দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড : গাংনীতে বজ্রপাতে ২৭ পরীক্ষার্থী আহত

 

 

স্টাফ রিপোর্টার:আবহাওয়ার পরিবর্তনে দেশব্যাপি বৃষ্টিশুরু হয়েছে। আগামী দু দিন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত চুয়াডাঙ্গায় ৪৩মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। মেহেরপুর গাংনীতে বৃষ্টির সাথে বজ্রপাত শুরু হয়। এ সময় বজ্রপাতে ভাটপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২৭ জন পরীক্ষার্থী আহত হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশ পশ্চিম বঙ্গ উপকূলে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিন-পশ্চিম মরসুমি বায়ু সমগ্র বাংলাদেশের ওপর বিস্তার লাভ করছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মরসুমি বায়ু সমগ্র বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র মাঝারি থেকে প্রবলভাবে সক্রিয় রয়েছে।ঢাকা, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা। গতকাল বুধবার আবহাওয়া অফিসের রেকর্ড অনুযায়ী সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪৩মিলিমিটার। এ ছাড়া ফরিদপুরে ৩৮, সীতাকুন্ডে ৩৪, শ্রীমঙ্গলে৩২, পটুয়াখালীতে ১৪, চট্টগ্রামে ১৩,মাইজদিকোর্টে ১২ ও ফেনিতে ১১ মিলিমিটারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিহয়েছে। রাজধানী ঢাকাতে কোনো বৃষ্টি হয়নি বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো রাজশাহীতে ৩৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বোনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো চট্টগ্রামে ২৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৪.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বোনিম্ন ২৬.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছে, বজ্রপাতে মেহেরপুর গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২৭ ছাত্র আহত হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে পরীক্ষা চলাকালে বজ্রপাতের এ ঘটনা ঘটে। ভাটপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকাল ১০টার পর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। বিজলীসহ বজ্রপাতও ছিলো। দুপুরে তীব্র আলোর ঝলকানির মধ্য দিয়ে বিকট শব্দে একটি বজ্রপাত হয়। এতেই ঘটে বিপত্তি। অজ্ঞান হয়ে পড়েন অন্তত ২৭ ছাত্র। প্রধান শিক্ষক রোমানুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের পূর্ব-দক্ষিণকোণে এক কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবনে মধ্যবর্ষ পরীক্ষায় অংশ নেয় অষ্টম ও নবম শ্রেণির প্রায় ৭০ জন ছাত্র। বজ্রপাতে তারা সকলেই শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এদের মধ্যে অষ্টম শ্রেণির রিন্টু ও ইব্রাহিম, নবম শ্রেণির উজ্জল, হিরক, ওলিউল্লাহ, জুয়েল ও জান্নাতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে সামান্য ফুসকা সৃষ্টি হয়। কানে আঘাতপ্রাপ্ত হয় অষ্টম শ্রেণির ফয়সাল, বিল্লাল ও নবম শ্রেণির আবু সাইদ। এক পর্যায়ে তারা সুস্থ হয়ে ওঠেন। সাতজনকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসাও দেয়া হয়। ওই শ্রেণিকক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক (বিএসসি) আশরাফুল হক জানান, ভবনের ছাদের ওপর আঘাত হানে বজ্রপাত। এতে কক্ষের মধ্যে আগুনের ফুলকি ঝরে পড়ে। কক্ষের বৈদ্যুতিক সংযোগের তারসহ জিনিসপত্র ও ফ্যানগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে বিঘ্নিত হয়েছে পরীক্ষা কার্যক্রম। এদিকে বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী বাজারের চা বিক্রেতাও গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।