জেলেজাল ও নৌকা ভাড়া করে ঘোলদাড়ি গড়িয়ার বিলে অবৈধভাবে মাছ ধরার অভিযোগ

 

 

ভ্রাম্যমাণ আদালতে পাইকপাড়া বিল্লালনান্নুসহদু জেলেকে জরিমানা

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: অবৈধভাবে সরকারি বিলের মাছ ধরার অপরাধে আলমডাঙ্গার ঘোলদাড়ি পাইকপাড়ার বিলখেকো বিল্লাল ও নান্নুকে এবং দু জেলেকে উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। জেলে, জাল ও নৌকা ভাড়া করে আলমডাঙ্গা উপজেলার সরকারি গড়িয়ার বিলের মাছ অবৈধভাবে ধরে নেয়ার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে বিল জবরদখলকারী বিল্লাল পালিয়ে যায়। সে সময় প্রশাসনের নির্দেশে পুলিশ জাল ও ধৃত মাছ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

জানাগেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার ঘোলদাড়ি এলাকায় সরকারি খাসজমিতে অবস্থিত গড়িয়ার বিল ইতঃপূর্বে মুক্তিযোদ্ধারা লিজ নিয়ে মাছচাষ করতেন। এলাকার প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তির প্ররোচণায় এলাকার কিছু মানুষ রাতের আঁধারে ওই বিলের মাছ চুরি করে মেরে নিতো।অব্যাহতভাবে চুরির ফলে লোকসান গুনতে গুনতে এক সময় মুক্তিযোদ্ধারা ওই বিল ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। পরে পাইকপাড়া গ্রামের মৃত আকবর আলী মালিথার ছেলে বিলখেকো বিল্লাল আলী মালিথা গড়িয়ার বিল কব্জা করে। উপজেলা প্রশাসনের সাথে বিল লিজ নেয়ার ডিড করলেও লিজ মানি পরিশোধ করেনি সে। অবৈধভাবে লিজের দাবিতে ওই বিলে মাছচাষ করে আসছিলো।

উপজেলা প্রশাসনসূত্রে জানাগেছে, পর পর ৩ বছর সে লিজ মানির টাকা জমা না দিয়ে অবৈধভাবে বিল দখল করে রেখেছিলো। তার নিকট বিল লিজ বাবদ সরকারের ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বার বার নোটিশ দেয়া সত্ত্বেও লিজ মানি পরিশোধ না করায় এ বছর উপজেলা প্রশাসন গড়িয়ার বিলটি নিজ আয়ত্বে উন্মুক্ত রেখেছে। কিন্তু প্রভাব খাটিয়ে প্রতারক বিলখেকো বিল্লাল অবৈধভাবে মাছ মেরে আসছিলো। গতকাল রোববার সে বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৬ জন জেলে, জাল ও ৪টি নৌকা ভাড়া করে মাছ ধরা শুরু করে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন জানতে পারলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে পুলিশ গড়িয়ার বিলে অভিযান চালায়। ওই সময় বিলখেকো বিল্লালসহ সকলে পালিয়ে গেলেও একটি ব্যাড় জালসহ দু জেলে ও বিল্লালের বন্ধু নান্নুকে আটক করে আলমডাঙ্গা উপজেলা চত্বরে নেয়া হয়। সেখানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল আলম এক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। দু জেলে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার শুড়া গ্রামের মৃত নগেন্দ্রনাথ হালদারের ছেলে আকালে হালদার ও আলমডাঙ্গা উপজেলার কায়েতপাড়া গ্রামের মৃত বদর উদ্দীনের ছেলে আব্দুল মজিদকে আড়াই হাজার করে মোট ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া বিলখোর বিল্লালকে তার অনুপস্থিতিতে ও তার বন্ধু একই গ্রামের লুতফর রহমানের ছেলে নান্নুকে আড়াই হাজার করে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। এরপর নান্নুসহ দু জেলেকে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। বিকেলে জরিমানার টাকা পরিশোধ করা হলে নান্নুসহ ২ জেলে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফেরেন।

এদিকেউদ্ধারকৃত মাছ নিলামের মাধ্যমে ২ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। ওই টাকাও রাজস্বখাতে জমা করে নেয়া হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার(ভূমি) মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামান, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মঈনুল ইসলাম, উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার, খাসকররা ক্যাম্প ইনচার্জ আব্দুস সালামসহ সঙ্গীয় ফোর্স।