জাবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে গোলাগুলি

স্টাফ রিপোর্টার: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ভিসি ফারজানা ইসলামের নিয়োগ পাওয়ার দিনই ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলি হয়েছে। এতে একজন গুলিবিদ্ধসহ ১৫জন আহত হন। চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন সম্ভব নয় অভিযোগ করে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মুজিবুর রহমান পদত্যাগ করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন গতকাল রোববার দুপুরের পর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুর রহমান জনি ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহমেদের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ বাধে। ঘণ্টাব্যাপি সংঘর্ষের সময় অন্তত পাঁচ রাউন্ড গুলির শব্দ পাওয়া যায়। শিক্ষার্থীরা জানায়, ভর্তি পরীক্ষার মধ্যে ক্যাম্পাসে বসা বিভিন্ন অস্থায়ী দোকানে চাঁদা দাবি করা নিয়ে বেলা আড়াইটার দিকে শহীদ মিনারে ছাত্রলীগের সালাম-বরকত হলের কর্মীদের সাথে মীর মশাররফ হোসেন হলের কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ সম্পাদক রাজীব থাকেন সালাম-বরকত হলে। অন্যদিকে মীর মশাররফ হোসেন হল নিয়ন্ত্রণ করেন সভাপতি জনির সমর্থকরা।

ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার পর দুপুর সাড়ে ৩টায় রাজীবের নেতৃত্বে সালাম-বরকত হলের ছাত্রলীগ কর্মীরা দল বেঁধে এমএইচ হলের দিকে যাত্রা করে। ১৫ মিনিটের মধ্যে তারা এমএইচ হলের সামনে পৌঁছুলে দু পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। সালাম-বরকত হলের ছাত্রলীগ কর্মীরা এমএইচ হলের ভেতরের দিকে ইট ছুড়তে থাকে। অন্যদিকে এমএইচ হলের ভেতর থেকে জনির সমর্থকরা বাইরে অবস্থানরতদের দিকে ইট-কাঠ ছুড়তে থাকে। ওই সময় হলের সামনে থাকা পাঁচটি দোকানও ভাঙচুর করা হয়।

দ্বিতীয় দফায় আধা ঘণ্টা পর সাভার থানা থেকে আরো পুলিশ গেলে এএসপি রাসেল শেখের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ছররা গুলি ছুড়ে দু পক্ষকে হঁটিয়ে দেয়। পৌনে ৫টার দিকে রাজীব নেতৃত্বাধীন সালাম-বরকত হলের কর্মীরা এমএইচ হলের সামনে থেকে সরে এলে সংঘর্ষ স্থিমিত হয়ে আসে। দু পক্ষের সংঘর্ষ চলার মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় ১৫জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়, তাদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মী শাহরিয়ার নেহাল গুলিবিদ্ধ হন। তিনি ৪১তম ব্যাচের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। তার পায়ে গুলি লেগেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। সংঘর্ষে আহত ১৫জনকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার এবং এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অনেকের হাত, পা, মাথায় ইটের আঘাতের জখম দেখা গেছে।

এদিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন সম্ভব নয় এমন অভিযোগ করে পদত্যাগ করেছেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, সংঘর্ষের সময় আমি সেখানে উপস্থিত থাকলেও উপাচার্য ও তার অনুসারী শিক্ষকরা ফুল বিনিময়ে ব্যস্ত ছিলেন। গোলাগুলির সময় কেউই সেখানে উপস্থিত হতে পারেননি। এ পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালন আমার পক্ষে সম্ভব নয়।