গাংনীর হেমায়েতপুরে অনুমোদন ছাড়াই সার্কাস : নগ্ন নৃত্য ও জুয়ার ব্যাপক প্রস্তুতি

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার গজারিয়া হেমায়েতপুরে গতকাল বুধবার থেকে আবারো শুরু হয়েছে সেই সার্কাস। সার্কাস ঘিরে নগ্ন নৃত্য ও জুয়ার আসরের ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানান এলাকার কয়েকজন। জেলা প্রশাসক অনুমোদন দিয়েছেন বলে আয়োজকরা দাবি করলেও এর সত্যতা পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাস তিনেক আগে গজারিয়া হেমায়েতপুর গ্রামে সার্কাসের আয়োজন করেন স্থানীয় কয়েকজন। সার্কাসের নামে নগ্ন নৃত্য ও জুয়ার আসর বসানোর ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল আমিনের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত তা বন্ধ করে দেন। তারপর থেকে সার্কাসের অনুমোদনের লক্ষ্যে গাংনী থানা, পুলিশ সুপারের কার্যালয় ও জেলা প্রশাসকের দপ্তরে দৌড়ঝাঁপ করেন আয়োজকরা। অনুমোদন পাওয়া গেছে মর্মে দাবি করে গতকাল বিকেলে সার্কাস চালুর বিষয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। সেমতো সন্ধ্যার পর থেকেই সার্কাস ময়দানে এলাকার মানুষের ভিড় শুরু হয়। রাত ৯টার পরে সার্কাস শো আরম্ভ হয়। সার্কাসের প্যান্ডেল তৈরি করা হলেও মূলত আয়োজক কমিটির মূল উদ্দেশ্য নগ্ন নৃত্য ও জুয়ার আসর। কেননা এর আগে সার্কাস শুরু হলে লোকসানের মুখে পড়েন তারা। তাই গতকাল বিকেলে নাটোর থেকে আনা হয়েছে কয়েকজন নারী নৃত্যশিল্পী। প্রস্তুত রয়েছে বেশ কয়েকটি জুয়ার বোর্ড। অনুষ্ঠান শুরু হলে কিছু মানুষ সার্কাস দেখায় ব্যস্ত থাকেন। সেই ফাঁকে সার্কাসের প্যান্ডেলের আশেপাশে শুরু হবে জুয়ার আসর এবং মধ্যরাতে নগ্ন নৃত্য। এ নৃত্য দেখার জন্য এলাকার উঠতি বয়সী যুবক এবং খেটে খাওয়া মানুষগুলো ভিড় করে। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটবে না বলে জানান এলাকার কয়েকজন।

গতকাল সকালে আয়োজক কমিটির পক্ষে এক ব্যক্তি গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) মোবাইলে কল করে জানান যে সার্কাসের অনুমোদন মিলেছে। ওসি তাদের বলেছেন, অনুমোদনের অফিসিয়াল কাগজপত্র না পাওয়া পর্যন্ত সার্কাস চলবে না। এদিকে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় মেহেরপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে সার্কাসের অনুমোদনের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। সার্কাসের অনুমতি হয়নি বলে ডিসি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে। স্থানীয়রা আরো জানান, বর্তমানে এসএসসি ও ডিগ্রি পরীক্ষা চলছে। এ সময় তীব্র আওয়াজে মাইক বাজিয়ে সার্কাস চালানোর কারণে ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ায় চরম বিঘ্ন ঘটবে। তাছাড়া সার্কাস, জুয়ার আসর ও নগ্ন নৃত্য ঘিরে এলাকার আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতির আশঙ্কা করছেন তারা। তাই দ্রুত সার্কাস ও নগ্ন নৃত্যের অনুষ্ঠান বন্ধের ব্যাপারে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও গাংনী থানার ওসির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এলাকাবাসী। এ বিষয়ে গতরাতে যোগাযোগ করা হলে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকরাম হোসেন জানান, অনুমোদন ছাড়া সার্কাস চলতে দেয়া হবে না। নগ্ন নৃত্য ও জুয়ার আসর বসালে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে শেষ খবর পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলছিলো।