চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে এক ষোড়শীকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে এক ষোড়শীকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার আরামপাড়ার জমসেরের স্ত্রী পরিছন। পরিছন হাসপাতালে নিয়ে পড়েছেন বিপদে। তার চোখে মুখে রয়েছে দুশ্চিন্তার ছাপ। নিজের টাকায় ওষুধ কিনে ষোড়শী কন্যাকে চিকিৎসা করাচ্ছেন।

পরিজন জানান বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মোবাইলফোনে ফ্লেক্সিলোড করতে চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনে যাই। এ সময় দেখি অচেতন অবস্থায় এক ষোড়শী কন্যাকে কয়েকজন হাসপাতালে নেয়ার জন্য অটোতে তুলছে। কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার তাকে জোর করে অটোতে উঠিয়ে দেয়। তারপর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অচেতন ষোড়শী কন্যার হাসপাতালে ভর্তির প্রায় ঘণ্টা দুয়েক পরে তার জ্ঞান ফেরে। ষোড়শী কন্যা তার নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে বলে নাম লিজা। পিতার নাম ওজিউল্লাহ। বাড়ি কখনো বলছে যশোর বারান্দীপাড়া, কখনো যশোর বাহাদুরপুর, কখনো খুলনা মানিকতলা আবার কখনো যশোর খেজুরা। যশোর ইত্তে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। তার কথাবার্তায় রয়েছে অসঙ্গতি। লিজা আরো জানায়, ‘আমার পিতার বউ দুইটা। আমার মা বছর দুয়েক আগে মারা যাওয়ার পর আমার পিতা দ্বিতীয় বউ নিয়ে ঢাকায় থাকেন। তারপর থেকে আমি আমার চাচাতো ভাই মনিরুলের কাছে থাকি। মনিরুল গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। তারপর থেকে আরেক চাচাতো ভাই রানার কাছে থাকি এবং তার কাছে থেকেই পড়াশোনা করি। তিনিই আমার সম্পূর্ণ খরচ বহন করেন। পিতাও আমাকে কম-বেশি খরচ-খরচা দেন। সম্প্রতি আমার পিতা আমার বিয়ের জন্য একটা ছেলে ঠিক করে। কিন্তু সেই ছেলে আমার পছন্দ নয়। তাই গত বুধবার সকালে আমার চাচাতো ভাই রানার বাড়ি থেকে বের হয়ে আরেক চাচাতো ভাই মনিরুলের নিকট যাই। সেখানেও তারা বিয়ের জন্য চাপ দেয়। সেখান থেকে গতকাল শুক্রবার বেরিয়ে যশোর স্টেশনে আসি। তারপর ট্রেনে উঠি অজানা উদ্দেশে। দুই স্টেশন পর কয়েকটি ছেলে ট্রেনে উঠে আমার সাথে ভাব জমাতে যায়। তারপর কী হয়েছে আর বলতে পারবো না। এখন দেখি আমি হাসপাতালে। আমার কাছে ৩০ হাজার টাকা, একটি মোবাইলফোন ও জামাকাপড়ের ব্যাগ ছিলো। টাকা ও মোবাইলফোন পাচ্ছি না। শুধু কাপড়ের ব্যাগ আছে।’ টাকা কোথায় পেয়েছে এমন প্রশ্নে জবাবে সে জানায়, ‘আমার বাবা যে টাকা দিতো সেগুলো আমি জমিয়ে রাখতাম এবং টিউশনি করতাম যে টাকা হতো সেগুলোও জমিয়ে রাখতাম।’ তার চাচাতো ভাই মনিরুলের সাথে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার চাচাতো বোন ঠিক আছে কিন্তু আমি কিছু বলতে পারবো না। সে আমার আরেক চাচাতো ভাইয়ের কাছে থাকে। কিন্তু পরিছন জানান আমার সাথে মনিরুলের কথা হলে তিনি বলেন তার কাছেই থাকতো। সম্পর্কে তার চাচাতো বোন। সে এখন কুয়াকাটায় আছে। কাল (আজ) চুয়াডাঙ্গা এসে নিয়ে যাবে।