কুষ্টিয়ায় শিশু হত্যা মামলায় ৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানায় অপহরণের পর মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আদালত ৯ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন।

গতকাল সোমবার দুপুরে এক জনাকীর্ণ আদালতে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিজ্ঞ বিচারক রেজা মো. আলমগীর হাসান এ রায় প্রদান করেন। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- কুষ্টিয়া ভেড়ামারার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আকতার গাছী ওরফে আলতাফ হোসেন, মোছা. রিজিয়া খাতুন, আজাদ, মিনহাজ উদ্দিন , হায়তুল ইসলাম, আনারুল ইসলাম, সাহাবুল হক, এনামূল হক ও আসাদুল ইসলাম। আলম হোসেন, ওবাইদুল হক ও মেরু গাইনকে খালাস দেন আদালত।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রামকৃষ্ণপুর গ্রামের সালেহ আহমেদ শিশিরের ছেলে আলিফ হোসেন (৪) নিখোঁজ হয়। আলিফের বাবা উপজেলার নতুন হাট এলাকার দোকানি শিশির বাড়ি ফিরে জানতে পারে তার ছেলে আলিফ রামকৃষ্ণপুর গ্রামের দুলাল হোসেনের ছেলে গাছী আকতারের সাথে গেছে। আকতারকে অনেক খোঁজার পরে মুন্সির গেটে দেখা হলে সে আফিলকে দেখেনি বলে জানায়। কিন্তু স্থানীয় যুবক আশিক আকতারের সাথেই আলিফকে দেখেছে বলে জানায়। এ ঘটনার পর দিন আলিফের মামা মহির ভেড়ামারা থানায় একটি জিডি দায়ের করে। শিশিরের মামাতো ভাই আসাদুল তাকে মোবাইলফোন করে তার ছেলের লাশ স্কুল মাঠে পোতা আছে। সেখানে লাশের কোন সন্ধ্যান পায়নি শিশির। এর ৭ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাত মোবাইল থেকে ফোন করে আলিফকে ফিরিয়ে দিতে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে অপহরণকারীরা আলিফকে মেরে তাদের বাড়ির রান্নাঘরের পেছনে নারকেলপাতা দিয়ে ডেকে রেখে যায়।

এ ঘটনায় নিহত আলিফের বাবা সালেহ আহমেদ শিশির বাদী হয়ে গাছী আকতারসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ভেড়ামারা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ৯ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের রায় প্রদান করেন। বাদীপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পিপি অ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী। তাকে সার্বিক সহযোগিতা করেন এডিশনাল পিপি অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম গালিব। আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাড. গিয়াস উদ্দিন মিয়া, অ্যাড. আব্দুল মজিদ ও অ্যাড. তানজিলুর রহমান এনাম।