ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে সরকারি বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে আওয়ামী লীগ নেতার মার্কেট নির্মাণ : এলাকাবাসীর বাধা

ঝিনাইদহ অফিস/কালীগঞ্জ প্রতিনিধি: স্কুলের জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণ করতে সেখানে থাকা তিনটি টোং দোকান ভেঙে দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা বাজারের পাশে বালিয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ন্ত্রিত ওই টোং দোকানগুলো গত শুক্রবার সকালে ভেঙে দেয়া হয়। এরপর সেখানে পাঁকা দোকান নির্মাণ শুরু করলে এলাকাবাসীর বাধা দেয়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা রহমান জানান, তাদের স্কুলটি ১৯২১ সালে স্থাপিত। সে সময় স্থানীয় এক হিন্দু বৃদ্ধা ২৩ শতক জমি দান করেন। স্কুলটি সরকারি হওয়ার সময় আরো জমির প্রয়োজন হলে এলাকার লোকজন ৭৬ শতক জমি দেন। সিএস রেকর্ডের সময় ৭৬ শতক জমিই স্কুলের নামে রেকর্ড হয়েছে। তিনি আরো জানান, চলতি আরএস রেকর্ডের সময় মাঠ জরিপে ৭৬ শতক স্কুলের নামে রেকর্ড হয়েছে। কিন্তু চূড়ান্ত পর্চা প্রকাশের সময় দেখা যায় ৪ শতক জমি বিপুল কুমার নামের এক ব্যক্তির নামে রেকর্ড হয়েছে। এই বিপুল কুমারের ঠাকুরমা স্কুলের নামে ২৩ শতক জমি দান করেন। প্রধান শিক্ষক আরও জানান, এ সকল বিষয় তিনি লোক মারফত শুনে ভূমি অফিসে খবর নিয়েছেন। সেখান থেকে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। বর্তমানে রেকর্ড সংশোধনের মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। ঠিক সেই সময় জমিটি দখলের চেষ্টা করা হয়েছে। বিপুল কুমার নিজে দখলে যেতে না পেরে স্থানীয় ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক সাবেক মেম্বার আনোয়ার হোসেনে সহযোগিতা নেন। ওই আওয়ামী লীগ নেতাও অল্প মূল্যে জায়গাটি কিনে দখলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। স্কুল কর্তৃপক্ষকে কিছু না বলেই তিনি স্কুল নিয়ন্ত্রিত দোকানগুলো ভেঙে দিয়েছেন। বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, গত শুক্রবার সকালে হঠাৎ করে ওই স্থানে থাকা তিনটি দোকান ভেঙে দিয়েছেন। ওই স্থানে উসমান আলী, আব্দুর রহমান, মহির উদ্দিন, মনু মিয়া, জালাল উদ্দিন, দীলিপ কুমারের ৬টি দোকান ছিলো। যারা স্কুলে নিয়মিত ভাড়া দেন। এই ভাড়ার টাকা স্কুলের নানা উন্নয়ন কাজে ব্যবহার হয়। এ দোকানের মধ্যে তিনটি ভেঙে সেই স্থানে পাঁকা দোকান নির্মাণের চেষ্টা করা হয়। যাদের দোকান ভেঙে দিয়েছে তাদের একজন নাম প্রকাশ না করে জানান, তাদের কিছু না বলেই হঠাৎ করে ভেঙে দেয়া হয়েছে। দোকানে থাকা সমস্ত মালামাল নষ্ট করে দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি জায়গা কিনে দখলে গেছেন। ইতঃপূর্বে বিষয়টি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। শেষে উপজেলা চেয়ারম্যানের দপ্তরে বসার কথা ছিলো। সেই বসার পূর্বে নানা কথার কারণে তারা দখলে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে বর্তমানে তিনি কাজ বন্ধ রেখেছেন। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবিএম মাহাবুব হাসান জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।