গাংনীর হাড়িয়াদ সড়কে যানবাহনে গণছিনতাই : মোটরসাইকেল ও টাকাসহমালামাল লুট

গাংনী প্রতিনিধি:মেহেরপুর গাংনী-বারাদী সড়কের হাড়িয়াদহ মাঠের মধ্যে তাণ্ডব চালিয়েছে ছিনতাইকারীরা। মোটরসাইকেল, টাকা, মোবাইলফোন ছিনতাইয়ের পাশাপাশি ছিনতাইকারীদের হামলায় কয়েকজন পথচারী আহত হয়েছেন। গতরাত সাড়ে ৯টার দিকে ঘণ্টাব্যাপি এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, পুর্বমালসাদহ-হাড়িয়াদহ গ্রামের মাঝামাঝি একটি ইট ভাটার সামনে সড়কের ওপর গাছ ফেলে পথচারীদের গতিরোধ করে একদল ছিনতাইকারী। অস্ত্রধারী ২৫-৩০ জন ছিনতাইকারী প্রথমে কয়েকটি ভ্যান ও আলগামন দাঁড় করায়। যাত্রী ও চালকদের বেধড়ক মারপিট করে নগদ টাকা ও মোবাইলফোন ছিনিয়ে নেয়। গাংনী বাজারের সবজিব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম, বড়া বিক্রেতা সাহারুল ইসলাম, চুনব্যবসায়ী হোচেন আলী হাওলাদার ও মিষ্টি বিক্রেতা আব্দুল মজিদের কাছ থেকে নগদ অর্ধ লক্ষাধিক টাকা লুটে নেয়। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের সকলেরই বাড়ি হাড়িয়াদহ গ্রামে। তারা ব্যবসার কাজ শেষে গাংনী বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন।

ভুক্তভোগীরা আরো জানান, ছিনতাইকারীরা তাদের হাত-পা, মুখ বেঁধে রাস্তার পাশে ফেলে রাখে। এসময় হাড়িয়াদহ গ্রামের ইউনুছ আলীর ছেলে রাজু আহম্মেদ মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। ছিনতাইকারীরা তাকেও আটকে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ছিনিয়ে নেয়। একে একে দুটি ট্রাক, একটি মাইক্রোবাস ও একটি মিনি ট্রাক ঘটনাস্থলে এসে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে। চালক ও যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ লক্ষাধিক টাকা, ৮টি মোবাইল সেট এবং সোনার আংটি লুটে নেয়।

চুয়াডাঙ্গার কুলপালা গ্রামের জাকিরুল ইসলাম জানান, তিনি মিনি ট্রাকযোগে প্রায়ই ওই সড়ক দিয়ে কিশোরগঞ্জ থেকে হাঁসের বাচ্চা নিয়ে আসেন। গতকাল হাঁসের বাচ্চা আনতে যাওয়ার পথে ঘটনাস্থলে গাছ পড়ে থাকতে দেখে থামতে বাধ্য হন। এসময় হাফ প্যান্ট পরা ছিনতাইকারীরা তার শরীরে অস্ত্র ঠেকিয়ে নগদ টাকা ও দুটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। পরে মুক্ত হয়ে তিনি বাড়ি ফিরেছেন। হাঁসের বাচ্চা আনতে যাওয়া হয়নি। ছিনতাইয়ের কবলে পড়া একটি ট্রাকের মালিক বারাদী চাঁদপুর গ্রামের আহসান হাবীব। ভাড়াশেষে গাংনীর তেল পাম্প থেকে জ্বালানি তেল নিয়ে চাঁদপুরের উদ্দেশে যাওয়ার সময় ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে ট্রাকটি। চালকের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়া হয়। ছিনতাইয়ের কবলে পড়া মাইক্রোবাসে বেশ কয়েকজন যাত্রী ছিলেন। তবে মাইক্রোবাসের মালিক কিংবা যাত্রীদের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি ছিনতাইয়ের কবলে পড়া কয়েকজন।

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা গেছে, হাড়িয়াদহ-পুর্বমালসাদহ মাঠের ওই স্থানটি ছিনতাইয়ের স্থান হিসেবে দীর্ঘদিন থেকে কুখ্যাতি পেয়েছে। আর তাইতো সন্ধ্যা হলেই সচরাচার কেউ ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করেননা। পথচারীরা ধানখোলা হয়ে ঘুরে আসা-যাওয়া করেন। বেশ কিছুদিন ওইস্থানে ছিনতাই বন্ধ থাকলেও গতকালের ঘটনায় একাকার মানুষের মাঝে নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। প্রতি বছর পাটের মরসুমে ছিনতাইয়ের ধারাবাহিকতায় আবারো ছিনতাই শুরু হয়েছে বলে মত প্রকাশ করলেন স্থানীয় অনেকেই। সড়কে দু’ধারে পাটের পর পাট ক্ষেত। এতে সহজেই অপরাধ করে পার পেয়ে যায় ছিনতাইকারী কিংবা ডাকাতরা। তাই পুলিশের সজাগ টহল এবং ছিনতাইকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগীসহ এলাকার মানুষ।