চুয়াডাঙ্গা জেলায় সরবরাহ নেই জলাতঙ্কের টিকা

 

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস পালন

স্টাফ রিপোর্টার: গতকাল বুধবার ছিলো বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস। এই উপলক্ষে দেশের মানুষকে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান জানিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ২০০৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১২টি দেশে এই দিবসটি পালন করে আসছে।

সারাদেশের মতো চুয়াডাঙ্গা জেলায় ঘরোয়াভাবে এ দিবসটি পালন করেছে জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস। কর্মস্থল থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়া চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শ্যামল কুমার পাল মুঠোফোনে জানান, অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে পালিত হয়েছে বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবসের কর্মসূচি। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার হলরুমে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় সভায় জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শ্যামল কুমার পালের সভাপতিত্বে অতিথি ছিলেন চুযাডাঙ্গা সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম হায়দার, আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শামীমুজ্জামান, জেলা সরকারি ছাগল উন্নয়ন খামারের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আরমান আলী ও আলমডাঙ্গা উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. আব্দুল্লাহ আল কাফীসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের চার উপজেলার কমর্চারীবৃন্দ। যে দিবসকে ঘিরে আজকের আয়োজন, সেই জলাতঙ্কের টিকা সরবরাহ আছে? উত্তরে জানা গেলো না নেই, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে জলাতঙ্কের টিকা সরবরাহ নেই। ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম হায়দার জানালেন, বেশ কিছুদিন ধরে জেলায় জলাতঙ্কের টিকা সরবরাহ নেই। টিকা চেয়ে ঢাকা অফিসে চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে। একই চিত্র চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায়। পৌর এলাকার কোনো নাগরিককে কুকুর, বিড়ালে কামড়ালে জলাতঙ্ক প্রতিষেধক  সরবরাহ করা হতো এখান থেকে। বছর দুয়েক ধরে পৌরসভা থেকে বন্ধ রয়েছে জলাতঙ্কের প্রতিষেধক সরবরাহ। পৌর কর্তৃপক্ষ জানালো, এখন এ ধরনের টিকা সরবরাহ করা হয় সদর হাসপাতাল থেকে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে গিয়ে অভিন্ন তথ্য মিললো। কুকুর, বিড়াল বা শেয়ালে কামড়ানো কোনো রোগী এলে নিজ দায়িত্বে বাইরের ফার্মেসি থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে জলাতঙ্কের টিকা। ৪ ডোজের টিকার ২টি দেয়া হচ্ছে সদর হাসপাতাল থেকে অবশিষ্ট দুটি কিনতে হচ্ছে রোগীকে।

জলাতঙ্ক সাধারণত কুকুর বিড়ালের ভাইরাসজনিত জেনেটিক জাতীয় রোগ। যা কুকুর বিড়াল, শেয়ালের কামড়ের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। বিশ্বে প্রতি ১০ মিনিটে একজন করে এবং বছরে প্রায় ৫৫ হাজার মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। কোনো মানুষ একবার এই রোগে আক্রান্ত হলে তার মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ঝাড়ফুঁকে জলাতঙ্ক রোধ করা সম্ভব নয়। সাধারণত কুকুর, বিড়াল, শিয়াল, বেজি, বানর, বনবিড়ালের কামড় অথবা আঁচড়ে জলাতঙ্ক রোগ হয়। এসব প্রাণি কামড় বা আঁচড় দিলে ক্ষতস্থান ভালো করে সাবান দিয়ে ১৫ মিনিট ধরে ধুতে হবে। পাশাপাশি অভিজ্ঞ ভেটেরিনারি চিকিৎসক ও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী টিকা নিতে হবে।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস উপলক্ষে মেহেরপুরে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে জেলা প্রাণিসম্পদ হলরুমে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শশাঙ্ক কুমার হালদার। বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শরিফুল ইসলাম, গাংনী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রফিকুল ইসলাম, মুজিবনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা খুরশিদ আলম প্রমুখ। সেমিনারে জেলার প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মকর্তা ও কার্মচারীরা অংশ নেন। জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা।