চির ভাস্বর একুশে আজ

চুয়াডাঙ্গায় মুক্তিযোদ্ধাদের অবমূল্যায়নে প্রতীকী প্রতিবাদ : যশোরে শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণের সময় বোমা বিস্ফোরণ
স্টাফ রিপোর্টার: আমার সোনার দেশের রক্তে রাঙানো ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি- আজ অমর একুশে। একুশে ফেব্রুয়ারি জাতির জীবনে চির ভাস্বর একটি দিন। আজ মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। অকুতোভয় সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারের মত মৃত্যুঞ্জয়ী ভাষাসৈনিকের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আজ। অমর একুশের প্রথম প্রহরে যশোরে শহীদ মিনার বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণের সময় বোমা বিস্ফোরণের পর পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। হুড়োহুড়িতে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এদিকে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ শহীদ মিনারে গতরাতে পুস্পমাল্য অর্পণের সময় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চুয়াডাঙ্গা ইউনিটকে ফুল দেয়ার জন্য ১২তম নম্বরে আহ্বান করা হলে বীর মুক্তিযোদ্ধার ক্ষুব্ধ হন। নামের তালিকা পেছনে রাখার কারণে আয়োজক কমিটির বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদের অংশ হিসেবে নির্ধারিত সময়ে মাইকে আহ্বানে সাড়া না দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা সকলের শেষে পুষ্পমাল্য অপর্ণ করেন।
এদিকে প্রতিটি বাঙালির বুকে বেজে উঠেছে, আলতাফ মাহমুদের সুরে আবদুল গাফফার চৌধুরীর সেই চির অম্লান কবিতা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি’। রাত বারোটা এক মিনিটে একুশের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রীয়ভাবে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর থেকেই শোকের ও শ্রদ্ধার প্রতীক শাদা-কালো পোশাকে, খালি পায়ে আবালবৃদ্ধবনিতা সবাই সমবেত হতে শুরু করেছেন শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। শুধু ঢাকাতেই নয়, চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ সারাদেশে স্কুল-কলেজে, জেলা ও থানা প্রশাসনের উদ্যোগে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে সর্বস্তরের জনগণ। পাড়ায়-মহল্লায় শিশু-কিশোরদের নিজ হাতে গড়া শহীদ মিনারও আজ সেজে উঠেছে নতুন প্রজন্মের ফুলেল শ্রদ্ধায়।
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালে মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয়। মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ’৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারি ছিলো ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণ ও শাসকগোষ্ঠীর প্রভুসুলভ মনোভাবের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং ভাষার ভিত্তিতে বাঙালির জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ। রাজধানী ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বিভিন্ন স্থানে আলোচনাসভাসহ নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে জাতি একুশের মহান শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ রাতে একুশের প্রথম প্রহর ১২-০১ মিনিটে সর্বপ্রথম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরপর পরই শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাত ১২টা ৪৫ মিনিটের পর সর্বসাধারণের জন্য পলাশী মোড় উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ছুটির দিন। এদিন সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র এবং বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলো একুশের বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
যশোর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বোমা বিস্ফোরণে ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় উপস্থিত জনগণ উত্তেজিত হলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। একুশের প্রথম প্রহরেই এ ঘটনা ঘটে। যশোর পুলিশের মুখপাত্র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সাফিন মাহমুদ বলেন, ফুল দেয়া শুরু হওয়ার পর পার বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় মানুষ আতঙ্কিত দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। এ সময় পরিস্থিতি উত্তেজিত হলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। তবে এসব ঘটনায় কেউ আহত হননি। এ ঘটনায় কিছুক্ষণ ফুল দেয়া বন্ধ থাকলেও পরে ফুল দেয়া শুরু হয়।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে জাতির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। রাত ১২টা ১টি মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় অমর একুশের কালজয়ী গান আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি বাজানো হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১২টা বাজার ৭ মিনিট আগে শহীদ মিনারে পৌঁছান। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ১২টা বাজার পূর্ব মুহূর্তে শহীদ মিনারে পৌঁছান। প্রথমে রাষ্ট্রপতি ও তারপর প্রধানমন্ত্রী পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা পরে মন্ত্রিবর্গ ও দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে দলের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
মন্ত্রিসভার সদস্যরা, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, কূটনীতিক বর্গ, আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ এবং উচ্চ পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। পরে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ শহীদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। ১৪ দলের পর বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ দলীয় নেতাদের নিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বিরোধী দলীয় নেতার পর তিন বাহিনীর প্রধানগণ পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে একুশের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পরে পর্যায়ক্রমে কূটনীতিকবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি শহীদ মিনারে তাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন।
রাষ্ট্রপতি শহীদ মিনারে পৌঁছুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ.আ.ম.স আরেফিন সিদ্দিক তাকে স্বাগত জানান। এরপরই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সহযোগী সংগঠন, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ছাত্র, যুব, শ্রমিক, কৃষক সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ একে একে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে শুরু করেন।
এদিকে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ শহীদ মিনারে গতরাত ১২টা ১ মিনিটে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন শুরু হয়। প্রথমেই চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতীয় সংসদের হুইপ চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি, জেলা প্রশাসনের পক্ষে জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে পুলিশ সুপর রশীদুল হাসান, উপাচার্য, ফাস্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি চুয়াডাঙ্গা, জেলা পরিষদ, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার পক্ষে মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান, অধ্যক্ষ চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ, অধ্যক্ষ চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজ, সিভিল সার্জন চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, বাংলাদেশ জাতীয় দল বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ও এর অঙ্গসংগঠন, স্বাধীনতার পক্ষের সকল রাজনৈতিক দল ও এর অঙ্গসংগঠন, অধ্যক্ষ চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রি কলেজ, জেলা আইনজীবী সমিতি, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখা, বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখা, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখা, ডায়াবেটিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ ডিপ্লোমা অ্যাসোসিয়েশন চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখা, স্বাধীনতা ডিপ্লোমা চিকিৎসক পরিষদ চুয়াডাঙ্গা, ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ডক্টরস চুয়াডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা জেলা জাকের পার্টি, উপপরিচালক জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিস, বন্ধন ৯৭ চুয়াডাঙ্গা সরকারি ভি.জে স্কুল, পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স, সাহিত্য পরিষদ, জেলা স্কাউট, বাংলাদেশ শিক্ষক-অভিভাবক ফোরাম চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখা, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশ বিক্রেতা সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখা, চেম্বার অব কমার্স চুয়াডাঙ্গা, জাতীয় সমাজ তান্ত্রিক দল জাসদ (ইনু) চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখা, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখা, জাতীয় সমাজতন্ত্রিক দল জেডিসি জেলা শাখা, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ চুয়াডাঙ্গা, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি চুয়াডাঙ্গা, এলজিইডি চুয়াডাঙ্গা, রেল বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
এদিকে শহীদ মিনারের পদদেশে পুষ্পমাল্য অর্পণের জন্য আয়োজক কমিটির তরফে আহ্বান জানানোর সময় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চুয়াডাঙ্গা জেলা ও সদর উপজেলা ইউনিট কমান্ডের নামের তালিকা বিলম্বে ঘোষণা করা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। ১২তম অবস্থানে আহ্বান করা হলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাতে সাড়া না দিয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ শুরু করেন। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ইউনিট কমান্ডার আ.শু বাঙালী বলেন, আমরা চুয়াডাঙ্গার আয়োজকদের কাণ্ডজ্ঞান দেখে হতবাক হয়েছি। ফলে প্রতীকী প্রতিবাদের মধ্যদিয়ে আমরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি। মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননার ধিষ্ঠতা নিয়েও আমরা প্রশ্ন তুলেছি।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, রাত ১২টা ১ মিনিটে জীবননগর মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শহীদ বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্যদিয়ে জীবননগরে একুশের কর্মসূচি শুরু করা হয়। উপজেলা পরিষদের পক্ষ হতে উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মো. আ. লতিফ অমল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরুল হাফিজ, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সুলতানা লাকি, ওসি (তদন্ত) গোলাম রসুল মোহাম্মদের নেতৃত্বে শহীদ বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।
এরপর একে একে বাংলাদেশ পুলিশ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জীবননগর পৌরসভা, জীবননগর প্রেসক্লাব, জীবননগর সাংবাদিক সমিতি, উপজেলা আওয়ামী লীগ, পৌর আওয়ামী লীগ, উপজেলা মহিলা লীগ, উপজেলা যুবলীগ, উপজেলা ছাত্রলীগ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিকদল জাসদ, জীবননগর পাইলট হাইস্কুল, জীবননগর সাহিত্য পরিষদ, জীবননগর পাইলট বালিকা বিদ্যালয়, আশরাফুল মডেল একাডেমি, জীবননগর মোটরশ্রমিক ইউনিয়ন, সাইন ক্লাব, জীবননগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ সমিতি, পোস্টঅফিসপাড়া শিশু সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান শহীদ বেদীতে পুষ্মমাল্য অর্পণ করে। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আমজাদ হোসেন।
একই সময়ে জীবনগর ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাস শহীদ বেদীতে ও জীবননগর আদর্শ মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসের শহীদ বেদীতে স্ব-স্ব কলেজের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। হাসাদাহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জুম্মাত মণ্ডলের নেতৃত্বে হাসাদাহ শহীদ মিনারেসহ উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া, উথলী, রায়পুর, বাঁকা ও সীমান্ত ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শহীদ বেদীতে মহান একুশ উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করার হয় বলে খবর পাওয়া গেছে।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, রাত ১২টা ১ মিনিটে সরকারি, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। প্রথমে উপজেলা চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দীন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহমেদ কামরুল হাসানের নেতৃত্বে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী খালেদুর রহমান অরুন, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আ.হ.ম শামীমুজ্জামান, আলমডাঙ্গা থানার ওসি শেখ আতিয়ার রহমান, ওসি (তদন্ত) মেহেদী রাসেলসহ কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ। এরপর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান কাদির গনু ও উপজেলা চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইয়াকুব মাস্টার, পৌর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আবু মুসা, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী খালেদুর রহমান অরুন, সাংগঠনিক সম্পাদক আতিয়ার রহমান, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, বিআরডিবি চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মহিদ, আহসানউল্লাহসহ দলীয় নেতাকর্মী। এরপর আলমডাঙ্গা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধা ডা. সাহাবুদ্দিন আহমেদ সাবু ও উপজেলা চেয়ারম্যান হেলাল ইদ্দেনের নেতৃত্বে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আহসান মৃধা, আব্দুল গণিসহ অনেকে। এরপর আলমডাঙ্গা থানার পক্ষ থেকে অফিসার ইনচার্জ শেখ আতিয়ার রহমান ও ওসি (তদন্ত) মেহেদী রাসেলের নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এসআই জিয়াউর রহমানসহ থানা স্টাফ। এরপর আলমডাঙ্গা পৌর মেয়র হাসান কাদিও গনুর নেতৃত্বে পৌরসভার পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। উপস্থিত ছিলেন জহুরুল ইসলাম স্বপন, আলাল আহমেদ, আব্দুল গাফফার, মতিয়ার রহমান ফারুক, জাহিদুল ইসলাম, ফারুক,হাসান, ভোলাসহ কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ। উপজেলা বিএনপির পক্ষে বিএনপির সভাপতি হাজী মজিবর রহমান, সানোয়ার হোসেন লাড্ডুসহ নেতাকর্মী। এরপর যথাক্রমে জেলা জাসদের সভাপতি সাবেক পৌর চেয়ারম্যান এম সবেদ আলী ও উপজেলা সভাপতি গোলাম সরোয়ারের নেতৃত্বে জাসদের পক্ষ থেকে, উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি জাহিদ হোসেন রেন্টুসহ নেতাকর্মী। উপজেলা যুবলীগ ও পৌর যুবলীগের পক্ষে আহসান উল্লাহ, আব্দুল গাফফার, সোনহার, মনা, ফারুক, পিন্টু, মিজান। উপজেলা যুবলীগের পক্ষে সাজ্জাদুল ইসলাম স্বপন, শাহিন রেজা শাহিন, পলাশ, টুকুলসহ অনেকে। উপজেলা পৌর ও কলেজ ছাত্রলীগের পক্ষে আলাল আহমেদ, নয়ন সরকার, আশরাফুল, জাইদুল, তমালসহ ছাত্রলী নেতাকর্মী। আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজ পক্ষে অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক আবু হাসান বাচ্চু, প্রভাষক তাপস রশিদসহ অনেকে। কৃষকলীগ, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগ, মহিলালীগ, আলমডাঙ্গা মহিলা কলেজ, আলমডাঙ্গা বহুমুখি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, একুশের প্রথম প্রহরে রোববার রাত ১২টা ০১ মিনিটে মেহেরপুর শহীদ ড. সামসুজ্জোহা নগর উদ্যানস্থ শহীদ স্মৃতি সৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন ও সংরক্ষিত মহিলা এমপি সেলিনা আক্তার বানু।
এরপর পর্যায়ক্রমে জেলা প্রশাসনের পক্ষে জেলা প্রশাসক মো. শফিকুল ইসলাম, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে পুলিশ সুপার হামিদুল আলম, জেলা মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে ডেপুটি কমান্ডার আলতাফ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সাবেক এমপি জয়নাল আবেদীন, জেলা পরিষদের পক্ষে অ্যাড. মিয়াজান আলী, পৌরসভার পক্ষে মেয়র আলহাজ মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু, ভাষা শহীদদের পক্ষে ভাষা সৈনিক ইসমাইল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষে সহসভাপতি আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের পক্ষে সভাপতি তহমিনা আবেদীন, সদর থানা আওয়ামী লীগের পক্ষে সভাপতি আলহাজ মো. গোলাম রসুল, শহর আওয়ামী লীগের পক্ষে সাধারণ সম্পাদক আক্কাস আলী, জেলা কৃষক লীগের পক্ষে মাহাবুব উল আলম শান্তি, জেলা যুবলীগের পক্ষে আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রিটন ও যুগ্ম আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম পেরেশান, জেলা ছাত্রলীগের পক্ষে বারিকুল ইসলাম লিজন, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের পক্ষে আহ্বায়ক মাহফিজুর রহমান পোলেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক রিংকু মাহমুদ, সদর থানা ছাত্রলীগের পক্ষে সভাপতি জুনায়েদ ইমতিয়াজ ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম আনন্দ, জেলা বাস্তুহারা লীগের পক্ষে সভাপতি ফিরোজ আলী ও সাধারণ সম্পাদক রাফিউল ইসলাম রকি, স্বেচ্ছাসেবক লীগের পক্ষে মতিউর রহমান মতিন ও মিসকিন আলী, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের পক্ষে চন্দন, শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের পক্ষে রানা, জেলা জাতীয় পার্টির পক্ষে সভাপতি আব্দুল হামিদ, জাতীয় পার্টির নেতা কুতুবউদ্দিন, ইকবাল হোসেন ও কামারুল ইসলাম, মেহেরপুর সরকারি কলেজের পক্ষে অধ্যক্ষ ড. আনোয়ারুল করিম, মহিলা কলেজের পক্ষে অধ্যক্ষ আসাফ-উদ দৌল্লা, জেলা আইন-জীবী সমিতির পক্ষে অ্যাড. নজরুল ইসলাম, পৌর কলেজের পক্ষে অধ্যক্ষ ইকরামুল আজিম, জেলা শিল্পকলার পক্ষে সহসভাপতি প্রভাষক নূরুল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান মফিজ, জেলা উদীচীর পক্ষে সভাপতি অ্যাড. ইব্রাহীম শাহীন ও সহসভাপতি ফৌজিয়া আফরোজ তুলি, মেহেরপুর ক্লাবের পক্ষে সহযোগী অধ্যাপক হাসানুজ্জামান মালেক, পাবলিক লাইব্রেরির পক্ষে সাধারণ সম্পাদক আল মামুন অনল, সাহিত্য পরিষদের পক্ষে সভাপতি নূরুল আহমেদ, অরণী থিয়েটারের পক্ষে নিশান সাবের, মৃত্তিকা গ্রুপ থিয়েটারের পক্ষে মানিক হোসেন, ব্লাক অ্যান্ড হোয়াইটের পক্ষে সুমন আযম, জাগো বাঙালির পক্ষে সভাপতি সালেহীন আলম অঙ্কুর, প্রথম আলো বন্ধুসভার পক্ষে ডা. আবুল বাশার ও জানে আলম, এলজিই ডি’র পক্ষে উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান প্রমুখ পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষে শহীদ বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।
মুজিবনগর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মুজিবনগরে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। শহীদ বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হেমায়েত উদ্দিন। পরে মুজিবনগর থানার পক্ষে ওসি কাজী কামাল হোসেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের পক্ষে কমান্ডার আব্দুল জলিল, উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষে মুজিবনগর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু, উপজেলা যুবলীগের পক্ষে সভাপতি কামরুল হাসান চাঁদু, উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষে সভাপতি রোকনুজ্জামান রোকন, উপজেলা কৃষকলীগের পক্ষে সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সম্পাদক মনিরুজ্জামান টিটু, বাগোয়ান ইউপি পরিষদের পক্ষে চেয়ারম্যান আয়ূব হোসেন পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করা হয়।
গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, একুশের প্রথম প্রহরে 12টা 01 মিনিটে মেহেরপুর গাংনী উপজেলা পরিষদ চত্বরে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাহাত মান্নান, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের পক্ষে কমান্ডার মুন্তাজ আলী, গাংনী থানা পুলিশের পক্ষে ওসি আকরাম হোসেন, গাংনী প্রেসক্লাবের পক্ষে সভাপতি রমজান আলী, সম্পাদক তৌহিদ-উদ দৌলা রেজা, উপজেলা প্রেস ক্লাবের পক্ষে সভাপতি আমিরুল ইসলাম অল্ডাম ও জুলফিকার আলী কানন, মুক্তিযুদ্ধের শহীদ স্মৃতি পাঠাগারের পক্ষে সম্পাদক একেএ শফিকুল ইসলাম, সহসভাপতি শহিদুল ইসলাম শাহা, ইয়াছিন রেজা, কমরেড জালাল উদ্দীন, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষে সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম তারা, স্কাউটসের পক্ষে সাধারণ সম্পাদক আলমগীর, ছাত্রলীগের পক্ষে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাসান রেজা সেন্টু ও সম্পাদক বিপ্লব হোসেনসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে নীরবতা পালন পরিচালনা করেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম শফিকুল আলম। পরে ভাষা শহীদসহ মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন গাংনী উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের পেশ ইমাম ইলিয়াছ হোসেন। এদিকে সকালে সরকারি কর্মসূচির পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে প্রভাতফেরি ও শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করা হবে।