জয়নগর চেকপোস্টে মধু আটক : ভূয়া রশিদের ২৯ ভ্রমণকারী বিপাকে

জাল ভ্রমণকরের রশিদ ছাপিয়ে পকেট ভারি করছে প্রতারকচক্র : সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব
দর্শনা অফিস: বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াতকারী যাত্রী সংখ্যা দিনদিন ব্যাপকভাবে বাড়ছে। চিকিৎসা, ভ্রমণ ও ব্যবসাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রতিদিন দেশের কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে ট্রেন, বিমান ও স্থলপথে যাতায়াত করে থাকে বহু যাত্রী। ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াত বৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে অসৎ পথ অবলম্বন করেছে প্রতারকচক্রের সদস্যরা। রাজশাহীর একটি প্রতারকচক্র সরকারের রাজস্ব আদায়ের রশিদ বহি ছাপিয়ে এ প্রতারণা করছে। প্রতারকচক্রের এক সদস্যকে দর্শনা চেকপোস্টে আটক করা হলেও বাকিরা রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ২৯ জন ভারতগামী পাসপোর্টধারী যাত্রীকে নিয়ে যাওয়ার পথেই অভিযুক্ত প্রতারক মধু মুন্সি দর্শনা জয়নগর চেকপোস্টে পড়লো গ্যাড়াকলে। অবশেষে আটককৃত মধুর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে মামলা। প্রতারকচক্র কর্তৃক রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও পাবনা জেলার পাসপোর্টধারী যাত্রীদের কাছে জাল ভ্রমণ করের রশিদ বিক্রির সংবাদ পায় দর্শনা জয়নগর কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। এ সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই নিখুতভাবে ভ্রমণকরের রশিদ যাচাই-বাচাই করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। দিনভর কোনোপ্রকার জাল রশিদের সন্ধান না মিললেও বিকেল ৪টার দিকে ২৯ যাত্রী নিয়ে ভারতে প্রবেশ করার জন্য ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শেষ করার চেষ্টা করে পাবনা জেলার আমিনপুর সুজানগর উপজেলার আহম্মদপুর ইউনিয়নের দোলায়পাবনা চরগোবিন্দপুর গ্রামের সৈয়দ আলী মুন্সির ছেলে মধু মুন্সি। এ সময় কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের বিচক্ষণতায় ভূয়া রশিদ শনাক্ত করা হয়। আটক করা হয় মধু মুন্সিকে। প্রতারিতরা জানিয়েছেন, প্রতি বছরের মতো আমরা ভারতের বিহার প্রদেশের কুনিয়া জেলার রওশনগঞ্জে হযরত আলী (আ.), কাদেরী শামসুল, কাদেরী হযরত শাহ, সৈয়দ রশিদ আলী, মোর্শেদ আলী, আল কাদেরী আল হাসান, আল হুসাইন, আল বাগদাদির ওরশ শরীফে যোগ দিয়ে থাকি। ভারতে যাওয়ার উদ্দেশে গত ২৫ মার্চ মধু মুন্সির মাধ্যমে প্রায় দেড়শ জনের ভ্রমণ কর সংগ্রহ করেছি। সরকারের নির্ধারিত ৫শ’ টাকায় এ ভ্রমণ কর বিক্রি করেছে মধু মুন্সি। এ ঘটনায় আটককৃত মধু মুন্সি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেছেন, জনতা ব্যাংকের রাজশাহী করপোরেট শাখার স্টাফ জনৈক সোহেলের মাধ্যমে প্রতিটি ভ্রমণকর ৪৪০ টাকা মূল্যে সংগ্রহ করেছি। জাল ভ্রমণ করের কারণে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় ২৯ যাত্রীকে। পরে দর্শনা সোনালী ব্যাংক থেকে পুনরায় ভ্রমণকর সংগ্রহ করে ২৯ যাত্রী সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ভারতে ওরশের উদ্দেশে রওনা হলেও আটক করা হয় মধু মুন্সিকে। এ ঘটনায় কাস্টমসের পক্ষ থেকে খায়রুল বাসার বাদি হয়ে মধু মুন্সির বিরুদ্ধে গতকাল রাতে দামুড়হুদা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় দর্শনা কাস্টমস সার্কেলের সুপারিনটেনডেন্ট সঞ্জিত আচার্য্য ও দর্শনা জয়নগর ইমিগ্রেশন ইনচার্জ এসআই এসএম আব্দুল আলীম বলেছেন, জাল ভ্রমণকর সনাক্তকরণের লক্ষ্যে আমরা সতর্ক ও বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।