দামুড়হুদার লোকনাথপুর তালবাগানে আখক্ষেত থেকে উদ্ধারকৃত লাশের পরিচয় মিলেছে

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার লোকনাথপুর ফায়ার সার্ভিসের অদূরে তালবাগান নামক মাঠের আখক্ষেতের মধ্য থেকে উদ্ধারকৃত লাশের পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তির নাম আশরাফুল ইসলাম (৩৫)। তিনি জয়রামপুর ঠাকুরপাড়ার আকবর আলীর সেজ ছেলে। নিহত আশরাফুলের পরিবারের সদস্যরা জানান, সে প্রায় ২৬ দিন আগে তার ছেলে খোকনের নতুন বাইসাইকেল নিয়ে খালার বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার জিন্নানগর সেজিয়া গ্রামে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর সে আর বাড়ি ফেরেনি। লোকনাথপুর তালবাগানে লাশ উদ্ধার হয়েছে শুনে আমরা পরদিন সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে গিয়েছিলাম। তার পরনের পোশাকের বর্নণা শুনে লাশ শনাক্তও করা হয়েছিলো। কিন্তু লাশ নিতে ডোমরা ৫ হাজার টাকা দাবি করে। ফলে লাশ আর বাড়ি নেয়া হয়নি। ওইদিন বিকেলে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে আঞ্জুমান মফিদুলে তার দাফন করা হয়। প্রতিবেশীরা জানান, আশরাফুল ঠিকমতো কাজ করতো না। সে মাঝে মধ্যে মাঠের বেগুন, ঝাল চুরি করে বিক্রি করতো এবং ওই টাকা দিয়ে গাঁজা কিনতো। পিতার উড়োনচণ্ডি স্বভাবের কারণে সংসারের অভাব ঘোচাতে বড় ছেলে খোকন (১৬) বছরখানেক ধরে লেখাপড়া বাদ দিয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করা শুরু করে। সম্প্রতি খোকনের মামা একটি নতুন বাইসাইকেল কিনে দেয় খোকনকে। সর্বশেষ ছেলে ওই নতুন বাইসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় আশরাফুল। খালার বাড়ি থেকে নিজ বাড়ি জয়রামপুর ফেরার সময় পথিমধ্যে ছিনতাইকারীরা ওই নতুন বাইসাইকেল কেড়ে নেয়ার চেষ্টাকালে সে দিতে না চাইলে ছিনতাইকারীরা তাকে মেরে ফেলে বাইসাইকেলটি নিয়ে তার লাশ ওই আখক্ষেতের মধ্যে রেখে যেতে পারে বলে নিহতের স্বজনদের ধারণা।

দু সন্তানের জনক নিহত আশরাফুল ছিলো ৪ ভাইয়ের মধ্যে সেজ। বড় ভাই শওকত আলী পাড়ার মসজিদে ইমামতি করেন, মেজ ভাই আশকার করিমনচালক এবং ছোট ভাই জামাল কৃষিকাজ করেন। ছোট ছেলে রতন গ্রামের প্রাইমারি স্কুলের ২য় শ্রেণিতে পড়ে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার সকালে মাঠে যাওয়ার সময় কৃষকরা লোকনাথপুর ফায়ার সার্ভিসের অদূরে তালবাগান নামক মাঠের আখক্ষেতের মধ্যে লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।