জীবননগরে সমকালের সাংবাদিক আবু সায়েম হত্যাকাণ্ড : মানববন্ধন হতে দ্রুত বিচার ও সহধর্মিণীর চাকরি দাবি

 

জীবননগর ব্যুরো: দু বছরেও সাংবাদিক ও জাসদ নেতা আবু সায়েম হত্যার বিচার পায়নি তার পরিবার। সাংবাদিক সায়েম হত্যার প্রতিবাদে ও দ্রুত বিচারের দাবিতে গতকাল শনিবার জীবননগরে মানববন্ধন ও প্রতিবাদসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা জাসদের উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।  এর পূর্বে  সকালে জাসদ কার্যালয়ে নিহত সাংবাদিক আবু সায়েমের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে জাসদ ও কমিউিনিস্ট পার্টিসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। প্রতিবাদসভা হতে দ্রুত এ হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ করার দাবি করেন বক্তারা। একই সাথে সিআইডির দাখিলকৃত চার্জশিট প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় নিরপেক্ষ তদন্ত করে এ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য নায়কদের মুখোশ উন্মোচনের দাবি করা হয়। অপর একজন বক্তা বলেন, সাংবাদিক আবু সায়েম উপজেলা লোকমোর্চার একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী ছিলেন। লোকমোর্চা ছোটখাটো বিষয় নিয়েও আন্দোলন সংগ্রাম করতেন। কিন্তু সায়েম খুন হলেও আজ পর্যন্ত লোকমোর্চা কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করেনি। যা আমাদেরকে বিস্মিত করেছে। বক্তারা বলেন, সংসারের একমাত্র উপার্যনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দু শিশু সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করা সাংবাদিক আবু সায়েমের স্ত্রী আফরোজা খাতুন। সন্তানদের মানুষ করতে তার একটি চাকরির ব্যবস্থা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি কামনা করা হয়। দৈনিক সমকালের জীবননগর উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু সায়েম তার পেয়ারাতলার বাড়িতে ২০১৫ সালের ৭ জুলাই আঁততায়ীর উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে মারাত্মকভাবে আহত হন। পরেরদিন ঢাকা বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

ঘটনার রাতেই এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত দর্শনা ঈশ্বরচন্দ্রপুরের রাজিব সরকারকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে প্রতিবেশীরা। পরবর্তীতে রাজিব সরকারের স্বীকারোক্তিতে পুলিশ কুষ্টিয়া দৌলতপুরের সামাজুল ইসলাম ও জীবননগর উপজেলার সিংনগরের সাইফুল ইসলাম শিপলুকে গ্রেফতার করে। তারা এখন জামিনে মুক্ত। এদিকে পুলিশের নিকট থেকে এ মামলা ন্যস্ত করা হয় সিআইডির ওপর। সিআইডি দীর্ঘ তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে। অচিরেই এ মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

বিকেলে বাসস্ট্যান্ডে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন শেষে উপজেলা জাসদের সভাপতি আব্দুর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদসভায় বক্তব্য রাখেন জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, উপজেলা জাসদের সভাপতি আব্দুর রশিদ, উপজেলা কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক রজিবুল ইসলাম, প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক এমআর বাবু, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর আতিয়ার রহমান, দর্শনা সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আওয়াল হোসেন, জীবননগর মোটর মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেহের আলী, সাংবাদিক শেখ শহিদুল ইসলাম, নিলুফার ইয়াসমিন রাণী ও মারুফ মালেক প্রমুখ। নিহত সাংবাদিক আবু সায়েমের সহধর্মিণী আফরোজা খাতুন তার অবুঝ দু শিশু সন্তান আবু জুবায়ের রুদ্র (৮) ও আবু জাকারিয়া রনকসহ (৬) পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।