমরা সেভাবে নির্বাচন করতে চাইছি। এ বিষয়টি তারা বুঝতে চায় না। আমরা একবার শুরু করতে চাই। যাতে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হয়। কাউকে না কাউকে তো শুরু করতে হবে।

এদিকে বৈঠকের শুরুতে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট দেশের জনগণের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। যারা সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করেছিলো, প্রেসিডেন্ট হয়েছিলো তাদের হাতে গড়া দল বিএনপি ও একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াত এক হয়ে দেশের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। মানুষ হত্যা করছে। জনগণের রক্ত নিয়ে হোলি খেলছে। যারা এভাবে মানুষ খুন করছে তাদের হাতেনাতে ধরিয়ে দিন। বিরোধীদলীয় নেতার উদ্দেশে তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন,  তার আর কত লাশ লাগবে? কত লাশ হলে তার আত্মা শান্তি পাবে? যুদ্ধাপরাধীদের মতো মানুষ হত্যার দায়ে তাকেও (খালেদা জিয়া) একদিন বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। দেশের প্রতি তার কোনো দায়িত্ববোধ নেই। শুধু ক্ষমতার মোহ। গত নির্বাচনে জনগণ ভোট দেয় নাই- সে প্রতিশোধ নিচ্ছেন এখন। বিরোধী দলের সহিংস কর্মসূচির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্দোলন কর্মসূচির নামে যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয়া হচ্ছে, ট্রেনের ফিশপ্লেট খুলে দুর্ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। সিএনজি-অটোরিকশা থেকে নামিয়ে ড্রাইভার ও যাত্রীদের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পোড়ানো হচ্ছে। এসব সাধারণ মানুষের ওপর তার কিসের ক্ষোভ? শেখ হাসিনা বলেন, রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি জনগণকে বীতশ্রদ্ধ করতেই এসব করা হচ্ছে। খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, অবরোধ দিয়ে তিনি এসি রুমে বসে স্যুপ আর মুরগির রোস্ট চিবান। আর তার আগুনে জনগণ পুড়ে মরে। এ দুষ্ট চক্রের হাত থেকে দেশ কবে মুক্তি পাবে সেটাই দেখার বিষয়।