চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ সারাদেশে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট গায়েবানা জানাজা

নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায়ে নেতাকর্মীদের চূড়ান্ত আন্দোলনের শপথ

 

মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ সারাদেশে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট গায়েবানা জানাজা কর্মসূচি পালন করেছে। গতকাল বিকেলে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় গত ২৭-২৯ অক্টোবরের ৬০ ঘণ্টা হরতালে সারাদেশে পুলিশ-ৱ্যাব ও সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত নেতাকর্মীদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামানা করা হয়। একই সাথে আন্দোলনের মাধ্যমে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য করার শপথ নেন নেতাকর্মীরা।

গতকাল শুক্রবার বাদ আছর ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ১৮ দলের উদ্যোগে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজার আগে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায়ে নেতাকর্মীদের চূড়ান্ত আন্দোলনের শপথ নিতে বলেছেন। ফখরুল বলেন, হরতাল চলাকালে স্বৈরাচারী সরকার ২০ জন গণতন্ত্রকামী মানুষকে হত্যা করেছে। এসব শহীদের রক্তের ওপর দিয়ে আমাদের শপথ গ্রহণ করতে হবে। আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাবো। গণতন্ত্রের স্বার্থে নির্দলীয় সরকারের ব্যবস্থা করতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ডাকে সাড়া দিয়ে সরকারকে বাধ্য করতে হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে। মির্জা ফখরুল বলেন, বিজয় অর্জিত হলেই শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে। ( …. পাতায় দেখুন)

১৮ দলীয় জোটের  আহ্বানে গত ৬০ ঘণ্টার হরতালকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা দেশব্যাপি বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের হত্যা করে। নিহত নেতাকর্মী আত্মার শান্তি কামনায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির উদ্যোগে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে জানাজায় উপস্থিত ছিলেন এম জেনারেল ইসলাম, ওয়াহেদুজ্জামান বুলা, অ্যাড. আ.স.ম আব্দুর রউফ, অ্যাড. শামিম রেজা ডালিম, আবু জাফর মন্টু, শহিদুল ইসলাম রতন, মজিবুল হক মজু, অ্যাড. রদিউজ্জামান বদি, মোকারম হোসেন, রবিউল ইসলাম লিটন, আশরাফ বিশ্বাস মিল্টু, মোকলেছুর রহমান মোকলেছ, ফারুক মল্লিক, মুকুল জোয়ার্দ্দার আতিয়ার রহমান লিটন, তৌফিকুজ্জামান তৌফিক,  আরিফুজামান পিন্টু, হুমায়ূন কবির শান্ত, মামুন রেজা সবুজ, শরিফুরজামান সিজার, এম এ তালহা, রাজিব খান, সুজন মালিক, আহসান হাবিব মুক্তি প্রমুখ।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক আ.স.ম আব্দুর রউফ স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি হাজি মোজাম্মেল হক ও সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে শঙ্কচন্দ্র ইউনিয়ন বিএনপির দপ্তর সম্পাদক আজিজুর রহমান বকুল ও ৯ নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি মীর রশিদসহ ৪ জন নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের মুক্তির আশুদাবি করেছেন।

এদিকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির একাংশ উদ্যোগে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে কেদারগঞ্জস্থ জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত জানাজায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য জেলা বিএনপির সভাপতি মুহা. অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসসহ জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। জানাজা পূর্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় মুহা. অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, হত্যা, নির্যাতন করে গণমানুষের দাবি তত্ত্বাবধায়ক সরকার আন্দোলনকে কোনোভাবেই দমানো যাবে না। তিনি সরকারের প্রতি অবিলম্ব হত্যা নির্যাতন বন্ধ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেয়ার জন্য আহ্বান জানান।

অপরদিকে, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির অন্যতম নেতা লে. কর্নেল কারুজ্জামান সমর্থিত দল কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গায়েবানা জানাজার আয়োজন করে। গতকাল শুক্রবার বাদ আছর (পান্ন সিনেমা হল) রূপছায়া সিনেমা হল সংলগ্ন কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত জানাজা উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি এবিএম হাসান হাসু, সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার আলী হোসেন, প্রচার সম্পাদক আব্দুল ওহাব মল্লিক, মহাসিন আলী, মফিজুর রহমান মনা, সৈয়দ শরিফুল আলম বিলাস প্রমুখ।

এ উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের উদ্যোগে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কোর্টমোড়স্থ জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এক গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন আবু বক্কর সিদ্দিক বকুল, আইনুর হোসেন পচা, আরসেদ আলী কালু, হামিদুল হক নেতাজী, আজাদুল ইসলাম আজাদ প্রমুখ।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার মেহেরপুর পৌর টাউন হলপ্রাঙ্গণে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজাপূর্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মেহেরপুর জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির আলহাজ্ব সিদ্দিকুর রহমান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেহেরপুর-১ আসনের সাবেক এমপি জেলা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক মাসুদ অরুন বলেন, সহকর্মীদের আত্মত্যাগ যাতে বৃথা না যায়, আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগনের আকাঙ্খা অনুসারে চলমান সংগ্রামকে গণ অভূথ্যানে পরিণত করে জালেম সরকারকে বিদায়ের মধ্যদিয়ে নিহতদের অঙ্গীকার পূরণ করতে হবে। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দুর রহমান, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমর সিরাজুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস। পরিচালনা করেন মাও. রুহুল আমীন। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক শেখ সাঈদ আহমেদ, জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি ফারুক হুসাইন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহিদুল হক মাস্টার, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু ওবাইদুল্লাহ সেন্টু, জেলা জামায়াতের যুগ্মসম্পাদক তারিক মো. সাইফুল ইসলাম, জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক আব্দুর রহিম, মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুদ্দিন বিশ্বাস, জেলা শ্রমিকদলের আহ্বায়ক আহসান হাবীব সোনা, জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদল নেতা আহমেদ রাজিব খাঁন, সোহেল হোসেন প্রমুখ। এর আগে জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে শিবিরের একটি ব্যানার নিয়ে শিবির নেতাকর্মীরা গায়েবানা জানাজাস্থলে সমবেত হন।

জীবননগর বুরো জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বাদ জুমা জীবননগরে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিকেলে আখ সেন্টার এলাকায় অনুষ্ঠিত জানাজায় ১৮ দলীয় জোট বিএনপি, জামায়াত ও মুসলীম লীগ নেতৃবৃন্দ শরীক হন। জানাজায় ১৮ দলীয় জোটের শরিকদল মুসলীম লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী মহাসচিব নবী চৌধুরী, জেলা বিএনপির সহসভাপতি সাইদুর রহমান ধুন্দু, উপজেলা বিএনপি সভাপতি আক্তারুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খাঁন খোকন, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম, পৌর বিএনপি সভাপতি সাহজাহান কবীর, সাধারণ সম্পাদক মাহতাব উদ্দিন, উপজেলা জামায়াতের আমির খলিলুর রহমান, সেক্রেটারি মাও. ইসরাইল হোসেন, পৌর আমির মাও. সাজেদুর রহমান, সেক্রেটারি গোলাম রসুল, ইউনিয়ন বিএনপি নেতা সেলিম রেজা, শহিদুর রহমান, সাবদার রহমান, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জাফরউল্লাহ, মতিয়ার রহমান, আব্দুর রশিদ, নাসিরউদ্দিন, হাসান, সেলিম মেম্বার, শরিফুল বিশ্বাস, সালাম, পলাশ, তৈয়ব আলী, মোক্তার হোসেন, আইতুল হক, আব্দুল আলিম, খোকন, আলী আকবর, ওকত আলী, হাসান আলী, কাজল মিয়া, আলম মিয়া, সিরাজুল ইসলাম, সাবেক পৌর কমিশনার হাসান আলী, রুপ মিয়া, হামিদ, সামাদ প্রমুখ।

দামুড়হুদা অফিস জানিয়েছে, দামুড়হুদা উপজেলার নতিপোতা ইউনিয়ন ১৮ দলীয় সংগ্রাম কমিটির আয়োজনে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টায় দামুড়হুদা উপজেলার নতিপোতা ইউনিয়নের হেমায়েতপুর ক্লাবমাঠে অনুষ্ঠিত জানাজায় উপস্থিত ছিলেন নতিপোতা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কামরুজ্জামান টুনু, ওহিদুল ইসলাম, ৩ নং ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, ৯ নং ওয়ার্ড সেক্রেটারি ওসমান, ৪ নং ওয়ার্ড সভাপতি শওকত, ছাত্রদলের সাংগঠনিক যুগ্মআহ্বায়ক সাইদুর রহমান সেলিমসহ নতিপোতা ইউনিয়ন জামায়াতের নেতাকর্মী। জানাজা শেষে নিহতদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন মাও. নাসির উদ্দিন।

আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গায় জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। হাউসপুরে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আলমডাঙ্গা উপজেলা শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা নায়েবে আমির অধ্যাপক আব্দুল খালেক, উপজেলা আমির নূর মোহাম্মদ টিপু, আসাদুজ্জামান, উপজেলা সাধারণ সম্পাদক চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী, উপজেলা সহকারী সম্পাদক দারুস সালাম, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস, ইউনিয়ন আমির বিল্লাল হোসেন, আব্দুল মান্নান, আশরাফুল আলম, মানোয়ার, শওকত আলী, সেলিম রেজা, উপজেলা শিবির সভাপতি আশরাফুল ইসলাম, উপজেলা শিবির সেক্রেটারি নাসির উদ্দিন প্রমুখ। প্রধান অতিথি আন্দোলনে শহীদ ভাইদের শাহাদাত কারাগারে নির্যাতিত ভাইদের মুক্তি ও সরকারের নির্যাতন বন্ধের আহ্বান জানান।

ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে, ঝিনাইদহে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা শহরের কেপি বসু সড়কে জমায়েত হতে থাকেন। গায়েবানা জানাজা পরিচালনা করেন মাও. মাহথির হোসেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মসিউর রহমান, শৈলকুপা উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি আব্দুল ওহাব, বিএনপি নেতা অ্যাড. এমএ মজিদ, জাহিদুজ্জামান মনা, সিরাজুল ইসলামসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী জানাজায় অংশ নেন। এছাড়া জেলার কালীগঞ্জ, শৈলকুপা, মহেশপুর, কোটচাঁদপুর ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।