চুয়াডাঙ্গা বিএনপির একাংশের ঢাকায় অবস্থান : অপরাংশের সংবাদ সম্মেলনে পাল্টা অভিযোগ

 

সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডকে বিতর্কিত করতেই স্বার্থান্বেষী মহলের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার নাটক

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের তদন্ত চলাপর্যন্ত কার্যক্রম স্থগিতের আবেদন জানিয়েছেন অভিযোগ উত্থাপনকারীরা। এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডকে বিতর্কিত করার অপ প্রয়াসের কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল বানোয়াট অভিযোগ তুলেছে বলে দাবি করেছেন অন্যতম যুগ্মআহ্বায়ক মজিবুল হক মজু।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন পায় গত ২৭ এপ্রিল। ৪৫ দিনের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা বিএনপির সকল ইউনিটের কমিটি গঠনপূর্বক জেলা সম্মেলনের নির্দেশনা দেয়া হয়। এরই মাঝে অভিযোগ ওঠে উপজেলা, ইউনিয়ন ও পৌর সম্মেলনের লক্ষ্যে আহ্বায়ক কমিটির বদলে মূল কমিটির সুপার ফাইভের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে। এ ছাড়া চেয়ারপার্সন ও কেন্দ্রীয় মহাসচিব কর্তৃক অনুমোদিত জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির দুজন সদস্যের নাম আহ্বায়ক জাল জালিয়াতির মাধ্যমে পরিবর্তন করেছেন। এদের একজন আনোয়ার হোসেন। এ নামের আগে মৌ. যুক্ত করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক তার পছন্দের লোককে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এ ছাড়াও অপর একজনের নাম পরির্তন করা হয়েছে। এসব অভিযোগের পাশাপাশি জেলা বিএনপির আহ্বায়কের বিরুদ্ধে উত্থাপন করা হয় কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ। এরই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয়ভাবে এক সদস্যের কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার কথা। তদন্ত চলাকালে চুয়াডাঙ্গা বিএনপির কার্যক্রম স্থগিত রাখার আবেদন নিয়ে গতকাল সোমবার কেন্দ্রীয় মহাসচিবের সাথে দেখা করেন জেলা বিএনপির অন্যতম যুগ্মআহ্বায়ক ওয়াহেদুজ্জামান বুলা, আলমডাঙ্গা পৌর মেয়র মীর মহিউদ্দীন, জীবননগর পৌর মেয়র নাওয়াব আলীসহ অভিযোগ উত্থাপনকারীরা। এ ছাড়াও নেতৃবৃন্দ গতকাল কেন্দ্রীয় যুগ্মমহাসচিব সালা উদ্দীনের সাথেও দেখা করে চুয়াডাঙ্গা বিএনপির আহ্বায়কের বিরুদ্ধে নালিশ করেন। এদিকে চুয়াডাঙ্গা বিএনপির আহ্বায়কের পক্ষে অন্যতম যুগ্মআহ্বায়ক মজিবুল হক মজু সংবাদ সম্মেলন করেন। চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সদ্য গঠিত চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. এমএম শাহজাহান মুকুল, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামানসহ অনেকে।

লিখিত বক্তব্যে মুজিবুল হক মজু বলেন, আহ্বায়ক কমিটির পরিচিতিসভা গত ৩ মে জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। আহ্বায়ক অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সকল যুগ্মআহ্বায়কসহ কমিটির সিংহভাগ সদস্যই উপস্থিত ছিলেন। ১৭ মে অনুষ্ঠিত আহ্বায়ক কমিটির সভাতেও অধিকাংশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রের বেধে দেয়া ৪৫ দিনের মধ্যে সাংগঠনিক ইউনিটসমূহের কমিটি গঠনের কাজ সম্পন্ন করার বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সংগঠনকে গতিশীল করার লক্ষ্যে গাংনী সাংগঠনিক থানা গঠনের প্রস্তাব উপস্থাপিত হয় এবং সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরবর্তীতে ৯টি সাংগঠনিক ইউনিট কমিটি গঠন করা হয়। পরে কেন্দ্রের সংশোধিত নির্দেশনার প্রেক্ষিতে ১১ সদস্য বিশিষ্ট সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতেই কমিটি গঠন করা হয়েছে। তা হলে অভিযোগ কেনো?

মুজিবুল হক মজু বলেন, যারা নিজেদের স্বার্থে সাংগঠনকে বেচাকেনা করতে দ্বিধা বোধ করে না তারাই আজ মায়াকান্না করছেন। দলে গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও অনেকেই দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। আবার তারাই সরকার দলীয় নেতাদের সাথে আতাত করে দলের নেতাকর্মীদের চরম ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন। অন্য কোনো কারণে নয়, শুধু নিজেদের স্বার্থে লিপ্ত বাণিজ্যের পথ রুদ্ধ হওয়ার কারণেই কতিপয় বিচ্ছিন্ন সুবিধাভোগীরা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার নাটক করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ইতিহাস সাক্ষী। দলের চরম সংকটে, রাজপথে আন্দোলনে কে কেমন ভূমিকা রেখেছেন তা কারো অজানা নয়। মুহা. অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস ও মাহমুদ হাসান খান বাবু দুঃসময়ে সাহসিকতার সাথে বিএনপিকে পুনরুজ্জীবিত করছেন। জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিশ্বাস রক্ষার্থে সফলকাম হবে ইনশাআল্লাহ।