জরুরি অবস্থা জারি করতে পারে সেনাবাহিনী

স্টাফ রিপোর্টার: বিষাক্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। এর পরিণাম হতে পারে ভয়াবহ। এরই মধ্যে এদেশের গণতন্ত্র ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। এরপরও যদি পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ থাকে তাহলে জাতীয় স্থিতিশীলতার নামে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস ৪ ডিসেম্বর এক প্রতিবেদনে এসব কথা লিখেছে। ‘টু লিডারস এনমিটি স্টোকস কনসার্ন ওভার ভোট ইন ফ্র্যাজাইল ডেমোক্রেসি’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি লিখেছেন জিম ইয়ার্ডলি। এ শিরোনামের অর্থ: ভঙুর গণতন্ত্রে দু নেত্রীর ঘোর বিরোধিতায় ভোট নিয়ে উদ্বেগ। এতে তিনি লিখেছেন, যদি এ অবস্থায় ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদের মধ্যে সমঝোতা না হয় এবং বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া নির্বাচন বর্জন করেন তাহলে এটা সুনির্দিষ্ট যে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে বিজয়ী হবে। এর ফলকে জনগণ বৈধতা দেবে কি-না তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। তবে এ  বৈধতা নির্ভর করে কী পরিমাণ ভোট পড়েছে তার ওপর। যদি অর্ধেকের বেশি ভোটার ভোট দেন তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের সমর্থন পেয়েছেন বলে জোর দাবি করতে পারবেন। কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, অনেক কম ভোটার ভোট দিতে পারেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, তাতে একটি রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি হবে। বিরোধীদল এতে নতুন নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে নামবে। এসবই সেনাবাহিনীর জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার ক্ষেত্র সৃষ্টি করতে পারে। জিম ইয়ার্ডলি লিখেছেন, ওই টেলিফোনে দু নেত্রীর মধ্যে তিক্ত কথোপকথন হয়, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। ওই সংলাপে সঙ্কটের কোনো সমাধান হয় নি। বরং এখন রক্তপাত ডেকে এনেছে। দেশজুড়ে প্রতিদিন সহিংসতা হচ্ছে।  দু নেত্রীর মধ্যে বিষাক্ত দ্বন্দ্ব একটি ভয়াবহ অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছে। বেড়েছে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের উদ্বেগ। কারণ, পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে দু নেত্রীই তিক্ত খেলায় মেতেছেন। আগামী নির্বাচন কীভাবে হবে তা নিয়ে দু নেত্রী তা নিয়ে সমঝোতায় আসাই হলো এবারের ইস্যু। প্রায় দু বছর ধরে খালেদা জিয়া ও বিরোধীদলীয় নেতারা দাবি করে আসছেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে নির্বাচনের কিছুদিন আগে পদত্যাগ করতে হবে, যাতে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারে। এ পদ্ধতিতে বাংলাদেশে বেশ কয়েকবার নির্বাচন হয়েছে। খালেদা জিয়া বলেছেন, যদি তার দাবি মেনে নেয়া না হয় তাহলে তার দল অংশ নেবে না নির্বাচনে। কিন্তু তার দাবি মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচন করার জন্য যথেষ্ট সক্ষম। তিনি সংবিধান মেনে চলবেন। এখন সব কিছু এখানেই আটকে আছে। দেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও তা বেড়ে যাওয়ায়ও দু নেত্রীর কেউ-ই যার যার অবস্থান থেকে নড়তে নারাজ। বাংলাদেশি এক সিনিয়র কূটনীতিক ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক বলেছেন, সাধারণ দাবি হলো দু নেত্রীকে সমঝোতার মাধ্যমে কাজ করতে হবে। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কড়া মূল্য দিচ্ছে।