ঝিনাইদহের কপোতাক্ষ নদের ভেতরে ব্যবসায়ী কর্তৃক পাকাঘর নির্মাণ : বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পানি প্রবাহ

 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় কপোতাক্ষ নদের ভেতরে স্থাপনা নির্মাণ করছেন এক ব্যবসায়ী। তার দাবি, কেনা জমিতে এ পাকাঘর নির্মিত হচ্ছে। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, জায়গাটি নদের। সেখানে স্থাপনা নির্মাণ করা হলে নদের পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে। কোটচাঁদপুর উপজেলা শহর-সংলগ্ন মহেশপুর উপজেলার ব্রিজঘাট এলাকায় এ স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, মহেশপুরের আজমপুর ইউনিয়নের সীমানা ঘেঁষে বয়ে গেছে কপোতাক্ষ নদ। নদের অপর প্রান্তে রয়েছে কোটচাঁদপুর শহর। ব্রিজঘাট নামের এ স্থানে একটি সেতু রয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সেতুর দক্ষিণে মহেশপুর সীমান্তে প্রায় ১০ মাস আগে একটি ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন মাহবুবুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ী। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। দ্রুতগতিতে ভবনের কাজ চলছিলো। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন কপোতাক্ষ নদের জায়গায় কেন ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে? দাবি তুলে এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন। তখন নির্মাণকাজটি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি আবার সেই কাজ শুরু করেছেন জনৈক ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান। ব্রিজঘাট এলাকার বাসিন্দা সুমন আহম্মদ বলেন, যেখানে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, বর্ষা মরসুমে সেখানে পানি থাকে। ভবন নির্মাণ করা হলে কপোতাক্ষ নদের পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে।

এলাকাবাসী বলছেন, কপোতাক্ষ নদের জায়গায় স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে তারা বিভিন্ন সরকারি দফতরে অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। বরং সরকারি কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশেই নদের জায়গা দখল হয়ে যাচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ রয়েছে। ওই কর্মকর্তারা টাকার বিনিময়ে নদের জায়গার কাগজপত্র তৈরি করে দিচ্ছেন। একটি চক্র সেই কাগজ দেখিয়ে ওই জমি বেচাকেনা করে আসছে। অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান বলেন, জমিটি জনৈক সিদ্দিকুর রহমান নামের এক ব্যক্তির নামে রেকর্ড করা আছে। তার কাছ থেকে আট শতক জমি কিনেছেন তিনি। সেই জমিতে ভবন নির্মাণ করছেন; কপোতাক্ষ নদের জায়গায় নয়। মাহবুবুর আরও বলেন, তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও হয়েছিলো। কিন্তু পুলিশ তদন্ত করে অনিয়মের কিছু পায়নি। মামলাটি করেছিলেন স্থানীয় আজমপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা। পুলিশ তদন্ত করে মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছে।

মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশফাকুর রহমান বলেন, পুলিশের তদন্তের কারণে মামলাটি নথিজাত হয়েছে। তবে উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে আপিল করবে। তিনি বলেন, যে স্থানে ভবনটি হচ্ছে, সেটা যে কপোতাক্ষ নদের মধ্যে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ভবন নির্মাণে যুক্ত ব্যক্তিরা জমির কিছু কাগজপত্র দেখিয়েছেন। কাগজপত্র সঠিকও হতে পারে। ব্যক্তিমালিকানার জমি ভেঙে নদের মধ্যে চলে যেতেও পারে। সেটা হলেও আইনানুযায়ী জমিটি এখন আর ব্যক্তি মালিকানাধীন নয়।