চুয়াডাঙ্গা ইসলামী ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বাড়ি ফেরার সময় দামুড়হুদার উজিরপুর ব্রিজের নিকট মোটরসাইকেল চেকিঙের নামে ভুট্টা ব্যবসায়ীর গতিরোধ : ৫ লাখ টাকা ছিনতাই?

বাড়িতে কাফনের কাপড় পাঠানোর মাসের মাথায় মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা সড়কের উজিরপুর ব্রিজের নিকট মোটরসাইকেল চেকিঙের কথা বলে সাইদুর রহমান বাচ্চু (৪০) নামের এক ভূষিমাল ব্যবসাযীর মোটরসাইকেল থামিয়ে ৫ লক্ষাধিক টাকা ছিনতাই করে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তাকে চোখ-মুখ বেঁধে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে শারীরিক নির্যাতন শেষে আলমডাঙ্গা-মুন্সিগঞ্জ সড়কের ধারে ফেলে রেখে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা সটকে পড়ে বলেও জানিয়েছেন ভূষিমাল ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়া। ভূষিমাল ব্যবসাযী বাচ্চু মিয়া দামুড়হুদার পুরাতন হাউলী গ্রামের জামাত আলীর ছেলে। গতকাল সোমবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা ইসলামী ব্যাংক থেকে টাকা তুলে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার সময় উজিরপুর ব্রিজের নিকট ওই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী বাচ্চু মিয়া বলেছেন, গতকাল সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে চুয়াডাঙ্গা ইসলামী ব্যাংক থেকে ৫ লাখ টাকা তুলে মোটরসাইকেলযোগে দামুড়হুদার উদ্দেশে রওনা হন। তিনি চুয়াডাঙ্গা-দামুড়হুদা সড়কের উজিরপুর ব্রিজের নিকট পৌঁছুলে মাইক্রোবাস নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ৪-৫ মোটরসাইকেল চেকিঙের কথা বলে গতিরোধ করে। তারা নিজেদের পুলিশ পরিচয় দেয় এবং মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখাতে বলে। আমি মোটরসাইকেলের কাগজপত্র নিয়ে মাইক্রোবাসের দিকে যাওয়ার সময় ওই ছিনতাইকারীদের একজন আমার মোটরসাইকেলে রাখা টাকার ব্যাগটি নিয়ে নেয়। আমি মাইক্রোবাসের কাছে যাওয়ার সাথে সাথে তারা আমাকে পেছন থেকে জাপটে ধরে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নেয় এবং আমার চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে। আমি তাদের হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে তারা আমাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। পরে আমি চিৎকার দিয়ে উঠলে আমাকে লাঠি দিয়ে মারধর শুরু করে এবং গলায় গামছা পেঁচিয়ে ধরে বলে চুপচাপ বসে থাক। নইলে জানে মেরে ফেলবো। তখন আমি নিরুপায় হয়ে তাদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে বলি আমার দুইটি বাচ্চা আছে। আমাকে প্রাণে মারবেন না। আমাকে ছেড়ে দেন। বাচ্চু আরও বলেন, তাকে মাইক্রোবাসে করে পুড়াপাড়ার ভেতর দিয়ে বিষ্ণুপুর ব্রিজ পার হয়ে গাংনীর ভেতর দিয়ে আলমডাঙ্গায় নিয়ে যায়। পরে আলমডাঙ্গা-মুন্সিগঞ্জ সড়কের মাঝামাঝি স্থানে মাঠের ভেতর ছেড়ে দিয়ে সটকে পড়ে অজ্ঞাত ওই ছিনতাইকারীরা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আবু জিহাদ বলেছেন, প্রায় বছরখানেক আগে মোবাইলফোনে বাচ্চুর কাছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা চাঁদা দাবি করে এবং বিগত ৯ মাস আগে বাচ্চুর বাড়িতে প্রায় ১৮ গজ কাফনের কাপড় পাঠায়। তিনি ওই সময় থানায় জিডিও করেন। ওই ঘটনার ৪ মাস পর দুর্বৃত্তরা ২য় দফা বাচ্চুর নিকট চাঁদা দাবি করে। ঘটনার পর বাচ্চু আরও একটি জিডি করেন। সর্বশেষ দিন পাঁচেক আগে দুর্বৃত্তরা পুনরায় চাঁদা দাবি করে। বাড়িতে কফনের কাপড় পাঠানো এবং চাঁদা দাবির একপর্যায়ে গতকাল তার ৫ লাখ টাকা ছিনতাই হলে বিষয়টি অনেকটাই রহস্যজনক বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি আদৌও ইসলামী ব্যাংক থেকে ৫ লাখ টাকা তুলেছেন কি-না সেটিও আজ মঙ্গলবার যাচাই করা হবে। ঘটনার পেছনে অন্য কোনো ঘটনা লুকিয়ে আছে কি-না সেটিও গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।