জামাইয়ের নির্যাতন : ১০ মাসের মাথায় মারা গেলেন শাশুড়ি ফাতু

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা গাড়াবাড়িয়ার ফাতেমা খাতুন ওরফে ফাতু (৪০) মারা গেছেন। গতকাল রোববার বেলা ২টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ১০ মাস আগে তাকে তার মেয়ের স্বামী হাবলুসহ কয়েকজন দলেচটকে জখম করে। সেই থেকে আর সুস্থ হননি তিনি। মেয়ে ববিতার এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ গতরাতে লাশ উদ্ধার করেছে। আজ সোমবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে ময়নাতদন্ত করা হবে।

ববিতা অভিযোগ করে বলেছে, স্বামী একই গ্রামের হাবলু তার প্রবাসী ভাইয়ের স্ত্রীর সাথে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলে। এর প্রতিবাদ করায় আমার মা ও আমাকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর দলেচটকে গুরুতর আহত করে। মা-মেয়ে দুজনকেই চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ফাতেমা খাতুন ফাতুর অবস্থা অবনতির দিকে গেলে রাজশাহীতে নিয়েও চিকিৎসা দেয়া হয়। অর্থাভাবে সেখানে রাখতে না পেরে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। বাড়িতেই পড়ে থেকে শেষ পর্যন্ত মারা গেছেন। পেটের ওপর পা তুলে দলেচটকে আহত করার কারণে রক্তক্ষরণে সেই যে পড়ো হলো, আর উঠলো না। এ অভিযোগ করতে গিয়ে ববিতা কান্নায় ভেঙে পড়ে। বলে, টাকার অভাবে চিকিৎসাও ঠিকমতো করাতে পরিনি। আমার মাকে যারা হত্যা করেছে তাদের কাউকে ছাড়বো না।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের গাড়াবাড়িয়া বাগানপাড়ার আক্কাস আলীর মেয়ে ববিতার সাথে একই গ্রামের মৃত সদর আলীর ছেলে হাবলুর বিয়ে হয়। সংসার করার এক পর্যায়ে দাম্পত্য কলহ দানা বাধে। ববিতার অভিযোগ, স্বামী হাবলুর ভাই মালয়েশিয়া গেলে, তার স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে। দেখে প্রতিবাদ করতেই আমাকে তাড়িয়ে দেয়। ১৭ সেপ্টেম্বর আমাকে ও আমার মাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে। এর বিচার চেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় হাবলু, কালু, সবুজ, মনছের, আজিজুল, আল আমিনসহ ১১ জনকে আসামি করে মামলা করি। সে মামলা চলছে। এরই মাঝে মারা গেলো মা।

বেলা ২টার দিকে ফাতু মারা গেলে ববিতা হত্যার অভিযোগ তোলে। গ্রামের কেউ কেউ দাবি করে, সেই মারের জন্য নয়, জন্ডিসসহ অন্য রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এ দাবি করে লাশ দাফনের জন্য কৌশলে চাপ দিতে থাকে। ববিতা থাকে অনড়। শেষ পর্যন্ত খবর পৌঁছায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায়। থানার এসআই পান্নু সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গতরাত ১০টার দিকে লাশ উদ্ধার করেন। আজ সোমবার হাসপাতালমর্গে ময়নাতদন্ত করা হবে। পুলিশ বলেছে, অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করা হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানার জন্যই ময়নাতদন্ত করা হবে।