কাল থেকে ফের ৬০ ঘণ্টার হরতাল

স্টাফ রিপোর্টার: নির্বাচনকালীন নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার পুনর্বহালের দাবিতে কাল সোমবার ভোর ৬টা থেকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত টানা ৬০ ঘণ্টা হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট ১৮ দল। গতকাল বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে জোটের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা দেন। কর্মসূচিতে বাধা দিলে সকল দায়ভার সরকারকে বহন করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, গণমাধ্যমে ব্যবহারকৃত গাড়ি, সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স, হাজিদের ব্যবহারকৃত পরিবহন হরতালের আওতামুক্ত থাকবে। হরতাল চলাকালীন পরীক্ষা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। হলে সময়মত জানানো হবে।  ফখরুল বলেন, আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রীকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ২৯ অক্টোবরের পর যখনই তিনি ডাকবেন, তখনই বিএনপি সাড়া দেবে। কিন্তু সরকার সংলাপের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ফোনালাপ বেআইনিভাবে প্রকাশ করে সংলাপের পরিবেশ বিনষ্ট করা হয়েছে। তিনি বলেন, সরকার মুখে বললেও তারা সংলাপ চায় না। এজন্য সরকার দলীয় নেতারা একেক সময়ে একেক কথা বলে সংলাপের পরিবেশকে নস্যাৎ করে দিচ্ছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে সব দলের অংশগ্রহণ জরুরি। কিন্তু ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার দুরভিসন্ধির অংশ হিসেবে বিরোধীদলকে বাদ দিয়ে সরকার একতরফা নির্বাচন করতে চায়।

তিনি বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও সকলের কাছে গ্রহণযাগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের কোনো বিকল্প নেই। এ দাবি আদায়ের জন্যই ১৮ দল এ সর্বাত্মক হরতালের ঘোষণা দিয়েছে। বিরোধীদলীয় নেত্রী নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা দিয়েছেন। বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা তা সংসদে উত্থাপন করেছিলেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যরা তীব্র সমালোচনা করে তা বাতিল করে দেন।

মির্জা আলমগীর বলেন, বিরোধীদলের আন্দোলন-সংগ্রাম বন্ধ করতেই রাজধানীতে সবধরনের রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে সরকার। কিন্তু জনগণের দাবির মুখে আমাদের সভা-সমাবেশের অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছিলো। তিনি বলেন, বিরোধীদলকে বাদ দিয়ে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে দেয়া হবে না। ক্ষমতায় টিকে থাকতে রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ দুর্নীতিবাজ এ সরকার বিরোধীদলের ওপরে সীমাহীন নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েছে। কিন্তু আমরা আমাদের দাবিতে অনড়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন-সংগ্রাম চলবে। একই দাবিতে গত ২৭ অক্টোবর ৬০ ঘণ্টার হরতাল পালন করে বিরোধী জোট। গতকাল বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জোটের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। উপস্থিত ছিলেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ডা. রিদওয়ান উল্লাহ শাহিদী, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ডা. আহমেদ আব্দুল কাদের, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, জাগপা মহাসচিব খন্দকার লুত্ফর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা ফজলুর রহমান, এনপিপি মহাসচিব ড. ফরিদুজ্জমান ফরহাদ, এলডিপি মহাসচিব আলমগীর মজুমদার, লেবার পার্টির মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অ্যাডভোকেট শাহিনুর পাশা চৌধুরী, মুসলিম লীগের মহাসচিব ডা. জুলফিকার আলী চৌধুরী, ডিএলের খোকন চন্দ্র দাস, ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি মোহাম্মদ তৈয়ব প্রমুখ।