চুয়াডাঙ্গাস্থ ৬ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন : প্রীতিভোজ প্রেসব্রিফিং

মাদকপাচার শূন্যের কোঠায় নিতে সীমান্তবাসী ও সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা

 

স্টাফ রিপোর্টার: ৬ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে উদযাপন করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জাফরপুরস্থ ব্যাটালিয়নের সদর দফতরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটা হয়। দুপুরে প্রীতিভোজের আয়োজনেই অনুষ্ঠানের ইতি টানা হয়নি, সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে সৃষ্টি সুখের উল্লাস ফুটিয়ে তোলা হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনের মাঝে প্রেসব্রিফিঙে ৬ বিজিবির চোরাচালানবিরোধী অভিযানে ধারাবাহিক সফলতারও বিবরণ তুলে ধরা হয়।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটা ও প্রীতিভোজে উপস্থিত ছিলেন- বিজিবির কুষ্টিয়া সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. শাহারিয়ার রশীদ, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন, পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনজুমান আরাসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তা, এনএসআই ডিডি আবু জাফর, র‌্যাব-৬ ঝিনাইদহ অঞ্চল প্রধানসহ ঝিনাইদহ ও মাগুরা এবং মেহেরপুরের কর্মকর্তাদের অনেকে। অনুষ্ঠানে অতিথিদের স্বাগত জানান, ৬ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল এসএম মনিরুজ্জামান।

৬ বিজিবি চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের দায়িত্ব গ্রহণ করে গত বছরের ২৩ মার্চ। এ ব্যাটালিয়নের ১৪৪ কিলোমিটার সীমান্ত মাদক চোরাচালানমুক্ত করার পাশাপাশি নারী ও শিশুপাচার শূন্যের কোঠায় নেয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এজন্য সীমান্তবাসীসহ সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতাও চাওয়া হয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় দায়িত্ব গ্রহণের পর গতকাল আয়োজিত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনের এক ফাঁকে ৬ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল এসএম মনিরুজ্জামান এ সহযোগিতা চেয়ে বলেছেন, সীমান্তে বিএসএফ একজন বাংলাদেশিকে ধরলে আমরা ভারতীয় দুজনকে ধরবো। তবে ভারত অভ্যন্তরে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে বিজিবি ছাড়বে না।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রীতিভোজ শেষে গত তিন দিনের বিজিবি সদস্যদের চোরাচালানবিরোধী অভিযান সম্পর্কে প্রেসব্রিফিঙে ৬ বিজিবি অধিনায়ক উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের খোলামেলা জবাব দেন। তিনি বলেন, মাদক পাচারে ছাড় নেই। মাদক যুবসমাজকে ধ্বংস করে। মাদকে আমার আপনার আমাদের সকলেরই সন্তান অধপতনে ধাবিত হতে পারে। মাদক যুবসমাজকে ধ্বংস করছে। দেশ হচ্ছে মেধাশূন্য। ফলে সীমান্তে মাদক পাচার শূন্যের কোঠায় নিতেই হবে। সে লক্ষ্যে সীমান্তে কর্তব্যরত বিজিবির সদস্যরা আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রেস ব্রিফিঙে বলা হয়, ৬ বিজিবি চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের দায়িত্ব গ্রহণের পর ৩৮ কোটি, ৫৬ লাখ ৫৬ হাজার ৪৭৫ টাকার চোলাচালনকৃত মালামাল উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে আন্তঃমুখি ৩৭ কোটি ৬৪ লাখ ২৭ হাজার ৩৮ টাকার মালামাল রয়েছে। নিবন্ধিত মামলা হয়েছে ১ হাজার ২৬৭টি। ধৃত আসামির সংখ্যা ৮৪ জন, পলাতক আসামির সংখ্যা ৭৬ জন। ভারতীয় মদ উদ্ধার করা হয়েছে ১৫ হাজার ১৫১ বোতল, গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে ৬৮ দশমিক ৩ কেজি, ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে ৩৩ হাজার ৩৬৪ বোতল, হেরোইন উদ্ধার হয়েছে ২ দশমিক ১৩ কেজি। সীমান্ত দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশির সংখ্যা ২ জন, বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিক আটক ৪৪ জন, পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ফেরত আনা হয়েছে ১০ জনকে। বিজিবি কর্তৃক ভারতীয় নাগরিক আটকের সংখ্যা ৫ জন। পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ফেরত দেয়া হয়েছে ৪ জনকে।

গত ৩ দিনে বিজিবির সদস্যদের অভিযানে আটককৃত মালামালেরও বর্ণনা তুলে ধরা হয়। এসবের মধ্যে রয়েছে- মদ, শাড়ি-কাপড়সহ শাটপিচ।