চুয়াডাঙ্গা নেহালপুর থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর নিখোঁজ : জীবননগর হাসাদহ থেকে আরজুল্লাহর গলায় ফাঁস দেয়া লাশ উদ্ধার

 

জীবননগর ব্যুরো: চুয়াডাঙ্গায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার ৪ দিন পর আরজুল্লাহর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সে সদর উপজেলার নেহালপুর গ্রামের আলিমুদ্দিনের ছেলে। নিহতের পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, গত ২৭ মে রাতে নেহালপুর গ্রামের একটি চায়ের দোকান থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে তুলে নিয়ে যায়। তারপর থেকে সে নিখোঁজ ছিলো। তবে তার গ্রামের লোকজন জানিয়েছেন, আরজুল্লাহ এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক হত্যাসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে মুখ খোলেনি জেলা পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হয়েছে আরজুল্লা। গতকাল বুধবার সকালে এলাকাবাসী হাসাদাহ-মহেশপুর সড়কের কানাইডাঙ্গা রাস্তার পার্শ্বে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে জীবননগর থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা মর্গে প্রেরণ করে। আরজুল্লাহর পরিবার তার পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত করে। ময়নাতদন্ত শেষে আরজুল্লার লাশ তার পরিবার গ্রহণ করে। নিহত আরজুল্লাহর বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় দুটি হত্যা মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের নেহালপুর পূর্বপাড়ার আলিমুদ্দিনের ছেলে আরজুল্লাহ গত ২৭ মে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। গতকাল সকালে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করা লাশ জীবননগর উপজেলার হাসাদাহ-মহেশপুর সড়কের কানাইডাঙ্গাগামী রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী। খবর পেয়ে জীবননগর থানা অফিসার ইনচার্জ এনামুল হক ও ওসি (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসআই মকবুল হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে লাশ উদ্ধারসহ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে প্রেরণ করে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্র জানায়, জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার আলিমুদ্দিন দেশ স্বাধীনের পর নেহালপুরে চলে যান এবং বৈবাহিক সূত্রে নেহালপুরের স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তার ছেলে আরজুল্লাহ নিষিদ্ধ ঘোষিত সশস্ত্র সংগঠনের সাথে জড়িয়ে পড়ে। নেহালপুরের মাহবুবকে প্রকাশ্যে হত্যা করার মধ্যদিয়ে সে লাইমলাইটে চলে আসে। পরবর্তীতে বোয়ালিয়ার মোজাম ও ছয়ঘরিয়ার জামাল হত্যা মামলারও সে এজাহারভুক্ত আসামি। সম্প্রতি ক্রসফায়ারে নিহত ছয়ঘরিয়ার সন্ত্রাসী আশাদুলের সে ছিলো ঘনিষ্ঠ সহোচর। এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক আরজুল্লার আন্ডারওয়ার্ল্ডে ছিলো ব্যাপক পরিচিতি।

জীবননগর থানা অফিসার ইনচার্জ এনামুল হক লাশ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, লাশের গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করার দাগ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করার পর লাশ ওই স্থানে ফেলে রেখে যায়। নিহত আরজুল্লাহর বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় দুটি হত্যা মামলা রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। ময়নাতদন্তের পর পিতা আলিমুদ্দিন আরজুল্লাহর লাশ গ্রহণ করে। হত্যার মোটিভ উন্মোচনে পুলিশ কাজ করছে বলে তিনি জানান।

 

Leave a comment