নির্বাচন বর্জনকারী দলকে আলোচনায় আসার অনুরোধ জানালেন রাষ্ট্রপতি

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপিবিহীন দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলোকে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। তিনি বলেছেন, আমি নির্বাচন বর্জনকারী দলসমূহকে অনুরোধ করবো, সংঘাত ও নৈরাজ্যের পথ পরিহার করে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসুন। সরকারের সাথে সংলাপের মাধ্যমে ঐকমত্যে এসে গণতন্ত্রকে বিকশিত হতে সাহায্য করুন। সাম্প্রদায়িক ও সন্ত্রাসী সংগঠনের সংশ্রব ত্যাগ করে উদার গণতান্ত্রিক বাংলা- দেশ গড়ে তুলতে সহায়তা করুন।

সংবিধান অনুযায়ী গতকাল বুধবার দশম সংসদের প্রথম অধিবেশনে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি। তিনি তার ভাষণের সংক্ষিপ সারমর্ম পাঠ করেন। বাকিটা টেবিলে উপস্থাপিত হয়। মূলতবির পর অধিবেশন ফের বসলে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হবে।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলোর উদ্দেশে আরও বলেন, রাজনীতি থেকে হিংসা, হানাহানি ও সংঘাতের অবসানের মাধ্যমে একটি সহিষ্ণু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখুন। নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর সংলাপের প্রস্তাবে বিরোধী দলের সাড়া না দেয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিরোধী দলকে সর্বদলীয় সরকারে যোগদানের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এমনকি মন্ত্রিসভার সদস্য হিসাবে তারা যে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণে আগ্রহী, সে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রদানেরও প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। কিন্তু বিরোধী দল সে আমন্ত্রণে সাড়া না দিয়ে নির্বাচন প্রতিহত করার পথ বেছে নেয়।

নির্বাচন প্রসঙ্গ আবদুল হামিদ বলেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাধ্যকতা অনুযায়ী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিকূল পরিবেশ সত্ত্বেও অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজনীতির নামে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির এ ধরনের অপচেষ্টা দমন করতে হবে। জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। ভাষণে রাষ্ট্রপতি গত পাঁচ বছরে শেখ হাসিনার মহাজোট সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরে এর প্রশংসা করেন, সমালোচনা করেন বিএনপির সংসদ বর্জনের।

যুদ্ধাপরাধের বিচারকে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং একাত্তরের চেতনা পুনরুজ্জীবনের মাইলফলক হিসেবে আখ্যায়িত করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এ বিচার করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ে। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ২০০৯ সালে কতিপয় বিরোধী রাজনৈতিক দল অসহযোগিতা ও সংঘাতের পথ গ্রহণ করেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ার পর থেকেই তারা যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় মরিয়া হয়ে ওঠে। রাষ্ট্রপতির ভাষণের পর সংসদ ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।