দু দিন ধরে অবরুদ্ধ বিএনপি কার্যালয়

স্টাফ রিপোর্টার: পুলিশ টানা দুদিন ধরে রাজধানী নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কার্যালয়ের ভেতরে দলীয় নেতাকর্মীদের ঢুকতে ও বের হতে দেয়া হচ্ছে না। ২৫ অক্টোবরের সমাবেশ বানচাল ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করতেই সরকার এ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কাউকে বিএনপির কার্যালয়ে ঢুকতে বা বের হতে বাধা দেয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতেই নয়াপল্টন এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বিএনপি কার্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায়, পোশাকধারী পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি শাদা পোশাকেও বিপুল সংখ্যক গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য অবস্থান নিয়েছে। মজুত রাখা হয়েছে সাঁজোয়া যান, জলকামান, পুলিশের শাদা মাইক্রোবাস ও প্রিজন ভ্যান। ফকিরাপুল ও বিজয়নগর মোড়ে পুলিশ চেকপোস্টও বসানো হয়েছে। তবে পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী উপেক্ষা করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।

গতকাল শুক্রবার সকালে মির্জা আলমগীর অভিযোগ করে বলেন, দলীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীরা আসবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাদের আসতে দেয়া হচ্ছে না। এখনই যদি সরকারের অবস্থা এমন হয়; তাহলে তাদের অধীনে নির্বাচন কেমন হবে বোঝা যায়। সম্প্রতি নির্দলীয় সরকার পদ্ধতি পুনর্বহালের দাবিতে ২৫ অক্টোবর রাজধানীতে জনসভা করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। ঈদের আগে একটি অনুষ্ঠানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ২৫ অক্টোবরের জনসভায় সরকারি দল আক্রমণ করতে পারে। তাই ওইদিন আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য দা, কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দলীয় কর্মীদের প্রস্তুত থাকতে হবে। সাদেক হোসেন খোকার এ ঘোষণার পরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর তার রাজধানীর বাসভবনে একাধিকবার তল্লাশি চালায় পুলিশ। ঈদের পর দিন সকাল থেকে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেয়। পুলিশ ভ্যান, সাঁজোয়া যান প্রস্তুত রাখা হয়।

গতকাল ভোর ৪টায় কার্যালয়ে প্রবেশ করেন রিজভী আহমেদ। সকাল ১১টায় কার্যালয়ে যান মির্জা আলমগীর। এরপর ভেতর থেকে কার্যালয়ের ফটকে তালা দেয়া হয়। এরপর দলীয় কোনো নেতাকর্মীকে প্রবেশ করতে দেখা যায়নি। তবে দুপুরের পর মির্জা আলমগীর দলীয় কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান। দলীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রাখার বিষয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ বলেন, আমাদের ২৫ অক্টোবর রাজধানীতে শান্তিপূর্ণ একটি সমাবেশ রয়েছে। সরকার সমাবেশ বানচাল করতে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চায় বলেই বিএনপি অফিসের সামনে প্রিজন ভ্যান ও বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করেছে।

তিনি আরও বলেন, দলীয় কার্যালয়ের ভেতর নেতাকর্মীদের ঢুকতে ও বের হতে দেয়া হচ্ছে না। পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে মহাসচিব কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। এটা সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণ এবং গণতান্ত্রিক রীতিনীতির বিরোধী। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। পুলিশের মতিঝিল অঞ্চলের উপকমিশনার আশরাফুজ্জামান বলেন, নয়াপল্টন এলাকায় অনেক সময় ভাঙচুর হয়, তাই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ঈদের ছুটিতে হঠাত কেন নিরাপত্তা বাড়ানো হলো জানতে চাইলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি বিএনপির নেতাকর্মীদের দা-কুড়াল নিয়ে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এ কারণে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।