চুয়াডাঙ্গার আলী হোসেন সুপার মার্কেটে ভ্রাম্যমাণ আদালত : ভুয়া সনদধারী চক্ষু ডাক্তারকে ৬ মাসের জেল

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় এক ভুয়ানদধারী চক্ষু ডাক্তারকে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠান মালিককে জরিমানা করা হয়েছে । সাইনবোর্ডে ভুয়া ডিগ্রি লাগিয়ে জেলা শহরের আলী হোসেন সুপার মার্কেটে রোগী দেখার সময় গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ ওই ডাক্তারকে আটক করে। পরে ভ্রাম্যামাণ আদালত তাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত এমডি শামসুর রহমান শহরের মাঝেরপাড়ার মিজানুর রহমান মানিকের ছেলে। তিনি সিএ্যান্ডবিপাড়া বাসিন্দা ছিলেন।

জানা গেছে, এমডি শামসুর রহমান আলী হোসেন সুপার মার্কেটে রবিউল ইসলামের সোহাগ অপটিকসে ৮ মাস ধরে ভুয়া ডিগ্রি লাগিয়ে চোখ ও মাথাব্যথা রোগী দেখছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা চুয়াডাঙ্গার উপপরিচালক আবু জাফর ইকবাল চোখের রোগী সেজে সেখানে যান। এরপর ওই চেম্বারে অভিযান চালিয়ে পুলিশ আটক করে ওই ডাক্তারকে। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফখরুল ইসলাম সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। ডাক্তার সেজে প্রতারণার দায়ে ভুয়া ডাক্তার এমডি শামসুর রহমানকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আদালতসূত্রে জানা গেছে, শামসুর রহমান কোনো ডাক্তার না হয়েও এমবিবিএসসহ বিভিন্ন ডিগ্রি তার প্যাডে লিখে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। ভুয়া ডাক্তারকে সহযোগিতা করা ও প্রশ্রয় দেয়ার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালত এ সময় সোহাগ অপটিকসের মালিক রবিউল ইসলামকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

একটি সূত্র জানায়, দণ্ডপ্রাপ্ত ভুয়া ডাক্তার এমডি শামসুর রহমান একজন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট। তিনি ২০১২ সালে ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের ভৈরবে জীবনতরী ভাসমান হাসপাতালে মাস তিনেক চাকরি করেন। সেই সুবাদে তিনি ডাক্তার বনে যান। পত্রপত্রিকায় চক্ষুবিশেষজ্ঞ হিসেবে বিজ্ঞাপন দিয়ে চুয়াডাঙ্গা আলী হোসেন সুপার মার্কেটের রবিউল ইসলামের সোহাগ অপটিকসে রোগী দেখা শুরু করেন। তিনি ওই চেম্বারের সাইনবোর্ড ও প্যাডে লিখেছেন ‘অপথালমোলজিস্ট (আই স্পেশাল), এমবিবিএস (এএম) ডিওএলভি চক্ষু, সিএমইউ (ঢাকা), বিএমডিসি রেজি. নং ডি ৬১৭০, বিএডিএস রেজি. নং ০০৯১০৪০, এক্স ইম্প্যাক্ট ভাসমান চক্ষু হাসপাতাল (ঢাকা)। গতকাল ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওই ডাক্তারের চেম্বার অভিযানের সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাইলে তিনি দেখাতে ব্যর্থ হন এবং ভুয়া ডিগ্রি লিখে রাখার বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেন। পরে তার ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সহযোগিতা করেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আবু হাসান মো. ওয়াহেদ রানা ও চুয়াডাঙ্গা সদর ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ ওহিদুল ইসলাম।

অন্য একটি সূত্র জানায়, ভুয়া ডাক্তার এমডি শামসুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য গত ৬ জুলাই  ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা প্রোগ্রাম প্রশাসক ডা. শাফিউল কবীর চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন বরাবর আবেদন করেন। তাতে বলা হয় শামসুর রহমান একজন ভুয়া ডাক্তার। নামের সাথে বিভিন্ন ডিগ্রি লাগিয়ে তিনি গরিব রোগীদের সাথে প্রতারণা করছেন। ওই আবেদনের পরই মূলত শামসুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসন আড়ি পাতা শুরু করে।