ঝিনাইদহের চারটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১১ প্রার্থী

ঝিনাইদহ অফিস: আজ রোববার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ঝিনাইদহ জেলার চারটি আসনের নির্বাচনী প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরের পর থেকে ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটের সরঞ্জামসহ কর্মকর্তারা যাওয়া শুরু করেন। কনকনে ঠাণ্ডায়ও ঝিনাইদহ জেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা অনেক বেশি। জেলার ৬টি উপজেলায় র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।

ঝিনাইদহ জেলার চারটি আসনে ১১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে তিনটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে মূলত আওয়ামী লীগেরই লড়াই হবে। আর একটি আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সাথে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। জেলার মোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৫৪১টি আর ভোটার ১১ লাখ ৯৬ হাজার ১৭৯ জন। এর মধ্যে ১৮০টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। শনিবার দুপুরের পর থেকে প্রিসাইডিং অফিসাররা তাদের নির্বাচনী মালামাল ও ব্যালটপেপার বুঝে নেন রিটার্নি কর্মকর্তার কাছ থেকে।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহকারী রিটার্নিং অফিসার জুলকার নায়ন বলেন, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে দুজন পুলিশ ও ১০ জন আনসার মোতায়েন থাকবে। এছাড়া গোলযোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর স্ট্রাইকিং ফোর্স। এছাড়াও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি তাৎক্ষণিক বিচারের জন্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালন করবেন। ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই এ নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে।

ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিন প্রার্থী। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বতর্মান সংসদ সদস্য আবদুল হাই, দলের বিদ্রোহী স্বতন্ত্রপ্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক শৈলকুপা উপজেলা চেয়ারম্যান নায়েব আলী জোয়ারদার এবং জাতীয় পার্টি (মঞ্জু) মনোনীত প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা। এ তিন প্রার্থীর মধ্যে মূলত লড়াই হবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবদুল হাই ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী নায়েব আলী জোয়ারদারের মধ্যে। আবদুল হাই নৌকা, নায়েব আলী জোয়ারদার ফুটবল ও গোলাম মোস্তফা বাইসাইকেল প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে লড়ছেন। এ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৪৮ হাজার ৪৬৫ জন। ১১০টি ভোটকেন্দ্রে ৫১৮টি ভোটকক্ষে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ঝিনাইদহ-২ (সদর ও হরিণাকুণ্ডু) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিন প্রার্থী। এরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বতর্মান সংসদ সদস্য সফিকুল ইসলাম অপু, স্বতন্ত্রপ্রার্থী মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক নূরে আলম সিদ্দিকীর ছেলে তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি ও বিএনএফ মনোনীত প্রার্থী মোমিনুল ইসলাম। তবে মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও স্বতন্ত্রপ্রার্থীর মধ্যে। সফিকুল ইসলাম অপু নৌকা, তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি আনারস ও মোমিনুল ইসলাম টেলিভিশন প্রতীকে ভোট করছেন। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৩৪০ জন। ১৭৪টি ভোটকেন্দ্রে ৭৫৬টি ভোটকক্ষে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ঝিনাইদহ-৩ (কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলা) আসনে প্রার্থী তিনজন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নবী নেওয়াজ, স্বতন্ত্রপ্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বতর্মান সংসদ সদস্য সফিকুল আজম খান চঞ্চল ও জাতীয় পার্টি (এরশাদ) মনোনীত প্রার্থী কামরুজ্জামান স্বাধীন। তবে স্বতন্ত্রপ্রার্থী সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। নবী নেওয়াজ নৌকা, সফিকুল আজম খান চঞ্চল কলস ও কারুজ্জামান স্বাধীন লাঙল প্রতীকে ভোট করছেন। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ১৭ হাজার ৭৭০ জন। ১৪৭টি ভোটকেন্দ্রে ৬৫১টি ভোটকক্ষে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ ও সদরের একাংশ) আসনে প্রার্থী দুজন। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল আজিম আনার নৌকা প্রতীকে ও ওয়ার্কার্স পার্টির মনোনীত প্রার্থী মোস্তফা আলমগীর হাতুড়ি প্রতীকে ভোটযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। এ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৫২ হাজার ৬০৪ জন। ১১০টি ভোট কেন্দ্রের ৫০২টি ভোটকক্ষে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।