খালেদা জিয়া নেতা-কর্মী বিচ্ছিন্ন : অনেকে আত্মগোপনে

স্টাফ রিপোর্টার: বিরোধীদলীয় নেতা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। তার গুলশানের বাড়ির সামনে শুক্রবার রাত থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার অতিরিক্ত সদস্য অবস্থান নেয়ায় নেতা-কর্মীদের কেউ সেখানে যাতায়াত করতে পারছেন না। তবে গতরাতে অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দারের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের একটি দল খালেদা জিয়ার সাথে তার বাসায় সাক্ষাত করেছেন। ব্যক্তিগত দু-চারজন স্টাফ ও নিকটাত্মীয় ছাড়া বিএনপি বা ১৮ দলের নেতা-কর্মীরা গ্রেফতার আতঙ্কে দলীয় প্রধানের বাড়ি এড়িয়ে চলছেন। আতঙ্কের কারণে নেতা-কর্মীরা আত্মগোপন করেছেন। অন্যদিকে, বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয় ও নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ও নেতা-কর্মী শূন্য হয়ে পড়েছে।

রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরের ৭৯ নম্বর সড়কের এনইডি-১ নম্বর বাড়িতে থাকেন খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত স্টাফের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তিনি স্বাভাবিক রয়েছেন। তবে নেতা-কর্মীদের ধরপাকড়ে মানসিকভাবে কিছুটা উত্কণ্ঠিত। এছাড়া অন্যান্য দিনের মতো গত দু দিনও তিনি বাড়ির ভেতরে স্বাভাবিক সময় কাটিয়েছেন। দলের গুরুত্বপূর্ণ কয়েক নেতাসহ বিভিন্নজনের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করেছেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের বাড়ির সামনে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বিরোধীদলীয় নেতার নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ-ৱ্যাব সেখানে অবস্থান নিয়েছে। এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান গতকাল রাতে বলেন সরকার আমাদের নেত্রীকে গ্রেফতার করবে বলে বিশ্বাস হয় না। তবে শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার ও অনেকের বাড়িতে পুলিশের হানার কারণে মনে হচ্ছে পরিস্থিতি বিপজ্জনক। এটা সংঘাতের দিকে গড়ালে সংলাপের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশা তিরোহিত হয়ে পড়বে।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত ফটোসাংবাদিক নূরউদ্দিন আহমদ এবং তার প্রেস ইউংয়ের সদস্য শায়রুল কবীর ও শামসুদ্দীন দীদার প্রায় সার্বক্ষণিক বাড়ির সামনে অবস্থান করছেন। প্রয়োজনে বাড়ির ভেতরেও যাতায়াত করছেন। দুপুরে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা খাবার নিয়ে ওই বাড়িতে যান। ঘণ্টা-দুয়েক পর তিনি বেরিয়ে আসেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরীও বিকেলে ওই বাসায় যান। এছাড়া গতকাল অন্য কাউকে খালেদা জিয়ার বাড়িতে যেতে দেখা যায়নি।

জানা গেছে, খালেদা জিয়া সন্ধ্যার পর তার গুলশান কার্যালয়ে যেতে চান। এজন্য রুহুল আলম চৌধুরীকে ডেকে আনা হয়। তিনি পরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ফোন করে বিরোধীদলীয় নেতার নিরাপত্তায় নিয়মিত কর্তব্য পালনকারী পুলিশ পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানান। রাজারবাগ থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দুটি গাড়িতে করে পুলিশ সদস্যরা খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনে আসেন। তবে রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিএনপি প্রধান বাড়ি থেকে বের হননি।

এদিকে, গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় এবং নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রে কেউ ঢুকতে পারছেন না, সেখানে কয়েকজন কর্মচারী ছাড়া আর কাউকে গতকাল শনিবার দেখা যায়নি। অবশ্য নয়াপল্টন কার্যালয়ে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী রয়েছেন।