ঝিনাইদহে একুশের বই মেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে হামলা : ভাঙচুর ইটপাটকেল নিক্ষেপ : আহত ৩ : মেলা পণ্ড

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহে একুশে বই মেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। তারা মঞ্চ, চেয়ার ভাঙচুর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে। এ সময় ৩ সাংস্কৃতিককর্মী আহত হন। গতকাল শুক্রবার রাত ৮টার দিকে জেলা শহরের পুরাতন ডিসিকোর্ট চত্বরের সাংস্কৃতিক মঞ্চে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার পর পণ্ড হয়ে গেছে বইমেলা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল শুক্রবার থেকে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ৭ দিনব্যাপি একুশে বইমেলা শুরু হয়েছে। সকালে মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম। সন্ধ্যায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। জেলা শিল্পকলা একাডেমীর শিল্পীরা মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন শুরু করলে অতর্কিত হামলা চালায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা। এ সময় মঞ্চ ভাঙচুরসহ চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে তারা। সাংস্কৃতিককর্মীরা দৌঁড়ে প্রাণরক্ষা করে। আহত হয় শিশুসঙ্গীত শিল্পী রজত বিশ্বাসসহ ৩ জন। অনুষ্ঠান দেখতে আসা জেলা প্রশাসক পত্নী, পুলিশ সুপার পত্নীসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা দৌঁড়ে নিরাপদে চলে যান। এ সময় বইমেলা পণ্ড হয়ে যায়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এ ঘটনার পরমুহূর্তেই শহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। হামলার পর আওয়ামী লীগ কর্মীরা স্লোগান দিয়ে মিছিল করে বইমেলা থেকে বেরিয়ে যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারির উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে নির্বাচন বাতিল করে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ। তারা জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলামের প্রত্যাহার চেয়ে নির্বাচনের পরদিনই সংবাদ সম্মেলন করেন স্থানীয় প্রেসক্লাবে। এরপর থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জেলা প্রশাসনের অনুষ্ঠান বয়কট করে আসছে। এ নির্বাচনে জয়ী হয় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আব্দুল আলিম।

এরই জের ধরে গতকাল শুক্রবার জেলা প্রশাসন আয়োজিত বইমেলায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এদিকে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আজিজুর রহমান একুশে বই মেলায় হামলা প্রসঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি, তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। এদিকে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম জানান, একুশে বই মেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে হামলা হয়েছে। তবে কারা কেন হামলা চালিয়েছে সে ব্যাপারে কিছু বলেননি।