চুয়াডাঙ্গায় ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কোর্সে ৪৯ জনের মধ্যে ৩৮ জনই জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি

সেবা পরিদফতরের চিঠি আসার সাথে সাথে কান্নার রোল : দু ছাত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় নার্সিং ইন্সটিটিউটে ৪৯ জনের মধ্যে ৩৮ জন ছাত্রীর ভর্তিতে জালিয়াতি ধরা পড়েছে। ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সাইন্স অ্যান্ড মিডউইফারি তিন বছর মেয়াদি এ কোর্সে ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষে গত নভেম্বরে এসব ছাত্রী চুয়াডাঙ্গা নার্সিং ইন্সটিটিউটে ভর্তি হয়। রোববার সেবা পরিদফতরের একটি চিঠি যাওয়ার সাথে সাথে চুয়াডাঙ্গা নার্সিং ইন্সটিটিউটে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। কান্নায় ভেঙে পড়ে ৩৮ জন ছাত্রী। দু ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে এখানে ভর্তি হওয়া ৪৯ জন ছাত্রীর মধ্যে ৩৮ জন জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয় ওই চিঠিতে।

চুয়াডাঙ্গা নার্সিং ইন্সটিটিউটের ইনচার্জ আলোমতি বেগম দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, সেবা পরিদফতরের দেয়া চিঠির আলোকে আমরা গত ১৫ নভেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৫০টি আসনে মোট ৪৯ জন ছাত্রী এখানে ভর্তি করি। একটি আসন শূন্য থাকলেও একজন ভর্তি হয়নি। গতকাল রোববার তাদের হাতে যে চিঠিটি এসেছে, তাতে এখানকার ৩৮ জন ছাত্রীর ভর্তি জালিয়াতির মাধ্যমে হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। একই সাথে এসব ছাত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে চিঠিতে। গতকাল রোববার ৩৮ জনকে চিহ্নিত করে বিষয়টি অভিযুক্ত ছাত্রীদেরকে জানানোর পর নার্সিং ইন্সটিটিউটে এক রকম শোক শুরু হয়। কান্নায় ভেঙে পড়ে অভিযুক্ত ছাত্রীরা। এর মধ্যে নওগাঁ জেলার নুরুল ইসলামের মেয়ে নাসিমা খাতুন ও চুয়াডাঙ্গার রাজাপুর গ্রামের লুকমান হোসেনের মেয়ে অনিকা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদেরকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অভিযোগ অস্বীকার করে ক্ষতিগ্রস্থ ছাত্রীরা জানান, সার্কুলারের নিয়ম মেনে ভর্তি ফরম পূরণ ও সকল ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আনা সিদ্ধান্ত বাতিল করা না হলে আমরণ আন্দোলন অব্যাহত রাখবে।

অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালী একটি চক্র এই অবৈধ ভর্তি জালিয়াতির সাথে জড়িত রয়েছে। তারা কম পয়েন্টে ভর্তির সুযোগ করে দিয়ে লাখ লাখ টাকার অর্থ বাণিজ্য করছে। এই চক্রটি বেশ কয়েক বছর যাবত দেশের বিভিন্ন নার্সিং ইন্সটিটিউটে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা শিক্ষার্থীদের নামে অনলাইনে আবেদন করে তাদের পরিবর্তে পরে একই রোল নম্বর দেখিয়ে কম মেধা সম্পন্নদের ভর্তির সুযোগ করে দেয়। অভিযোগকারীরা জানান, সেবা পরিদফতরের সংশ্লিষ্ট কতিপয় অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীর হাত রয়েছে এই ভর্তি জালিয়াতিতে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আগে রাঘব বোয়ালদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজন বলে সচেতন মহল মনে করে।