ঝিনাইদহ সীমান্তে বিজিবির আটক আতঙ্কে ৫ ইউনিয়ন পুরুষ শূন্য

ঝিনাইদহ সংবাদদাতা: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ৫ ইউনিয়নের সীমান্তের গ্রামগুলোতে বিজিবি’র আটক আতঙ্কে পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। বিজিবি গত ৭ দিনে ১৯টি মামলা দায়ের করেছে, অর্ধশত লোকজনকে আটক করেছে, ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত সীমান্তের বাসিন্দারা।
এলাকাবাসী, বিজিবি ও থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ জুন ভারতে গরু আনতে গিয়ে ২ বাংলাদেশী কিশোর বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়। পরদিন ২১ জুন সন্ধ্যায় লাশ হস্তান্তর হয়। ২২ জুন থেকে ৫৮ বিজিবি সীমান্তের ৫ ইউনিয়ন স্বরুপপুর, শ্যামকুড়, নেপা, কাজীরবেড় ও যাদবপুর ইউনিয়নে বিশেষ অভিযান চালিয়ে সীমান্তে বসবাসরত গ্রামগুলো থেকে অর্ধশত ব্যক্তিকে আটক করে ১৯টি মামলা দায়ের করেছে। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, এ সকল ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে ধরে মাদক দিয়ে মহেশপুর থানায় মামলা দেয়া হয়েছে। অপরদিকে বিজিবি জানিয়েছে, ওই সকল ব্যক্তিরা চোরাকারবারী।
ঈদের ভেতর অভিযানের কারণে ওই সকল গ্রামগুলোতে আটক আতঙ্কে পুরুষ শূণ্য হয়ে পড়েছে। ফলে পরিবারগুলোর ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। নেপা ইউপির বাঘাডাঙ্গা গ্রামের সাবেক মেম্বার ও আ.লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম স্বপন বলেন, যাদেরকে আটক করা হয়েছে তারা কেউ মাদক ব্যবসা করে না তাদেরকে বাড়ি থেকে আটক করে মাদক দিয়ে চালান দেয়া হয়েছে।
নেপা ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল আলম মৃধা বলেন, তার ইউনিয়ন থেকে যাদের আটক করা হয়েছে তাদের অধিকাংশ চোরাকারবারীর সাথে জড়িত না। বিজিবি তাকেও হয়রানি করেছে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে সাবেক এমপি শফিকুল আজম খান চঞ্চল বলেন, সীমান্তে অঞ্চল ঘুরে তিনি যা জানতে পেরেছেন বিজিবি সাধারণ মানুষজনকে হয়রানি করছে তিনি চোরা চালান বন্ধ হোক সেটি কামনা করেন কিন্তু সাধারণ মানুষ যেন হয়রানি না হয়।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. নবী নেওয়াজ সীমান্ত অঞ্চল ঘুরে এসে এ প্রতিবেদককে জানান, চোরাচালান বন্ধ হোক সরকারও চাই আমিও চাই কিন্তু বিজিবি অনেক নিরাপরাধ মানুষকে আটক করে হয়রানি করছে। প্রকৃত অপরাধীরা ধরা ছোঁয়া বাইরে রয়েগেছে। আটক কৃতদের মধ্যে অনেক স্কুলছাত্র রয়েছে। তিনি আরও বলেন, খালিশপুরস্থ ৫৮ বিজিবি’র পরিচালককে হয়রানি না করে প্রকৃত অপরাধীদের আটক করার পরামর্শ দিয়েছি। এছাড়া তিনি ঢাকায় গিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে ৫৮ বিজিবি’র পরিচালক লে. কর্নেল জিল্লুর রহমান বলেন, সীমান্ত অঞ্চলে তাদের বিশেষ অভিযান চলছে যাদেরকে আটক করা হয়েছে তারা চোরাচালানের সাথে জড়িত। সীমান্তে চোরা চালান রোধে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মহেশপুর থানার ওসি আহম্মেদ কবির বলেন, বিজিবি ২৮ জুন পর্যন্ত ১৯টি মামলা দিয়েছে এতে বিজিবি ৪০-৪৫ জন আসামি ধরে তাদের থানায় হস্তান্তর করেছে। পুলিশ তাদেরকে আদালতে পাঠিয়েছে। মামলা তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত এবিষয়ে তেমন কিছু বলা যাচ্ছে না। সীমান্ত অঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে অধিকাংশ পুরুষ বাড়ি ছাড়া।