চট্টগ্রামে হেফাজত নেতার মাদরাসার ছাত্রাবাসে বিস্ফোরণ : আটজন আহত

স্টাফ রিপোর্টার: চট্টগ্রাম নগরীর লালখানে জামেয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদরাসার ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে গতকাল সকালে বিস্ফোরণে অন্তত আটজন মাদরাসা ছাত্র আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে কক্ষটি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে। উড়ে গেছে দরজা-জানালার কাঁচ।

মহানগরী পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বনজ কুমার মজুমদার বলেন, বিস্ফোরণস্থল তল্লাশি করে তিনটি তাজা গ্রেনেড এবং ১০০টির মতো গ্রেনেডের খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া বিস্ফোরণের পর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিত্সা নিতে যাওয়া মারদাসার চার ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। চারতলা ছাত্রাবাসের তৃতীয় তলার একটি কক্ষে এ বিস্ফোরণ ঘটেছে।

মাদরাসার অধ্যক্ষ এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা মুফতি ইজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কক্ষটিতে রক্ষিত আইপিএস’র পুরনো ব্যাটারি থেকে আগুন লাগে। এ ব্যাটারিগুলো যে মেয়াদোত্তীর্ণ তা ছাত্ররা জানতো না। সকাল ১১টায় একই সাথে ওই কক্ষে রক্ষিত কয়েকটি স্টোভেও আগুন ধরে গেলে পুরো কক্ষটি পুড়ে যায়।

ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনেন। চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ডিএডি আবদুল মালেক বলেন, বিস্ফোরণের কারণেই মাদরাসার ছাত্রাবাসে অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। কারণ ক্ষতিগ্রস্ত কক্ষটির জানালার গ্রিল ও অন্যান্য উপকরণ যেভাবে বেঁকে ও দুমড়েমুচড়ে গেছে তা সাধারণ অগ্নিকাণ্ডে সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস ঘটনাটির তদন্ত করছে। তারা সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য নেয়া শুরু করেছেন।

ফায়ার ব্রিগেডের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জানানো হয়, সকালে সংঘটিত বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতদের মধ্যে চারজনের নাম তারা জেনেছেন। এরা হলো করিম, আমানুল্লাহ, খালেক ও আবদুল্লাহ। অপরদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও পুলিশ ফাঁড়ি থেকে জানানো হয় নুরুন্নবী ও সালমান নামের দু মাদরাসা ছাত্রকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার পরই পুলিশের ডিবি ক্রাইমসিন টিম ও এক্সপ্লোসিভ ডিসপোজাল টিম, সিআইডিসহ অন্যান্য সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত শুরু করেন। পুলিশ মাদরাসাটিতে পাহারা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে। ঘটনাস্থল থেকে মহানগরী পুলিশের এডিসি (উত্তর) শহিদুল্লাহ বলেন, ডিবির বোমা বিশেষজ্ঞরা ক্ষতিগ্রস্ত কক্ষটিসহ পুরো ভবনটি তল্লাশি করছেন। তারা বিস্ফোরণের ধরণ ও আলামত উদ্ধারের কাজ চালাচ্ছেন।

এদিকে হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, লালখান বাজার মাদ্রাসার দু ছাত্র আহত অবস্থায় হালিশহর জেনারেল হাসপাতালে গোপনে চিকিত্সা নিতে গেলে তাদেরকে পুলিশ আটক করে। এদের একজনের নাম সালমান। অপরজন আগুনে পুড়ে সঙ্কটাপন্ন থাকায় তার নাম জানা যায়নি। এ দুজনকে পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়।