চুয়াডাঙ্গার প্রতিবন্ধী কিশোরের গোপনাঙ্গে জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা : লোকমোর্চায় অভিযোগ

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় এক প্রতিবন্ধী কিশোরের পুরুষাঙ্গ সিগারেটের আগুনের ছ্যাঁকা দিয়ে ঝলসে দেয়া হয়েছে। হাত পেতে খাবার চাওয়ার অপরাধে স্থানীয় প্রভাবশালী মাদক বিক্রেতা মুকুল হোসেন অত্যন্ত পীড়াদায়ক এ কাজটি করেছেন। এর আগেও তিনি ওই প্রতিবন্ধী কিশোরের পিঠে আগুনের ছ্যাঁকা দেন এবং আরেকবার মেরে সামনের একটি দাঁত ভেঙে দেন। দিনমজুরের প্রতিবন্ধী ছেলের ওপর দফায় দফায় এই অমানবিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন সচেতন মহল। তারা সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন। প্রতিবন্ধীর মা শরিফা খাতুন জেলা লোকমোর্চায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শঙ্করচন্দ্র গ্রামের গাইদঘাট স্কুলপাড়ার দিনমজুর রমজান আলীর তিন ছেলের মধ্যে দুজনই প্রতিবন্ধী। মেজ ছেলে মিনারুল ইসলাম (১৭) বাক ও মানিসক প্রতিবন্ধী। সে আশেপাশে যাকেই দেখে কাছে যায়। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে হাসে এবং হাত পেতে খাবার চায়। প্রতিবন্ধী মিনারুলের মা শরিফা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যায় গ্রামের প্রভাবশালী ইনামুল হকের ছেলে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী মুকুল হোসেন (৩৫) জ্বলন্ত সিগারেট মিনারুলের গোপনাঙ্গের মাথায় ঠেসে ধরে। যন্ত্রণায় সে চিৎকার করতে থাকলে এলাকার কেউ কেউ ছুটে গিয়ে তাকে রক্ষা করেন। ছেলের ক্ষত-দগ্ধ দাগ দেখিয়ে কেঁদে কেঁদে মিনারুলের মা জানান, এর কয়েক মাস আগেও মুকুল সিগারেটের আগুন দিয়ে আমার ছেলের পিঠ পুড়িয়ে দিয়েছে এবং আরেকবার তাকে মেরে তার সামনের একটি দাঁত ভেঙে দিয়েছে। তিনি আরও জানান, আমার ছেলে কথা বলতে পারে না। চিৎকার করে কান্নাকাটি করে। মুকুল দফায় দফায় আমার ছেলের ওপর অমানুষিক ও অকথ্য নির্যাতন চালায়। এ ছাড়া মাদক ব্যবসায়ী মুকুল আমার নির্বোধ ছেলে মিনারুলকে কয়েকবার মদ ও তাড়ি খাইয়ে দিয়েছে।’ তিনি জানান, টাকার অভাবে চিকিৎসা দিতে না পারায় প্রতিবন্ধী মিনারুলের পুরুষাঙ্গে ঘা হয়ে যায়। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে প্রতিবন্ধী মিনারুলের মা ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে সামাজিক সংগঠন জেলা লোকমোর্চা অফিসে যান। জেলা লোকমোর্চার সচিব কানিজ ফাতেমা জানান লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রতিবন্ধী মিনারুলের মা। এ ব্যাপারে জেলা লোকমোর্চার সভাপতি অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, ‘বিষয়টি খুবই অমানবিক। আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, সরেজমিনে তদন্ত করে অভিযুক্ত মুকুল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করবো।’ এদিকে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দোষী ব্যক্তির শাস্তি দাবি করেছেন জেলা যুবলীগ নেতা আবদুল কাদের ও মিরাজুল ইসলাম কাবা। তারা বলেন ‘আমরা অভিযুক্ত মুকুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’ এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি তদন্ত এএইচএম কামরুজ্জামান খাঁন বলেন, এটা জঘন্য অপরাধ। মামলা হলে অবশ্যই অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।