চুয়াডাঙ্গার ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউিনিটি হেলথ সেন্টারের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ

সদ্য অপারেশনেই ইনফেকশন নয় দু’বছর আগের অপারেশনও তুলতে হচ্ছে চোখ!

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা কেদারগঞ্জস্থ ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে চোখের অপারেশন করিয়ে ২০ জনের চোখ হারানোর খবর প্রকাশ্যে আসার পর আরও অনেকেই চোখ হারিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন। অপারেশনের দু’বছরের মাথায় আয়নাল হককেও তার অপারেশন করানো বাঁ চোখটি তুলে ফেলতে হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। অপরদিকে কমিউনিটি হেলথ সেন্টারটির বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। তদন্তদলের তথ্য নিতে গেলে গতপরশু প্রতিষ্ঠানটির লোকজন সাংবাদিকদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে নতুন করে বিরূপ সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

চোখে অপারশেন করানো ২০ জন রোগীর চোখে ইনফেকশন দেখা দেয়ার জন্য চিকিৎসকের ত্রুটি নাকি অপারেশনে ব্যবহার করা অষুধপথ্যে ব্যাক্টেরিয়া? তদন্তদল এ প্রশ্নের জবাব খোঁজার এক পর্যায়ে অপারেশনে ব্যবহৃত বিদেশ থেকে আমদানি করা ওষুধের চালান ইতোমধ্যেই জব্দ করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে অপারেশনের পর ২০ জনের চোখ তুলে ফেলার ঘটনাটি পত্র পত্রিকায় উঠে এলে স্বাস্থ্য বিভাগ নড়ে বসে। একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জনের গঠিত তদন্ত টিম তিন পাতার প্রতিবেদন পেশ করলেও প্রতিবেদনের বিস্তারিত এখনও পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি। মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত টিম আগামীকাল প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বলে সূত্র জানিয়েছে। এদিকে একই কেন্দ্রে আগেও চোখের অপারেশন করিয়ে অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে অনেকেই অভিযোগ তুলেছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি আসাদুল হোসেন জোয়ার্দ্দার লেমন একই কেন্দ্রে চোখের অপারেশন করিয়ে দৃষ্টিশক্তি হরানোর অভিযোগ তুলে যেমন সকলকে সতর্ক করেছেন, তেমনই চুয়াডাঙ্গা বাগানপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষিকা আরজুমান নাহার ও ওই কমিউনিটি কেন্দ্রে চোখের অপারেশন করিয়ে কতোটা হয়রানি হয়েছেন তাও চিত্র তুলে ধরে প্রতিকার কামনা করেছেন। এদিকে দামুড়হুদা সুবলপুরের মৃত মহন আলীর ছেলে আয়নাল হক (৬৫) গতকাল মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার সময় অভিযোগ তুলে বলেন, ওই ইম্প্যাক্টে দু’বছর অপারেশন করানো বাম চোখটি নিয়ে ভুগছিলাম। শেষ পর্যন্ত গত ২২ ফেব্রুয়ারি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জুনিয়র চক্ষু কনসালটেন্ট ডা. শফি উজ্জামানের নিকট চিকিৎসা নিতে এলে তিনি অপারেশন করে চোখটি তুলে ফেলতে বাধ্য হন। গতকাল একই চোখের চিকিৎসা নিতে একই চিকিৎসকের নিকট এসে এই প্রতিবদককে পেয়ে ইম্প্যাক্টে অপারেশনের পর দীর্ঘদিন ধরে যন্ত্রণা দেখা দিলে ইম্প্যাক্টে চিকিৎসা নিতে গেলে সংশ্লিষ্টরা খারাপ আচরণ করতো বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।

প্রসঙ্গত: গত ৩০ মার্চ ২৪ জন রোগীর চোখে অপারেশন করা হয়। ২০ জনের চোখে তীব্র যন্ত্রণা দেখা দেয়। পরবর্তীতে ১৯ জনের চোখ তুলে ফেলতে হয়েছে। আরও একজন তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে সুস্থতার আশায় প্রহর গুণছেন। এসব তথ্য পত্র পত্রিকায় প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন অনিয়ম নিয়েও একের পর এক ভুক্তভোগী মুখ খুলতে শুরু করে।