চাঁদা আদায়ের সময় দু চাঁদাবাজ গ্যাঁড়াকলে : গণধোলাই শেষে পুলিশে সোপর্দ

দামুড়হুদার নতিপোতায় চাঁদাবাজক্রের অপতৎপরতা : পুলিশের কৌশলী অভিযান

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদায় মোবাইলফোনে চাওয়া চাঁদার টাকা আদায়ের সময় দু চাঁদাবাজ জনতার হাতে ধরা পড়েছে। হাতেনাতে আটকের পর দু চাঁদবাজকে গণধোলাই শেষে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। পুলিশ অবশ্য বলেছে, চাঁদাবাজ ধরতে পুলিশই বিশেষভাবে ফাঁদ পাতে। ফাঁদে পা দিয়েই ধরা পড়েছে দু চাঁদাবাজ।

আটক চাঁদাবাজচক্রের হোতা বাবু ওরফে সুমন (৪০) দামুড়হুদা উপজেলার চারুলিয়া গ্রামের জুলমত খাঁর ছেলে এবং তার সহযোগী একই গ্রামের আনোয়ারের ছেলে আলমগীর (৩৫)। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নতিপোতা গ্রামের আরমানের স্ত্রী ছবিরনের বাড়িতে চাঁদার টাকা নিতে গেলে পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা এলাকাবাসী তাদেরকে আটক করে।

ভুক্তভোগী ছবিরন নেছা জানান, গত ৩/৪ দিন ধরে সুমন পরিচয়ে ০১৯৩৪-৫৫৬৩৮৯ নম্বর মোবাইল থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলো। আমি গরিব মানুষ। আমার স্বামী একজন ডে লেবার। অতো টাকা কোথায় পাবো বললে ওই চাঁদাবাজ সুমন বলে, ভালোয় ভালোয় ২০ হাজার টাকা চাঁদা দিবি নইলে তোর মেয়েকে মেরে ফেলবো। এ রকম হুমকির মুখে আমিসহ আমার পরিবারের লোকজন দিশেহারা হয়ে পড়ি। এরই এক পর্যায়ে আমরা দামুড়হুদা মডেল থানার ওসিকে বিষয়টি জানালে তিনি ওই চাঁদাবাজচক্রকে ধরতে টোপ দিতে বলেন এবং আশপাশে লোকজন রেডি রাখতে বলেন। চাঁদার টাকা নিতে আসার সাথে সাথে আমাকে জানাবেন বলেও তিনি জানান।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৪টার দিকে ওই দু চাঁদাবাজ চারুলিয়া থেকে চাঁদার টাকা নিতে আসে নতিপোতা উত্তরপাড়ার আরমানের স্ত্রী ছবিরনের বাড়িতে। ওই দু চাঁদাবাজ বাড়িতে প্রবেশ করলে ছবিরন তাদেরকে বসতে দেন এবং গোপনে পুলিশ ও পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা এলাকাবাসীকে জানান। এলাকাবাসী পুরো বাড়ি ঘিরে ফেলে এবং ওই দু চাঁদাবাজকে ধরে গণধোলাই দেয়। ঘটনার সাথে সাথে ছুটে যান ভগিরথপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এএসআই সিরাজুল ইসলাম।

দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি কামরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি জানার পর ওই দিন থেকেই আমি মোবাইল ট্র্যাকিং শুরু করি। আটক ওই সুমন নামধারী চাঁদাবাজ বাবু তার সহযোগী আলমগীর আমাদের পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে ধরা খেয়েছে। তিনি আরো বলেন, ইতঃপূর্বেও ওই বাবু সুমন পরিচয়ে এক ইটভাটা মালিকসহ বেশ কয়েকজনের কাছে চাঁদা চেয়েছে। তাদেরকে রাত ১০টার দিকে থানায় নেয়া হয়। বর্তমানে তাদেরকে হাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসবাদ করা হচ্ছে। তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, কেউ যদি মোবাইলফোনে চাঁদা দাবি করে, তাহলে আপনারা টাকা না দিয়ে আমার সাথে যোগাযোগ করবেন। আপনারা ভয় পাবেন না। কারণ যারা মোবাইলফোনে চাঁদা দাবি করে তারা খুব বেশি শক্তিশালী নয়। এ ঘটনায় ভগিরথপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এএসআই সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে আটক ওই দুজনের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেছেন।