জীবননগর মেদিনীপুরে চাচাতো ভাইদের হাতে ভাই খুন : গৃহবধূ গ্রেফতার

 

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলার মেদিনীপুর গ্রামে গতকাল রোববার  জমিজমা নিয়ে বিরোধে চাচাতো ভাইদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন আব্দুল আজিজ (৪৫)। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে পাঠায়। আজিজ ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ঘুগরী গ্রামের মৃত ইজ্জ্বত আলী মণ্ডলের ছেলে। এ হত্যাকাণ্ডের পর দুজন সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে পালিয়ে গেছে বলে পুলিশ ধারণা করছে। রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে খুনের দায়ে অভিযুক্ত এবং ঘটনার সাথে জড়িত হাসানের স্ত্রী নাসিমাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্ত অন্যদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযানে রয়েছে বলে থানাসূত্রে জানা গেছে।

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাকিব খান জানান, উপজেলার মেদিনীপুর গ্রামের মৃত সুন্নত আলী মণ্ডল ও মৃত ইজ্জ্বত আলী মণ্ডল দু ভাই। জমি নিয়ে বিরোধে বড় ভাইয়ের হুমকির মুখে প্রায় ২০ বছর আগে মৃত ইজ্জ্বত আলী তার পরিবার নিয়ে গ্রাম ছাড়ে এবং ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা জিপান্তাপাড়া ইউনিয়নের ঘুগরী গ্রামে গিয়ে বসবাস শুরু করেন। ইজ্জ্বত আলীর ৬ বিঘা জমি বর্গা নেন সুন্নত আলীর ছেলেরা। এ জমি দীর্ঘদিন ধরে বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করছেন সুন্নত আলীর ছেলেরা। কিন্তু হঠাত করে গত বছর থেকে জমির বর্গার টাকা দেয়া বন্ধ করেন তারা। এ অবস্থায় ইজ্জ্বত আলীর ছেলেরা বর্গার টাকা অথবা জমি ফেরতের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। গতকাল এ বিষয়ে জানার জন্য মৃত ইজ্জ্বত আলীর ছেলে আব্দুল আজিজ মেদিনীপুর গ্রামে এলে চাচাতো ভাই হাসান আলী, আব্দুল মাবুদ, মাজেদ, হাসানের ছেলে আকরাম ও মাবুদের ছেলে আব্বাছ আলীসহ অন্যরা দা-হেঁসো নিয়ে আজিজের ওপর হামলা করে। এ সময় তারা আজিজকে বেপরোয়াভাবে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। মুমূর্ষু অবস্থায় আজিজকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। হামলাকারী তার চাচাতো ভাই ও ভাতিজারা আহত হওয়ার মিথ্যা ভান করে হাসাপাতালে এসে ভর্তি হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজিজ মারা গেলে তাৎক্ষণিকভাবে তারা হাসাপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।

একটি গোয়েন্দা সংস্থাসূত্র জানায়, এ হত্যাকাণ্ড ঘটনার পর হাসানের ছেলে আকরাম ও মাবুদের ছেলে আব্বাছ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পাড়ি জমিয়েছে বলে তাদের নিকট খবর এসেছে। বিষয়টি নিশ্চিত হতে তারা তদন্তে নেমেছে বলে জানান। এদিকে অন্যরা যাত ভারতে পালাতে না পারে তার জন্য পুলিশ সীমান্ত এলাকায় রেডএলার্ট জারি করেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা যায়, ওসি আব্দুর রাকিব খান রাতে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে মেদিনীপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে অভিযুক্ত হাসানের স্ত্রী নাসিমা খাতুনকে গ্রেফতার করেছে। একই সময়ে পুলিশ অন্যাদের গ্রেফতার করতে সুটিয়া গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে। কিন্তু কাউকে পায়নি পুলিশ। ওসি জানান, অন্যান্য খুনিদের গ্রেফতারে তিনিসহ পুলিশ বাহিনী অভিযানে রয়েছে। অভিযুক্ত খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার করতে সমর্থ হবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *