কলম্বিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে শেষ চারে জার্মানির মুখোমুখি হচ্ছে বিশ্বকাপের স্বাগতিক ব্রাজিল

দ্বিতীয় রাউন্ড পার হওয়ার পর থেকেই ‘স্বর্গের’ ধাপ গোনা শুরু করেছিলেন ব্রাজিল কোচ লুইস ফেলিপে স্কলারি। ষষ্ঠ শিরোপা জয়ের সেই পরম আনন্দ পাওয়া থেকে আর দুই ধাপ দূরে আছে তার দল। কলম্বিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে শেষ চারে জার্মানির মুখোমুখি হচ্ছে বিশ্বকাপের স্বাগতিকরা। ফরতালেজায় শুক্রবারের দ্বৈরথে হয়তো নেইমারকে হারিয়েছেন হামেস রদ্রিগেস। কিন্তু দুই ডিভেন্ডারের গোলে কলম্বিয়ার বাধা ঠিকই পার হয়েছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। দুই অর্ধে একটি করে গোল করেন চিয়াগো সিলভা ও দাভিদ লুইস। পেনাল্টি থেকে রদ্রিগেস ব্যবধান কমালেও বিশ্বকাপ থেকে দলের বিদায় এড়াতে পারেননি তিনি। জিতলেও ব্রাজিলের জন্য দুঃসংবাদ ৬৪ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন ব্রাজিল অধিনায়ক সিলভা। টুর্নমেন্টে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখায় জার্মানির বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে খেলতে পারবেন না বিশ্বের অন্যতম সেরা এই ডিফেন্ডার। প্রথমার্ধে এগিয়ে যাওয়ার পরও ব্রাজিলের আক্রমণাত্মক ফুটবলে নিজেদের রক্ষণ নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকতে হয় হোসে পেকারমানের শিষ্যদের। টানা চার ম্যাচ জিতে শেষ আটে পৌঁছানো দলটি খুব বেশি সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। ফ্রেদ নিষ্প্রভ থাকলেও নেইমারের সঙ্গে কলম্বিয়ার রক্ষণসীমায় হাল্কেরও বিপজ্জনক উপস্থিতি ছিল। গোলরক্ষক দাভিদ ওসপিনার দৃঢ়তায় অন্তত দুবার হতশায় পুড়তে হয় এই ফরোয়ার্ডকে। আরেনা কাস্তেলাওয়ে প্রথম কর্নারটিকেই গোলে পরিণত করে ব্রাজিল। নেইমারের কর্নার লাফিয়ে উঠলেও মাথা ছুঁয়াতে পারেননি লুইস। কিন্তু পেছনেই থাকা সিলভা হাঁটু দিয়ে বল জালে ঠেলে দেন। চার মিনিট পর সমতা ফেরানোর ভালো একটা সুযোগ পায় কলম্বিয়া। হুয়ান কাদরাদোর শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে বেঁচে যায় ব্রাজিল। ২০তম মিনিটে ওসপিনার দৃঢ়তায় বেঁচে যায় কলম্বিয়া। নেইমারের কাছ থেকে পাস পেয়ে হাল্কের জোরালো শট কোনোমতে ঠেকান কলম্বিয়ার গোলরক্ষক। ফিরতি বলে অস্কারের শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকান তিনি। আট মিনিট পর আবারো হাল্ককে হতাশ করেন ওসপিনা। মার্সেলোর ক্রস ডি বক্সে বুক দিয়ে নামিয়ে এক টোকায় একটু সামনে বাড়িয়ে পা বায়ে শট নেন জেনিত সেন্ট পিটার্সবার্গের স্ট্রাইকার। কিন্তু এবারো তার শট ফেরান নিসের গোলরক্ষক। ৪৪তম মিনিটে বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রি-কিক পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি নেইমার। ৬৯তম মিনিটে লুইসের অসাধারণ এক ফ্রি-কিকে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ব্রাজিল। রক্ষণে মানবদেয়ালের ঠিক ওপর দিয়ে ডানদিকে বার ঘেঁষে কলম্বিয়ার জাল খুঁজে নেন এই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার। প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলেন ওসপিনা কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেননি। ৭৮তম মিনিটে রদ্রিগেসের সফল পেনাল্টিতে ব্যবধান কমায় কলম্বিয়া। কার্লোস বাক্কাকে ডিফেন্স চেরা পাস দিয়েছিলেন তিনি। এগিয়ে এসে বাধা দিতে গিয়ে বাক্কাকে গোলরক্ষক জুলিও সেজার ফাউল করলে পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি কার্লোস ভেলাসকো। টুর্নামেন্টে এটি রদ্রিগেসের ষষ্ঠ গোল। প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকার শীর্ষেই আছেন তিনি। নির্ধারিত সময় শেষের দুই মিনিট আগে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন নেইমার। আর পাঁচ মিনিটের ইনজুরি সময়টুকু নিজেদের জাল অক্ষত রেখে শেষ চারে পৌঁছায় ব্রাজিল।