ঝিনাইদহে চিত্রা নদীর জায়গায় চার ভাইয়ের চার পুকুর

 

 

ঝিনাইদহ অফিস: চিত্রা নদীর জায়গা দখল করে বিশাল আকৃতির চারটি পুকুর তৈরি করেছেন ঝিনাইদহের সুতি গ্রামের প্রভাবশালী চার ভাই। এতে একদিকে নদীর জায়গা বেদখল হয়ে গেছে, অন্যদিকে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মরে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী চিত্রা নদীটি। দখলকারীরা হচ্ছেন সদর উপজেলার সুতি গ্রামের সামছুর রহমান, হায়দার আলী ওরফে টগা, মতিয়ার রহমান ও সেকেন্দার আলী নামের চার ভাই।

এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, মেশিনের সাহায্যে নদীর মাটি কেটে পুকুর তৈরি করার সময় তারা বাধা দিয়েছিলেন, কিন্তু তাদের কথা শোনা হয়নি। জোর করেই নদীর জায়গা দখল করে পুকুর তৈরি করেছেন। তারা জানান, পুকুর কাটার সময় তারা স্থানীয় ভূমি অফিসেও খবর দিয়েছিলেন, কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ নেননি।

এলাকাবাসী জানায়, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পশ্চিমাঞ্চল দিয়ে কালীগঞ্জের মাঝ দিয়ে যশোর হয়ে নড়াইল চলে গেছে চিত্রা নদীটি। এই নদীর ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের সুতি-দুর্গাপুর এলাকার সুতি গ্রামের নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া অংশে বিশাল আকৃতির চারটি পুকুর সদ্য তৈরি করা হয়েছে। পুকুরগুলো তৈরি করেছেন সুতি গ্রামের চার ভাই মিলে। নদীর অর্ধেক অংশ চলে গেছে তাদের পুকুরের মাঝে। মাঝ পর্যন্ত দখল করে সেখানে পাড় বাঁধা হয়েছে। সুতি গ্রামের এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বর্ষা মরসুমে এ নদীতে স্রোত থাকে। সে সময় এলাকার মানুষ নানা কাজে নদী ব্যবহার করে। উন্মুক্ত জলাশয়ে অনেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু এই নদীর মাঝ পর্যন্ত দখল করে পুকুর করায় এবার পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি আরো জানান, এভাবে নদীর পাড় দখল করে পুকুর খনন করায় নদীর নাব্যতা হারাচ্ছে।

এ ব্যাপারে পুকুর মালিকদের একজন হায়দার আলী ওরফে টগার সাথে কথা বললে তিনি জানান, নদীর পাড় ধরে তাদের জায়গায় পুকুর কেটেছেন। তারা নদীর জায়গা দখল করেননি। তবে কাটার একটু এদিক-সেদিক হতে পারে। তিনি বলেন, এটা তারা চার ভাই মিলে করেছেন। নদীর কোনো ক্ষতি তারা করেননি।

এ বিষয়ে মধুহাটি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা তোফাজ্জেল হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, নদীর পাড়ে পুকুর হচ্ছে শুনেছেন। তবে নদীর জায়গা দখল করে করা হচ্ছে এটা তিনি জানেন না। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুলকার নায়নের সাথে আলাপ করলে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান। তিনি বলেন, সরেজমিনে গিয়ে সেখানকার অবস্থান তুলে ধরে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হবে। এরপর ব্যবস্থা নেয়া হবে।