গাংনীতে গির্জায় ডাকাতদলের হামলা : নগদ টাকা মোবাইলফোনসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার চৌগাছা জপমালা রাণীর গির্জায় গত রোববার রাত ২টার দিকে হানা দেয় একদল অস্ত্রধারী ডাকাত। গির্জায় কীর্তন পরিবেশনকারীদের নিকট থেকে ৩৫টি মোবাইলফোন ও নগদ টাকাসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটে নেয়। এ সময় ভক্ত সুফল মণ্ডল (৪০) ও জয়ন্ত মণ্ডলকে (৪২) বেধড়ক মারপিট করে ডাকাতদলের সদস্যরা। এদের দুজনের বাড়ি মুজিবনগর উপজেলার ভবরপাড়া গ্রামে।

জানা গেছে, ঘটনার সময় ধর্মীয় কীর্তন চলছিলো। এসময় ১৫/২০ জনের অস্ত্রধারী ডাকাতদল গির্জায় প্রবেশ করে। এ সময় উপস্থিত ভক্তদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইলফোন লুটে নেয়। সুফল মণ্ডল আরো জানিয়েছেন, এ সময় তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন ঘুম থেকে উঠে দেখেন অনেক লোকের ভিড়। আপনারা কারা? এমন প্রশ্ন করতেই কয়েকজন এসে তাকে লোহার রড দিয়ে মারপিট শুরু করে। তার ডান হাত ভেঙে যায়। জয়ন্ত মণ্ডলও তাদের মারধরের শিকার হন। ডাকাতদলের সদস্যরা খ্রিস্টানদের ধর্মীয়গ্রন্থ পবিত্র বাইবেলসহ জিনিসপত্র তছনছ করে। মা মরিয়মের গলা থেকে রোজারি মালা লুটে নেয়। এ ঘটনায় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। রাতেই সুফল মণ্ডলকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

চার্চ সূত্রে আরো জানা গেছে, গির্জার পশ্চিম দিকের পাঁচিল ভেঙে ডাকাতদল প্রবেশ করে। গির্জায় লুটপাটের পর ক্যাটেখিস্ট সমর কুমার বিশ্বাসের বাড়িতে হানা দেয়। দরজা খোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে স্থান ত্যাগ করে ডাকাতদল। পরদিন সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী। গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাছুদুল আলম জানিয়েছেন, রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এদিকে গতকালই গাংনী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন গির্জার ক্যাটেখিস্ট (ধর্মীয় শিক্ষক) সমর কুমার বিশ্বাস। অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। বাৎসরিক অনুষ্ঠানে ডাকাতি করে মালামাল লুট ও হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তেঁতুল নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় গাংনী থানা পুলিশ তেঁতুলকে আটক করে। আটক তেঁতুল গাংনী পৌর এলাকার চৌগাছা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে।

উল্লেখ্য গত দু মাসে আরো কয়েকবার খ্রিস্টান পল্লিতে হানা দেয় ডাকাতদলের সদস্যরা।