ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নতুন বর নিহত

আনুষ্ঠানিক বিয়ের সপ্তাহ ঘোরার আগেই বিধবা হলেন স্মৃতি খাতুন : ভালাইপুরে শোক

স্টাফ রিপোর্টার: আনুষ্ঠানিক বিয়ের সপ্তাহ ঘোরার আগেই বিধবা হলেন আলমডাঙ্গার পল্লি মহেশপুরের মেয়ে স্মৃতি খাতুন। দশবদনে থাকাকালে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল থেকে আছড়ে পড়ে নিহত হয়েছেন তার স্বামী ভালাইপুর মোড়ের মনোহারী ব্যবসায়ী সুমন হোসেন (২২)। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভালাইপুর-হাটবোয়ালিয়া সড়কের আসমানখালী শালিকা পূর্বপাড়া নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সুমন হোসেন চুয়াডাঙ্গা ভালাইপুর হুচুকপাড়ার জিনারুল ইসলামের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে ভালাইপুর মোড়ে মনোহারী দোকান দিয়ে সুনামের সাথে ব্যবসা করে আসছিলেন তিনি। গত শুক্রবার তার সাথে মহেশপুরের খোকন মালিতার মেয়ে স্মৃতি খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর প্রথা অনুযায়ী দশবদন বা ফিরিনি বা আষ্টমঙ্গলায় থাকাকালে ঘাতক ট্রাকের ধাক্কায় ঝরে যেতে হলো তাকে। সকালে দোকানদারী করে দুপুরে মোটরসাইকেলযোগে শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
আসমানখালী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, আলমডাঙ্গার ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের খোকন মালিথার মেয়ে স্মৃতি খাতুনের সাথে গত শুক্রবার বিয়ে হয় চুয়াডাঙ্গা হুচুকপাড়ার জিনারুল ইসলামের ছেলে সুমনের। ভালাইপুর থেকে মোটরসাইকেলযোগে শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়। বিপরীতমুখি বালিভর্তি ট্রাক তাকে ধাক্কা দেয়। আছড়ে পড়েন তিনি। পিচঢালা কালো রাস্তা তার রক্তে লাল হয়ে ওঠে। স্থানীয়রা উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শামীমা ইয়াসমিন তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ভালাইপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ভালাইপুর মোড়ের ব্যবসায়ী সুমনের হোসেনের অকাল মৃত্যুতে ভালাইপুর বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দ শোকবার্তায় মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমাবেদনা জানিয়ে একবেলা দোকান বন্ধ রাখার আহ্বান জানান। অপরদিকে, পারিবারিকসূত্র বলেছে, সুমনের সাথে স্মৃতির আনুমানিক ৪ মাস আগে বিয়ে হলেও গত শুক্রবার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ভালাইপুর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা শান্তি জানান, নিহতের বড় ভাই বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। ছোট ছেলে সুমনই ছিলো পিতার ব্যবসা বাণিজ্য দেখার একমাত্র ভরসা। সেই ভরসাকে হারিয়ে নবধূর দিকে তাকিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন জিনারুল ইসলাম। পিতাসহ মায়ের আহাজারিতে গ্রামের বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। মামলা না করায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই গতকালই নিজ গ্রামের কবরস্থানে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।