চুয়াডাঙ্গা বিদ্যুত বিভাগের হয়রানি : ডিজিটাল মিটারে গুনতে হচ্ছে দ্বিগুন বিল

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা বিদ্যুত বিভাগের হয়রানির হাত থেকে বেরিয়ে আসতে পারছেন না গ্রাহক। প্রতিনিয়ত নানা অনিয়মের মাশুল গুনতে হচ্ছে তাদেরকে। নতুন বিদ্যুত লাইন সংযোগ থেকে শুরু করে মিটার পরিবর্তন করতে অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের। একই সাথে লোড ক্যাপাসিটি বৃদ্ধির কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত বিলের টাকা দিতে হাঁপিয়ে উঠেছে। এতে চরম দিশেহারা ও ক্ষুদ্ধ হয়ে পড়েছেন চুয়াডাঙ্গা বিদ্যুত উপকেন্দ্রের আওতায় থাকা ২০ হাজার গ্রাহক।

চুয়াডাঙ্গা ওজোপাডিকোর আওতায় গত ৬ মাস থেকে এনালগ থেকে ডিজিটাল মিটার বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে অর্ধেক গ্রাহককে ডিজিটাল মিটারের আওতায় আনা হয়েছে। বাকিদের ২০১৪ সালের জুন মাসের মধ্যে ডিজিটাল মিটারের আওতায় আনা হবে। এতে সিস্টেম লস অনেকটা কমে আসবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। একই সাথে শুরু হয়েছে গ্রাহকের লোড ক্যাপাসিটি বৃদ্ধির কাজ। এজন্য প্রতি কিলোওয়াটের জন্য গ্রাহককে গুনতে হচ্ছে ৩৭৫ টাকা। বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় আগে এক কিলোওয়াট ক্যাপাসিটি থাকলেও বর্তমানে প্রত্যেক গ্রাহককে বাধ্যতামূলক দু কিলোওয়াট ক্যাপাসিটি নিতে হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা বিদ্যুত উপকেন্দ্র থেকে বিদ্যুত সরবরাহ করা হয় চুয়াডাঙ্গা শহর, আলমডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলায়। এ উপকেন্দ্রে থেকে ১১ হাজার কেভি বিদ্যুত সঞ্চালন লাইনে চুয়াডাঙ্গা শহরে প্রতিদিন গড়ে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১৩ মেগাওয়াট। সেখানে বিদ্যুত পাওয়া যায় ৮/৯ মেগাওয়াট। ফলে বিদ্যুত লোডশেডিঙের কবলে পড়তে হচ্ছে চুয়াডাঙ্গাবাসীকে। সবচেয়ে বিবাকে রয়েছে বিজিবি ফিডারের আওতাধীন ডিঙ্গেদহ ও সরোগঞ্জের গ্রাহকরা। ৪৪০/এলটি মেন লাইনের তার দুর্বল হওয়ায় লোডশেডিঙের মাত্রা অনেক বেশি।

অপরদিকে চুয়াডাঙ্গার শ শ বিদ্যুতগ্রাহক অভিযোগ করে বলেছেন, এনালগ মিটার সম্পূর্ণ ভালো থাকলেও অফিস থেকে নোটিশ দেয়া হচ্ছে ডিজিটাল মিটার লাগানোর জন্য। এ জন্য উপায় না পেয়ে আমরা ডিজিটাল মিটার নিচ্ছি। কিন্তু এর পর থেকে ভোগান্তির মাত্রা বেড়ে গেছে। ডিজিটাল মিটার নেয়ার পর থেকে আমাদের প্রতি মাসে প্রায় দ্বিগুন বিল গুনতে হচ্ছে। যেখানে আগে প্রতিমাসে ৫শ/৬শ টাকা বিল আসত সেখানে এখন বিল আসছে ৯শ থেকে এক হাজার টাকা। এছাড়া একটি মিটার কিনতে লাগছে পনের শ টাকা, মিস্ত্রি মিটার লাগাতে নিচ্ছেন দুশ টাকা। এরপর রয়েছে ৩৭৫ টাকা লোডক্যাপাসিটি চার্জ।

চুয়াডাঙ্গা ওজোপাডিকোর সহকারী প্রকৌশলী সবুক্তগীন জানান, চুয়াডাঙ্গা  ৩৩/১ কেভির একটি উপকেন্দ্রের আওতায় মোট গ্রাহক রয়েছেন ২০ হাজার ৪৪৩। এর মধ্যে  সেচপাম্প রয়েছে ৭৪টি, ক্ষুদ্রশিল্প (সি ক্যাটাগরির) ৩৪১টি, বাণিজ্যিক গ্রাহক দু হাজার ৯০৪টি, অন্যান্য ১৮১, মধ্যচাপ ২০টি ও আবাসিক গ্রাহক রয়েছেন ১৭  হাজার। তবে ডিজিটাল মিটারে সামান্য বেশি বিল হবে বলে তিনি জানান। এতে আমাদের সিস্টেম লস কমে যাবে।

এছাড়া একটি নতুন সংযোগ নিতে সার্ভিস তার বাদে সর্বসাকুল্যে দু হাজার পাঁচশ টাকা খরচ হয়। সেখানে অসাধু কর্মচারী ও দালালেরা নতুন সংযোগ নিতে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সব মিলিয়ে বিদ্যুতের ব্যয় মেটাতে গ্রাহকরা হিমসিম খাচ্ছে। কোনো সমস্য নিয়ে বিদ্যুত অফিসে গেলে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। কোনো অভিযোগেও কাজ হচ্ছে না।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *