চিরকুটে লেখা-আমার মৃত্যুর জন্য কেহ দায়ী নহে : পুলিশ যেন ময়নাতদন্ত না করে

চুয়াডাঙ্গায় অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার অজ্ঞাত পরিচয়ের পুরুষের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার: সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা মধ্যবয়সী অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তিকে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি। গতকাল চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের নিকটস্থ পুরাতন স্টেডিয়ামের পাশ থেকে উদ্ধার করে গতকাল রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়। ভর্তির ঘণ্টা খানেকের মাথায় মারা যান আনুমানিক ৫০-৫৫ বছর বয়সী অজ্ঞাত পরিচয়ের পুরুষ।
পরিচয় না মিললেও ফুলহাতা শাটের বুক পকেটে থাকা মানিব্যাগের চিরকুটে পাওয়া গেছে আত্মহত্যার নমুনাপত্র। যদিও চিরকুটের লেখা নিয়েও রয়েছে সন্দেহ। সিগারেটের প্যাকেটের কাগজে লেখা, ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম, আমার মৃত্যুর জন্য কেহ দায়ী নহে। আমি নিজেই এমন করছি। আর আমার মৃত্যুর পর কেহ যদি লাশ পান, তবে পুলিশে যেন আমার বডির পোস্টমটের্ম না করে। দোহায় আল্লার। আমার শরীর যেন না কাটে। আর আঞ্জুমান যেন জানাজা করে আমার দাফন করে। কারণ আমি আল্লার বান্দা ও রসুলের উম্মত।’ নিচে অস্পষ্টভাবে করা স্বাক্ষর। এছাড়াও পকেটে গেছে দুটি সিমকার্ড। যার একটি গ্রামীণের নম্বর ০১৭৩০৭০৯৮২২। অপর সিমটি বাংলালিংকের। তবে তার নম্বর জানা সম্ভব হয়নি। আইএফআইসি ব্যাংকের একটি এটিএম ভিসা কার্ড রয়েছে। তাতে লেখা নাম ফজলুল হক। বিস্তারিত ঠিকানা না পাওয়ায় লাশ গতরাতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে রাখা ছিলো। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই ভবতোষ সুরতহাল রিপোর্ট প্রণয়ন করেছেন। পুলিশ বলেছেন, মুখে দাঁড়ি অর্ধেকের বেশি পাকা। বয়স বলা কঠিন। তবে ধারণা করা হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। পরনে লুঙ্গি ও গায়ে লাল-নীল ও কালো দাগের শাদা শার্ট। কোনো কারণে নিজেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে নাকি চক্রান্ত করে হত্যা? এ প্রশ্নের জবাব খোঁজা হচ্ছে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা স্টেশনের অদূরেই পুরাতন স্টেডিয়াম। এ স্টেডিয়ামের পাশেই গতকাল সকাল ১১টার পর থেকে অনেকেই দেখেন অসাড় হয়ে পড়ে আছে এক ব্যক্তি। তাকে ঘিরে কৌতূহলী মানুষের ভিড় জমলেও উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার তেমন তাগিদ ছিলো না প্রায় কারোর মধ্যেই। তবে আলমগীর নামের এক অটোচালকের সহযোগিতায় কয়েক পথচারী ওই অজ্ঞাত পরিচয়ের অজ্ঞান ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেয়ার উদ্যোগ নেন। অটোচালক হাসপাতালে নিয়ে ভর্তিও করান। চিকিৎসা শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত সংজ্ঞাহীন অবস্থাতেই মারা যান তিনি। ফলে তার মুখ থেকে পাওয়া যায়নি কোনো তথ্য। হাসপাতালের তরফে খবর দেয়া হয় পুলিশে। সদর থানার এসআই ভবতোষ সুরতহাল রিপোর্ট প্রণয়ন করেন। লাশ রাখেন মর্গে। আজ দুপুরের মধ্যে পরিচয় না মিললে আঞ্জুমান-মফিদুল ইসলাম কমিটির মাধ্যমে দাফনের প্রক্রিয়া করা হতে পারে।