দীপাবলীতে আঁধার কেটে মঙ্গল কামনা

স্টাফ রিপোর্টার: মঙ্গল দ্বীপ জ্বেলে অন্ধকারে দু চোখ আলোয় ভরো প্রভু’, ‘প্রতি প্রাণে জ্বলুক জ্ঞানের আলোকশিখা’-অন্ধকার সরিয়ে সবার মঙ্গল কামনায় এভাবে দীপাবলীতে প্রার্থনা করলেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। মনের ভেতরের আসুরিক শক্তির বিনাশ আর প্রীতিময় এক বিশ্ব গড়ে তুলতে দেবী কালীর কাছে বর প্রার্থনা করলেন তারা। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বৃহস্পতিবার উদযাপন করলেন অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দীপাবলী বা দীপান্বিতা উৎসব। চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরসহ দেশজুড়ে নানা আয়োজনে এই উৎসব হয়। আশ্বিন মাসের কৃষ্ণা ত্রয়োদশীর দিন ‘ধনতেরস’ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে দীপাবলি উৎসবের সূচনা হয়। দ্বিতীয় দিনটিকে বলে ‘নরক চতুর্দশী’। তৃতীয় দিন অমাবস্যায় কালীপূজা হয়, এদিনই উদযাপিত হয় দীপাবলীর মূল উৎসব। চতুর্থ দিন কার্তিক ‘শুক্লা প্রতিপদ’। এই দিন বৈষ্ণবরা গোবর্ধন পূজা করেন। পঞ্চম দিন ‘ভ্রাতৃ দ্বিতীয়া’ বা ‘ভাইফোঁটা’, একে ‘যমদ্বিতীয়া’ও বলা হয়। হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী, দীপাবলীর এই দিনে বিষ্ণুর বামন অবতার অসুর বলিকে বধ করেন। হিন্দুদের বিশ্বাস, ভালোবাসা ও জ্ঞানের শিখা প্রজ্বলিত করতে অসুর বলিকে পৃথিবীতে এসে অযুত অযুত প্রদীপ জ্বালানোর অনুমতি দেওয়া হয় দীপাবলীর এ দিনে। তবে দীপান্বিতা উৎসবটি এসেছে মূলত রামায়ণ থেকে।রামায়ণ অনুসারেই দীপাবলী তিথির প্রচলন বলে অনেকে মনে করেন। কথিত আছে, ত্রেতা যুগে দীপাবলী দিনে রামচন্দ্র রাবণ বধ করে চৌদ্দ বছরের বনবাস শেষে অযোধ্যায় প্রত্যাবর্তন করেন। রামের চৌদ্দ বছর পরের প্রত্যাবর্তনে সারা রাজ্যজুড়ে প্রদীপ জ্বালানো হয়, রাজ্যজুড়ে বাজি উৎসব করেন প্রজারা। দীপান্বিতা তিথিতে হিন্দুরা ঘরে ঘরে মাটির প্রদীপ জ্বালেন। এই প্রদীপ জ্বালানো অমঙ্গল বিতাড়নের প্রতীক। বাড়িঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে সারা রাত প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখলে ঘরে লক্ষ্মী আসেন বলে হিন্দুরা বিশ্বাস করেন। অমঙ্গল বিতাড়নের জন্য আতসবাজিও পোড়ানো হয়।