ঝিনাইদহে জালিয়াতি ও তথ্য গোপন করে চার শিক্ষকের দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি

প্রতিনিধি ঝিনাইদহ: তথ্য গোপন করে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে চার শিক্ষক এক সাথে দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার তথ্য ফাঁস হয়ে পড়েছে। শিক্ষকরা হলেন, মিতা বিশ্বাস, ফাতেমা আক্তার, অমিত কুমার সেন ও সুব্রত কুমার নন্দি। সরকারি বিধি ও আইন ভঙ্গ করে এই চার শিক্ষক কিভাবে চার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে যাচ্ছেন তার সুস্পষ্ট ব্যাখা দিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কলেজ প্রধানগণ। তবে যশোর শিক্ষা বোর্ড এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যমতে কোনো শিক্ষক একসাথে দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার সুযোগ নেই। এটা করলে হবে জালিয়াতি ও শাস্তিযাগ্য অপরাধ। কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাসের সময়সীমা একই। তবে কোনো কলেজে শিক্ষক সল্পতার কারণে ক্লাস ব্যাহত হলে কেবল বোর্ড বা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদফতরের নির্দেশ কোনো শিক্ষক সাময়িকভাবে ক্লাস নিতে পারবেন। অভিযোগ উঠেছে কালীগঞ্জ পৌরসভাধীন আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি করেন মিতা বিশ্বাস। তিনি ওই স্কুলে যোগদান করেছেন ২ হাজার সালের ১ মার্চ। প্রায় ১৫ বছর তিনি সরকারি চাকরি করার পর কালীগঞ্জ মাহতাব উদ্দীন ডিগ্রি কলেজ সরকারি করণের প্রক্রিয়া শুরু হলে মিতা বিশ্বাস কলেজটিতে ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল যোগদান করেন। মাহতাব উদ্দীন ডিগ্রি কলেজের ওয়েবসাইটে মিতা বিশ্বাসকে সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে উল্লেখ আছে।
প্রাইমারির শিক্ষক মিতা বিশ্বাসের দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরির বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বলেন, এভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে চাকরি করার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি আমি তদন্ত করে দেখছি। শহীদ নুর আলী কলেজের বাংলার শিক্ষক সুব্রত কুমার নন্দী কলেজটিতে যোগদান করেন ১৯৯৮ সালের ১ জানুয়ারি। ১৭ বছর পর তিনি মাহাতাব উদ্দীন ডিগ্রি কলেজে যোগদান করেছেন ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল। শহীদ নুর আলী কলেজে সুব্রত কুমার নন্দির শিক্ষক পরিচিতি নং ০০০০০১৫৫৬৩। শহীদ নুর আলী কলেজের রসায়ন বিভাগের আরেক শিক্ষক অমিত কুমার সেন কলেজটিতে যোগদান করেন ২০০৩ সালের ৮ জানুয়ারি। ১২ বছর পর তিনি মাহাতাব উদ্দীন ডিগ্রি কলেজে যোগদান করেছেন ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল। শহীদ নুর আলী কলেজে অমিত কুমার সেনের শিক্ষক পরিচিতি নং ০০০০০১৪৮৩০। শহীদ নুর আলী কলেজের বাংলা বিভাগের ১২৩৪৫৭৭৭৬৪ পরিচয়ধারী শিক্ষক ফাতেমা আক্তর মাহাতাব উদ্দীন ডিগ্রি কলেজে যোগদান করেছেন মর্মে নিশ্চত করেন কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ ম-ল। অভিযুক্ত শিক্ষকদের একজন অমিত কুমার সেন বলেন আমি নুর আলী কলেজ থেকে বেতন ভাতা গ্রহণ করি।
এ বিষয়ে যশোর বোর্ডের ডেপুটি কন্ট্রোলার রাকিবুল ইসলাম জানান, এক কলেজে নিয়মিত চাকরি করলে অন্য কলেজে যোগদান করতে পারেন না। করলে সেটা হবে চুরি বা জালিয়াতি। এর দায়দায়িত্ব পড়বে অধ্যক্ষর ওপর। এটা বেআইনী। যশোর বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অমল কুমার বিশ্বাস দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পাওয়ার বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, কেউ দুই জায়গায় নিয়োগ বা চাকরি নিতে পারে না। বিষয়টি ডিজি অফিস জানলে তাদের বেতন বন্ধসহ শাস্তি মুলক ব্যবস্থা নিতে পারে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফদরের শফিকুল ইসলাম সিদ্দিকী বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে জানান।