কেরুজ চিনিকলের বয়লার সমস্যার সমাধান : ৭ দিনের মাথায় শুরু হয়েছে মাড়াই

দর্শনা অফিস: কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের নিরলস পরিশ্রম ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় বয়লারের বড় ধরনের জটিলতা কাটিয়ে তুলেছে কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ। টানা ৭ দিন বিরামহীন কর্মদক্ষতায় অবশেষে সারিয়ে তোলা হয়েছে মিলের ৪ নং বয়লার। ৭ দিনের মাথায় ফের শুরু করা হয়েছে আখমাড়াই কার্যক্রম। কোনোপ্রকার যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা না দিলে ৭ দিনের ক্ষতি পুশিয়ে তুলবে চিনিকল কর্তৃপক্ষ। গত ৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে মিলের ৪ নং বয়লারের ঝুলন্ত ছাদ ভেঙে পড়ে। এতে বন্ধ হয়ে যায় মাড়াই কার্যক্রম। বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পেতে মিলের সবকটি বয়লারের আগুন নিভিয়ে দেয়া হয়। মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ আজিজুর রহমানের দিক-নিদের্শনায় শুরু হয় মেরামত কাজ। ৭৬ বছর বয়সী এ মিলের যন্ত্রাংশ প্রায় অকেজোর পথে। তাই বারবার চেষ্টা করেও সারিয়ে তোলা সম্ভব হয়নি বয়লার সমস্যা। উপায়ান্তর না পেয়ে বুধবার রাতে বয়লারের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম তৈরি করতে দেয়া হয় রেইন উইকে। গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে রেইন উইক কর্তৃপক্ষ সরঞ্জাম সরবরাহ করে। এরই মধ্যে মিলের আরো তিনটি বয়লারের ছোট-খাটো সমস্যা সারিয়ে তুলেছে মিল কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার রাত থেকে মিলের সকল বিভাগের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের কঠোর পরিশ্রম, আন্তরিকতা ও সহযোগিতায় শুরু হয় বয়লার সমস্যা সমাধানের কার্যক্রম। টানা ২ দিন যন্ত্রাংশ সেটিং-ফিটিং কার্যক্রম শেষ হয় রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে। রাত ১২টার দিকে ৪টি বয়লারেই চলতি মরসুমে ২য় বারের মতো করা হয় স্লো-ফায়ারিং। স্লো-ফায়ারিঙের পর টানা ১২ ঘণ্টা সময় লেগে যায় বয়লারে স্টিম তুলতে। ফলে গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সমস্যার সমাধান সফলতার সাথে সম্পন্ন হয়েছে। ওই সময় থেকেই শুরু করা হয়েছে আখমাড়াই কার্যক্রম। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোনো বয়লারেই ত্রুটি দেখা দেয়নি।

এদিকে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ আজিজুর রহমান এলাকার আখচাষিদের ধৈর্যধারণের কারণে আবারো তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সেইসাথে মিলের স্মরণকালের বড় ধরনের বয়লার সমস্যা সমাধানে যারা আন্তরিকতা, চেষ্টা, পরিশ্রম, উপদেশ দিয়ে সহগযোগিতা করেছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি। কৃষিবিদ আজিজুর রহমান আরো বলেন, এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান কেরুজ চিনিকলকে টিকিয়ে রাখতে সকলের এ ধরনের আন্তরিক সহযোগিতায় এগিয়ে নিয়ে যাবে শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের কর্ম ক্ষমতাকে। বয়লারে কোনো প্রকার ত্রুটি দেখা না দিলে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মিল আঙিনায় পড়ে থাকা প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন আখমাড়াই করা সম্ভব হবে। এর মধ্যে নতুন করেই অল্প-স্বল্প আখ ওজন নেয়া সম্ভব হবে। তবে মঙ্গলবার থেকে পুরোদমে কৃষকদের আখ ওজন করে নেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।