ঝড়োবাতাসসহ অবিরাম বর্ষণে ব্যাপক ক্ষতি : বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু

যশোর-চুয়াডাঙ্গায় অবস্থান নেয়া নিম্নচাপ পশ্চিমে সরে দুর্বল হয়ে পড়ছে ক্রমশ

 

মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: পরশুরাতের অবিরাম বর্ষণে উপড়ে পড়েছে কার্পাসডাঙ্গার কালের সাক্ষী দীর্ঘদিনের ঝাউগাছসহ বহু বৃক্ষ। চুয়াডাঙ্গার ইসলামপাড়াসহ বহু এলাকার নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতায় জনদুর্ভোগ বেড়েছে। মাঠের আবাদ ও আবাদি জমিও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। গতকালের বৃষ্টির মাঝে বজ্রপাতে আলমডাঙ্গার পল্লি চিৎলার রুইথনপুরের কৃষক দবির উদ্দীনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তা ছাড়া দুদিনের বৃষ্টিপাতে ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বহু আবাদ পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। পরশু মধ্যরাতে বিদ্যুত বিপর্যয় মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গায় কিছুটা কাটিয়ে ওঠা গেলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে তা স্বাভাবিক করতে সময় লেগেছে গতকাল দুপুর।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, যশোর-চুয়াডাঙ্গা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেয়া নিম্নচাপটি গতকাল পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিমবঙ্গে ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেয়। এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দূর্বল হয়ে পড়ছে। তবে এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে ও গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। মরসুমি বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার ও নিম্নচাপের কেন্দ্রস্থল এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তার রয়েছে। মরসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র প্রবল অবস্থায় রয়েছে। এর প্রভাবে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা (২-৩) ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বৃদ্ধি পেতে পারে। রাতের তাপমাত্রাও বাড়তে পারে সামান্য।  চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা না থাকায় সতর্কতা সরিয়ে নেয়া হয়। গতপরশু রাত থেকে গতকাল বিকেল পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গায় ১২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

বৃষ্টিতে চুয়াডাঙ্গায় ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক তথ্য জানতে গেলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, গত ১ আগস্ট থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা গড়ে প্রায় ১৭ দশমিক ০৯ মিলিমিটার। পরশু রাত ১২টা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৯৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ রেকর্ড করে। গত দুদিনের বৃষ্টিপাতে ফসলের খতি হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলায় আউশ ধান চাষ হয়েছে ২৮ হাজার ২০ হেক্টর, পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে ৪ হাজার ৯শ ৮০ হেক্টর। রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে ৩২ হাজার ৪শ ৫০ হেক্টর। এর মধ্যে পানিতে আংশিক নিমজ্জিত ৬শ ৫৫ হেক্টর। মরিচ চাষ হয়েছে ৪শ ৭৫ হেক্টর, যা পুরোটাই আংশিক ক্ষতি হয়েছে। কলা চাষ হয়েছে ৯শ ৬৫ হেক্টর, আংশিক ক্ষতি হয়েছে ৬৭ হেক্টর। পেঁপে চাষ হয়েছে ২শ ১২ হেক্টর, আংশিক ক্ষতি হয়েছে ৭৭ হেক্টর। গ্রীষ্মকালিন সবজি চাষ হয়েছে ৬ হাজার ৫০ হেক্টর, আংশিক ক্ষতি হয়েছে ২শ ১০ হেক্টর।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ইসলামপাড়ায় শতাধিক পরিবার পানির কারণে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো পানিবন্দি থেকে মুক্তি পেতে জেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে দাবি করেছেন। এলাকাবাসী জানায়, একদিকে মাথাভাঙ্গা নদীর ভাঙ্গন। অপরদিকে বৃষ্টির পানি জমে এলাকার হতদরিদ্র পাঁচশতাধিক মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছেন। দেখার কেউ নেই। চুযাডাঙ্গা পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের ইসলামপাড়ায় গত বুধবার টানা বৃষ্টির কারণে শতাধিক পরিবার পানির কারণে চলাচলে বাধার মুখে পড়েছে। ঘর থেকে বের হতে পারছে না। তেমনী রান্নার জায়গা না পেয়ে প্রতিবেশীদের বাড়িতে গিয়ে কেউ কেউ রান্নার কাজ সারছেন।

ইসলামপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল লতিফ জানান, ২০০০ সালের বন্যায় মাথাভাঙ্গা নদীর পাঁড় ভেঙে ইসলামপাড়ায় পানি ঢুকে পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ওই সময় থেকে মাথাভাঙ্গা নদীর পাঁড়টি না বাঁধায় পানি ঢুকে প্রায় তলিয়ে যায়। একটি বাঁধ ও সিঁড়ি করার দাবি জানালেও তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। স্থানীয় মেয়র ও কাউন্সিলরদের কাছে একাধিকবার জানিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না।

একই পাড়ার মুকুল বিশ্বাস জানান, ৫ নং ওয়ার্ডে কোনো উন্নয়ন নেই। নির্বাচনের সময় প্রার্থীরা প্রতিশ্রুতি দিলেও ভোটের পর কাউকেই আর খুঁজে পাওয়া যায় না। ৪ থেকে ৫শ লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছি অথচ কেউই খবর নিচ্ছে না। একই ধরণের অভিযোগ করে অনিতা নামে এক গৃহবধু জানান, নিজের বাড়িতে পানি জমে থাকায় প্রতিবেশীর বাড়িতে এসে কোনো রকম রান্নার কাজ করছি। আবার যদি বৃষ্টি হয় তাহলে গাছতলায় গিয়ে উঠতে হবে।

চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী  জানান, ওই এলাকার পানি বের করতে একটি ড্রেনের প্রস্তাব প্রস্তাবনা রয়েছে। আশা করি আগামীতে এ সমস্যা থাকবে না। শুধু ওই এলাকা নয়, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার যেসব স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছ তা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

ভালাইপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার চিতলা ইউনিয়নের রুইথনপুর গ্রামে দবির উদ্দিন (৪০) নামের এক কৃষকের বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ওই বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।

নিহতের প্রতিবেশীরা  জানান, রুইথনপুর গ্রামের মৃত দুলাল উদ্দিনে ছেলে কৃষক দবির উদ্দিন দুপুরের পর দক্ষিণপাড়া মাঠে ধান খেতের পরিচর্যা করতে যান।  বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বজ্রপাতে আহত হয়। তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের উদ্দেশে নেয়া হয়। তবে, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই সদর উপজেলার হাতিকাটা নামক স্থানে তার মৃত্যু হয়। এরপর স্বজনেরা বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। আলমডাঙ্গার হাঁপানিয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেকেন্দার আলী কৃষক দবির উদ্দিনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী রুইথনপুর গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে জাহিদুল জানান, নিহত দবির মণ্ডল যখন তার জমিতে ধান রোপণ করছিলেন। তখন আমি পাশের চমিতে হাল চাষ করছিলাম  বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হঠাত আলোয় ঝলসে উঠলো। আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলে দেখি দবিরও অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। তৎক্ষাণিক গ্রামবাসীর সহায়তায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে গ্রামের কবর স্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে। দবির উদ্দীন ছিলেন ৩ সন্তানের জনক।

ডিঙ্গেদহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, অবিরাম বর্ষণে চুয়াডাঙ্গা সদরের শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নে রাস্তা ঘাট, গাছ পালা, ধান, পাটসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। ইউনিয়নে ফুলবাড়ি, হানুরবাড়াদী, জালসুকা ও শঙ্করচন্দ্র গ্রামের গাছ পালা উপড়ে গেছে। পানির নিচে তলিয়ে গেছে প্রায় ৬শ একর জমির ধান। এলাকার খাল বিল নদী বেদখলে যাওয়ার কারণে বর্ষার পানি বের হওয়ার রাস্তা না পেয়ে পানিগর্ভে বিলিন হচ্ছে আবাদ, আবাদি জমি।

বদরগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চুয়াডাঙ্গার কুতুবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার মাঠ ঘাট তলিয়ে গেছে। আলিয়ারপুর টাউয়ারপাড়ার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যাবস্থা না থাকার কারণের প্রায় ৯শ পরিবারের মানুষ চলাচল করতে পারছে না।  দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য বদরগঞ্জ বাজার থেকে আলিয়ারপুর গ্রামের মধ্যে দিয়ে নবগঙ্গা পযন্ত ড্রেন নিমাণ করার জন্য কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্যের আশু দৃষ্টি কামনা করেছে এলাকাবাসী।

অপরদিকে সিন্দুরিয়ার কেটের খালের মুখ মাটি দিয়ে বন্ধ করে রাখার কারণে বৃষ্টির পানিতে মাঠের ধানসহ ফসল ডুবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষিত হয়েছে। এছাড়া কুতুবপুর ইউপির বিভিন্ন গ্রামের মানুষের কাঁচা ঘর ও আধাপাকা বাড়ি ভেঙে পড়েছে।

কার্পাসডাঙ্গা অঞ্চলের ভ্রাম্যমাণ সংবাদদাতা জানিয়েছেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের নীলকুঠির শতবর্ষী ঝাঁউগাছটি গত বুধবার রাতে ঝড়ে উপড়ে পড়েছে। সেই সাথে মুছে গেলো ইংরেজ আমলের একটি সাক্ষী।  কার্পাসডাঙ্গা বাজারের পূর্বপাশে কার্পাসডাঙ্গা-বাঘাডাঙ্গা মৌজার প্রায় একশ বিঘা জমি নিয়ে ইংরেজ সাহেবরা ভৈরব নদীর তীর ঘেঁষে কুঠিবাড়ি স্থাপন করেন। কার্পাসডাঙ্গা কুঠি বাড়িটির আশপাশের কুঠি বাড়ির প্রধান কার্যলয় হিসেবে ব্যবহার হতো।  নদীর পাড় ঘেঁষে  হাওয়া খানা ও বসবাসের জন্য সুরম্য স্থাপনা নির্মাণ করেন। কালের বিবর্তনে এ সকল স্থপনা আজ নিশ্চিন্ন।  কুঠিবাড়িতে এখন কার্পাসডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়ণ কেন্দ্র, ডিগ্রি কলেজ, পুলিশ ক্যাম্প সরকারিভাবে গড়ে উঠেছে আবাসন প্রকল্পের ঘরবাড়ি।  কালের সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে ছিলো কুঠিবাড়ি প্রবেশদ্বার ও একটি বড় ঝাঁউগাছ। ঝাঁউগাছটির অবস্থান ছিলো কার্পাসডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশের বাউন্ডারির মধ্যে। এ ঝাঁউগাছের ওপরে উঠলে দেখা যেতো দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির চোঙ। এ ঐতিহাসিক ঝাঁউগাছটি  গত বুধবার রাতে অতিবর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ায় উপড়ে পড়েছে।

জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় একটানা মুষলধারে বৃষ্টির কারণে ২১ ঘণ্টা বিদ্যুত সরবরাহ বিচ্ছিন্ন ছিলো। একটানা দীর্ঘ সময় বিদ্যুত সরবরাহ বিচ্ছিন্ন থাকায় দৈনন্দিন কাজকর্মে স্থবিরতা নেমে আসে। বিদ্যুতের অভাবে এ উপজেলাবাসীর রাত কাটে অন্ধকারে। বিদ্যুত গ্রাহকদের জিজ্ঞাসা মুষলধারে বৃষ্টিতে যদি ২১ ঘণ্টা অন্ধকারে থাকতে হয়, ঝড়ো হাওয়া হলে ক’দিন অন্ধকারে থাকতে হবে?

এ দিকে অতিবর্ষণের কারণে নিম্নাঞ্চলসহ ধান, সবজি ও ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। ডুবে গেছে রাস্তা-ঘাট। বহু বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। একটানা বর্ষণের কারণে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাটির ঘর ও দেয়াল ধ্বসে পড়েছে এবং গাছ-পালা উপড়ে গেছে। বর্ষণের পানিতে বেগুন, মরিচ, পটোল, করলা ও শাক-সবজির ক্ষেত তলিয়ে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেসে গেছে বিল-বাওড় ও পুকুরের মাছ।

উথলীর আবজালুর রহমান ধীরু জানিয়েছেন, অতিবর্ষণে তার ক্ষেতের ৫ শতাধিক কলাগাছ ভেঙে পড়েছে। উপড়ে গিয়ে কয়েক ফলন্ত শ থাই পিয়ারা গাছ। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫ লাখ টাকা বলে তিনি জানান।

মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতির জীবননগর উপজেলা জুনিয়র প্রকৌশলী মামুন-উর-রশীদ জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে চুয়াডাঙ্গার জাফরপুরস্থ সাব-স্টেশন গ্রিডে ত্রুটি দেখা দেয়ায় বুধবার বেলা ১২টা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ ছিলো।

উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান, অতিবৃষ্টিতে ৩ হাজার ২৩০ হেক্টর ক্ষেতের আঊশ ও আঊশ রোপা ধান, ২৫০ হেক্টর ক্ষেতের বেগুন, ১৭৫ হেক্টর ক্ষেতের মরিচ ও ৯৮০ হেক্টর ক্ষেতের শাক-সবজি ডুবে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ উপজেলায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৫৩ মিলি মিটার। তিনি জানান, ধান ও শাক-সবজির ক্ষতির পরিমাণ নিরুপনের কাজ চলছে।