দামুড়হুদার গুলশানপাড়ায় ঘরের দরজা ভেঙে কলেজছাত্রীকে জোরপূর্বক শ্লীলতহানির অপচেষ্টা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা : দু বখাটেকে ধরে জেলহাজতে প্রেরণ

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদা উপজেলা সদরের গুলশানপাড়ায় সন্ধ্যারাতে ঘরের দরজা ভেঙে জোরপূর্বক দু ছাত্রীকে উঠিয়ে নিয়ে শ্লীলতহানির চেষ্টার অভিযোগে চার বখাটের মধ্যে শরিফুল ও সুজন নামের দু বখাটে যুবককে আটক করেছে থানা পুলিশ। শ্লীলতাহানির শিকার এক ছাত্রী বাদী হয়ে ওই চার বখাটে যুবকের বিরূদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছে।

মামলার অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলা শহরের গুলশানপাড়ার আলিহিমের ছেলে সাইফুলের বাড়ি ভাড়া নিয়ে হেমায়েতপুর, ঠাকুরপুর, জাহাজপোতা ও বাগেরহাট থেকে আসা দামুড়হুদা আব্দুল ওদুদ শাহ ডিগ্রি কলেজের ৪ ছাত্রী বেশ কিছুদিন ধরে বসবাস করে আসছে। বাড়িটি ইতোমধ্যেই মেয়েদের মেস হিসেবে পরিচিতি গড়ে উঠেছে। গত রোববার রাত আনুমানিক আটটার দিকে ওই চার ছাত্রী পড়াশুনা করছিলো। ওই সময় দামুড়হুদা বসুতিপাড়ার ফরুর ছেলে যুবলীগ ক্যাডার মালেক (২৮), বাসস্ট্যান্ডপাড়ার হামিদের ছেলে ইস্রাফিল (২৫), বনানীপাড়ার ছাদেক আলীর ছেলে শরিফুল (১৮) ও নতিপোতার আনছার আলীর ছেলে সুজন (১৮) পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক কৌশলে সাইফুলের বাসার ওই ছাত্রীদের মেসে প্রবেশ করে এবং কে কোন রুমে থাকে তারা তা ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকে। ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় ওই চার ছাত্রী বখাটেদের মেসে ঢোকার কারণ জানতে চাইলে তারা বলে ‘আমরা এ বাসা ভাড়া নিয়েছি তাই ঘুরে ফিরে দেখছি।’ এর পরপরই ওই চার ছাত্রী ঘটনাটি বাড়ির মালিক সাইফুলকে মোবাইল করে জানালে তারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। পরবর্তীতে রাত ৯টার দিকে বাড়ির মালিক ওই চার বখাটেকে ছাত্রীদের মেসে যাওয়ার কারণ জানতে চান এবং আর কোনোদিন যেন তারা ওই মেসে না যায় সে মর্মে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ওই চার বখাটে যুবক। হাতে লোহার রড নিয়ে আবারও হানা দেয় ওই মেসে। বাড়ির প্রধান গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং ওই ৪ ছাত্রীদের মধ্যে দুজনকে পাজাকোলা করে জোরপূর্বক বাইরে নিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। মেসে থাকা অপর দু ছাত্রী তাদেরকে বাধা দিতে গেলে তারা একজনকে লোহার দিয়ে পায়ে মেরে আহত করে। এ সময় ছাত্রীরা চিৎকার চেঁচামেচি করলে বাড়ির মালিক সাইফুলসহ প্রতিবেশীরা ছুটে এলে বখাটেরা অবস্থা বেগতিক দেখে পালিয়ে যায়। প্রতিবেশীরা  ঘটনাটি থানা পুলিশকে জানালে ওসি আহসান হাবিবের নির্দেশে এসআই আফজাল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই ছাত্রীদের কাছে ঘটনা শোনেন। পুলিশ প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় অনেকটা উলঙ্গ অবস্থায় ওই চারজনের মধ্যে লম্পট দু বখাটে শরীফ ও সুজনকে একই পাড়ার একটি মেস থেকে আটক করে। বাকী দু বখাটে মালেক ও ইসরাফিলকে গ্রেফতারের জন্য তাদের উভয়ের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায়। তারা বাড়িতে না থাকায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়। তারা পলাতক রয়েছে।

এ বিষয়ে শ্লীলতাহানির শিকার এক ছাত্রী বাদী হয়ে রাতেই ওই চার বখাটে যুবকের বিরূদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছে। আটক দু বখাটে শরিফুল ও সুজনকে গতকাল সোমবার বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলে বিজ্ঞ আদালত তাদের উভয়কেই জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।