জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেই প্রতিপক্ষকে কুপিয়ে জখম

আলমডাঙ্গার খুদিয়াখালীতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে একই পরিবারের ৫ জন আহত

স্টাফ রির্পোটার: আলমডাঙ্গার জেহালা ইউনিয়নের খুদিয়াখালী গ্রামে প্রতিপক্ষের ধারালো দা ও বাটাম পেটাই একই পরিবারের ৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিছুদিন আগে জমির গাছ নিয়ে দু পক্ষের মধ্যে হামলা-মামলার ঘটনা ঘটে। দু পক্ষ গ্রেফতার হয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে বন্দি থাকে। গতকাল একটি পক্ষ জেল থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে প্রতিপক্ষের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে একই পরিবারের ৫ জনকে কুপিয়ে আহত করে।
জানা গেছে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গার মুন্সিগঞ্জের খুদিয়াখালী গ্রামের মৃত রমজান কাজীর ছেলে মইনাল তার ভগ্নিপতি চুয়াডাঙ্গা নূরনগর কলোনির খোকনের কাছে ৫টি কাঁঠাল গাছ বিক্রি করেন। খোকন ৫টি গাছের বদলে ৮টি গাছ কাটেন। এ নিয়ে মইনালের সেজ ভাইয়ের ছেলে কলম বাধা দিতে গেলে খোকনের স্ত্রী জাহানারা ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে কলমকে মারাত্মক জখম করেন। এছাড়া কয়েজনের নামে বাড়ি ঘর ভাঙচুর লুটপাটসহ নারীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। দু পক্ষ থানা ও কোর্টে মামলা দায়ের করে।
গতকাল খুদিয়াখালী গ্রামের ফজলুর ছেলে তৌহিদুল জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফেরেন। বাড়ি ফিরে লাঠি হাতে তার ভাই, পিতা ও চাচাতো ভাইদের নিয়ে প্রতিপক্ষকে খুঁজতে থাকেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মইনালের ছেলে ইয়ামিন (১৫) চুয়াডাঙ্গা থেকে ফুটবল খেলা দেখে বাড়ি ফিরলে তাকে ধরে বেদম মারধর করতে থাকে তারা। এ সময় ময়নালের স্ত্রী আকলিমা, ছেলে আলামিন, মেয়ে সোনালীসহ আলামিনের স্ত্রী ইরানী বাধা দিলে তাকেও বেদম মারধর করে। গ্রামবাসী তাদের মারাত্মক জখম অবস্থায় উদ্বার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। ইয়ামিন এবং আলামিন ও তার স্ত্রী ইরানীর অবস্থা গুরুতর বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।
আলামিন অভিযোগ করে জানায়, ছোট ভাইকে মারতে দেখে এগিয়ে গেলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মৃত রমজান কাজীর ছেলে ফজলু ও আইজাল, আইজালের ছেলে আব্দুল, ফজলুর স্ত্রী আমিরন, ছেলে তৌহিদুল, ফরজ, মেয়ে আইসা, আসানুর এবং জামাই সানোয়ার তাদের ধারালো দা, শাবল, লোহার রড ও বাটাম দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করেন। এছাড়া আলামিন আরও অভিযোগ করে জানায়, চুয়াডাঙ্গা নূরনগর কলোনির খোকনের স্ত্রী জাহানারাকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হলেও মুন্সিগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ এসআই মহাসিন তাকে আটক করে ছেড়ে দেয়। আজকের ঘটনা জাহানারার নির্দেশে হয়েছে। সে জেলে আটক থাকলে আজকের ঘটনা ঘটতো না।
প্রতক্ষদর্শীসূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন ধরে গ্রামের ৪ ভাই এবং তার ছেলেদের মধ্যে হামলা ও মামলার ঘটনা ঘটে চলেছে। গ্রামের প্রতিটা পরিবারের সাথে রয়েছে তাদের বিরোধ। ফজলু, আইজাল ও ময়নাল বিনা কারণে গ্রামের লোকজনদের গালাগালি করেন। প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করেন। এই কারণে ওদের কোনো ঘটনাতে কেউ এগিয়ে আসে না। তবে আলামিন ও তার পরিবারের লোকজনকে যেভাবে মারধর করা হয়েছে সেটা কোনো সুস্থ মানুষের কাজ না বলে গ্রামবাসী মন্তব্য করেছে। এছাড়া ফজলুর লাঠির আঘাতে তার স্ত্রী আমিরন আহত হয় বলে গ্রামসূত্রে জানা গেছে। সংবাদ পেয়ে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ ও মুন্সিগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।