কোটার শূন্যপদ পূরণ হবে মেধা তালিকা থেকে

স্টাফ রিপোর্টার: সব সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটার কোনো পদ যোগ্য প্রার্থীর অভাবে পূরণ করা সম্ভব না হলে সেসব পদ মেধা তালিকার শীর্ষে থাকা প্রার্থীদের দিয়ে পূরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ২০১০ সালের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মুক্তিযোদ্ধা কোটার শর্ত শিথিল করে এখন থেকে অন্য সব সরাসরি নিয়োগে সব কোটার ক্ষেত্রে শূন্যপদে মেধাবীদের নিয়োগের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে চাকরিপ্রার্থী- বেকারদের আন্দোলন ও আইনি লড়াইয়ের মধ্যে নির্বাচনী বছরে এ সুখবর এসেছে সরকারের পক্ষ থেকে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে, সিনিয়র স্টাফ নার্সের ৪ হাজার এবং মিডওয়াইফ’র ৬শ পদ পূরণের জন্য জনপ্রশাসন ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১০ তারিখের ৫৯ নম্বর সার্কুলারে উল্লিখিত মুক্তিযোদ্ধা কোটা অনুসরণ সংক্রান্ত নির্দেশনা শিথিল করে ওই পদগুলো জাতীয় মেধা তালিকার শীর্ষে অবস্থানকারী প্রার্থীদের দ্বারা পূরণ করা হবে। এটা এককালীন না হয়ে সব সময় প্রযোজ্য হবে।

চাকরিতে কোটার প্রার্থী না পাওয়া গেলে ওই আদেশে শীর্ষ মেধাবীদের নিয়োগের নির্দেশনা দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। নির্দেশে বলা হয়, সব সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটার কোনো পদ যোগ্য প্রার্থীর অভাবে পূরণ করা সম্ভব না হলে সে সকল পদ মেধা তালিকার শীর্ষে অবস্থানকারী প্রার্থীদের মধ্য হতে পূরণ করতে হবে।’

গত মঙ্গলবারের স্বাক্ষর করা আদেশটি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব, সরকারি কর্মকমিশন সচিব, মহাহিসাব নিরীক্ষা ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা দীর্ঘদিনের। ১৯৭২ সালের ৫ নভেম্বর এক নির্বাহী আদেশে সরকারি, আধা-সরকারি, প্রতিরক্ষা ও জাতীয়করণ করা প্রতিষ্ঠানে জেলা ও জনসংখ্যার ভিত্তিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং ১০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের জন্য কোটা পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে এই কোটা পদ্ধতির সংস্কার, পরিমার্জন ও পরিবর্তন করেছে সরকার।

বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনি ৩০ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, পিছিয়েপড়া জেলাগুলোর জন্য কোটা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ৫ শতাংশ কোটা পদ্ধতি সংরক্ষিত। সব মিলিয়ে কোটা পদ্ধতি রয়েছে ৫৬ শতাংশ। সরকারি চকরিতে আবেদন করেও কোটা ব্যবস্থার কারণে প্রার্থী না পাওয়া সেসব পদ শূন্য থাকায় মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছে দাবি করে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের আন্দোলন করে আসছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। বিভিন্ন সময়ে কোটার শূন্য পদে সাময়িকভাবে মেধাবীদের নিয়োগের নির্দেশনা ছিলো।

কোটা পদ্ধতি সংস্কারে গত কয়েকদিনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকার শাহবাগে মানববন্ধনসহ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি কোটা পদ্ধতি সংস্কারের জন্য একটি রিট আবেদন করলেও সেটি খারিজ করে দিয়েছে আদালত। কোটা পদ্ধতি সংস্কার না করে কোটার শূন্য পদে মেধাবীদের নিয়োগের সিদ্ধান্ত আপাতত আন্দোলনকারীদের জন্য সুখবর বলেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন তারা।