গাংনীর জোড়পুকুর-চোখতোলায় সড়ক সংস্কার কাজে অনিয়ম

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর-কুষ্টিয়া প্রধান সড়কের গাংনী উপজেলার জোড়পুকুর-চোখতোলা এক কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার কাজে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গতশুক্রবার সকাল থেকে কাজ শুরু হলেও সাইডে নেই সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও কার্যাদেশ মতো সংস্কার হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয় লোকজন।

Gangni road maintenance pic_03.05.14_(5)

জানা গেছে, মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীন ওই সড়কের এক কিলোমিটার সংস্কার কাজের কার্যাদেশ পায় রাজবাড়ীর মেসার্স আরজু রহমান নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ১৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকার মূল বাজেটের ২৮ ভাগ ছাড়ে চূড়ান্ত ব্যয় দাঁড়ায় প্রায় ১১ লাখে। কার্যাদেশে সাত মিলিমিটার সিলকোড, কার্পেটিং, সাববেজ-২ সহ আরো কয়েকটি শ্রেণির কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশনা রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গতশুক্রবার সকাল থেকেই জোড়পুকুর বাজারের দক্ষিণ দিক থেকে কাজ শুরু হয়। গতকাল শনিবার পর্যন্ত প্রায় অর্ধেক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে শুধু সিলকোডের কাজ করা হচ্ছে। ভাঙা কিংবা দেবে যাওয়া স্থানে সাববেজ-২ কিংবা কার্পেটিং করা হচ্ছে না। তাছাড়া বিটুমিন কম দেয়া, নিম্নমানের বালি ও মিক্সিঙে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী।

বিভিন্ন সূত্রে আরো জানা গেছে, কয়েকদিন আগে ওই সড়কে চোখতোলা মাঠ এলাকায় সংস্কার কাজ (কার্পোটিং) করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এতে বর্তমান ঠিকাদারের কার্পেটিং কাজ করতে হচ্ছে না। কার্পেটিংসহ অন্যান্য কাজ না করে যে অর্থ বাঁচানো হচ্ছে তা ঠিকাদার ও প্রকৌশলীরা ভাগ-বাটোয়ারা করবেন এমন অভিযোগ কয়েকজন ঠিকাদারের ও এলাকাবাসীর। গতকালশুক্রবার দুপুরে সরজমিন ওই সড়কে গিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউকে পাওয়া যায়নি। কর্মরত শ্রমিকরা জানান, দায়িত্বপ্রাপ্ত কার্য সহকারী আশরাফ হোসেন নামাজে গেছেন। তবে আশরাফ হোসেনের মোবাইলফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে তিনি মোবাইল রিসিভি করেননি। একই অবস্থা নির্বাহী প্রকৌশলীর। তিনিও মোবাইলফোন রিসিভ করেননি। গতকাল শনিবারও সংস্কারস্থলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাউকে দেখা যায়নি। শ্রমিকরা তাদের ইচ্ছেমত কাজ করে যাচ্ছেন। জানতে চাইলে ঠিকাদার আরজু রহমান জানান, ঠিকাদার সাইডে গেলে কাজ ভাল হবে না।প্রকৌশলীদের এমন মন্তব্যে তিনি সেখানে যাচ্ছেন না। কার্যাদেশ চাইলে তিনি বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলী তাকে সরবরাহ করেননি। কার্যাদেশ ছাড়া কিসের ভিত্তিতে কাজ করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশনামত কাজ করা হচ্ছে। কাজের অবস্থা হিসাব করে বিল দাখিল করা হবে।

স্থানীয় কিছু ঠিকাদারসহ বিভিন্ন সূত্রে আরো জানা গেছে, দরপত্র কিংবা কার্যাদেশে কাজের যে শ্রেণি বিন্যাস করা হয়েছে তাতে বাজেটের অর্ধেকের কম অর্থে কাজ সম্পন্ন করার পাঁয়তারা করছেন ঠিকাদার এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। বাঁচানো অর্থ নির্বাহী প্রকৌশলী আনিচ্ছুজ্জামান, উপ সহকারী প্রকৌশলী আহসান আলী ও ঠিকাদার ভাগ-বাটোয়ারার পাঁয়তারা করছেন। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করলেন ঠিকাদার আরজু রহমান।